সোমবার (৪ নভেম্বর) সকাল ৭টা পর্যন্ত এ অভিযান চলে। এর আগে রোববার (৩ নভেম্বর) রাত সাড়ে তিনটার দিকে টঙ্গীর কেরানিটেক বস্তি ও তার পাশে থাকা একটি ‘জাভান’ হোটেলে অভিযান চালানো হয়।অভিযানে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রায় ৫ শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রে জানা যায়, রোববার রাত সাড়ে তিনটার দিকে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে কেরাণিরটেক বস্তির বিভিন্ন রুম থেকে গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা, রামদা, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। এ সময় নগদ ২২ লাখ ৮১ হাজার ৩০০ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযানে আটক বেড়ে ১৮২
অপরদিকে টঙ্গীর জাভান হোটেলে যৌথবাহিনীর অভিযান চলাকালে মিজানুর রহমান মিল্টন (৫৫) নামের এক অপসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট পালাতে গিয়ে বিদ্যুৎ এর তাড়ে জড়িয়ে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। মিজানুর রহমান মিল্টন গোপালগঞ্জ জেলার আব্দুল মোতালেবের ছেলে বলে জানা গেছে। নিহতের দুই মেয়ে এক ছেলে রয়েছে।টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. শাহিন আলম ‘জাভান’ হোটেল থেকে বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মিজানুর রহমানের ছেলে মো. মিশেল রহমান খান জানান, ২০১৬ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসরে যান। সর্বশেষ ২০১৫ সালে ঢাকা থেকে রিটায়ার্ড করেন। তিনি জাভান হোটেলের মালিক বাদলের খালাতো ভাই। আত্মীয়তার কারণে তিনি ওই হোটেলে চাকরি করতেন বলে জানা গেছে।
সেনাবাহিনীর আশকোনা ক্যাম্প কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কেরাণিটেক বস্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর ছাড়াও র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সমন্বয়ে অভিযান হয়েছে। যেখানে প্রায় ৫৫০ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য অংশ নিয়েছে। আটককৃতদের সোমবার (৪ নভেম্বর) সকাল নয়টার দিকে টঙ্গী পূর্ব থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের শেষে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।
টঙ্গীর ‘জাভান’ হোটেলে যৌথ বাহিনীর পৃথক অভিযানটিতে নেতৃত্ব দেন রাজধানী উত্তরা দিয়াবাড়ি সেনা ক্যাম্প কমান্ডার লে. কর্নেল মো. ইয়াসিন মাহমুদ। লে. কর্নেল মো. ইয়াসিন মাহমুদ জানান, টঙ্গীর আমতলী এলাকায় ‘জাভান’ হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপ পরিচালনার অভিযোগ ছিল। অভিযান চালিয়ে বিয়ার ও মদ জব্দ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পতিতাবৃত্তি অপরাধে নারী-পুরুষ ও হোটেল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর সন্ত্রাস, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক, কিশোর গ্যাং, ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে চলমান বিশেষ অভিযান জোরদার করতে পুলিশের সব ইউনিটকে নির্দেশনা দেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম। এরপর থেকেই রাজধানীসহ সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযান চলছে।
গত ১০ দিনে মোহাম্মদপুর ও বিমানবন্দর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাং সদস্য এবং ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও যৌথ বাহিনী। তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।