শুক্রবার, অক্টোবর ৪, ২০২৪
শুক্রবার, অক্টোবর ৪, ২০২৪
30 C
Dhaka
Homeধর্মকোরবানির গোশত ভাগ করার নিয়ম

কোরবানির গোশত ভাগ করার নিয়ম

প্রকাশ: জুন ৯, ২০২৪ ৯:৪৪

মুসলিম উম্মাহর সর্ববৃহৎ ও দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে ঈদুল আজহা। আল্লাহতায়ালার আনুগত্য লাভের ও সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে কোরবানি।

মুসলিম উম্মাহর সর্ববৃহৎ ও দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে ঈদুল আজহা। আল্লাহতায়ালার আনুগত্য লাভের ও সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে কোরবানি।

এ পন্থায় ত্যাগ, তিতিক্ষার মাধ্যমে মানুষের সর্বাধিক প্রিয়বস্তু আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে উৎসর্গ করতে হয়। পশু কোরবানির ফলে অন্তর হয় পরিশুদ্ধ। আর এটাই হলো কোরবানির মূল প্রেরণা।

আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে কোরবানি করা পশুর মাংস ভাগ করার একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। মহানবী (সা.) কোরবানির পশুর মাংস ভাগ করার নিয়ম সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা.) কোরবানির মাংস একভাগ নিজের পরিবারকে খাওয়াতেন, একভাগ গরিব প্রতিবেশীদের দিতেন এবং একভাগ দিতেন গরিব-মিসকিনদের।

কোরবানির গোস্ত কয় ভাগ করতে তার ইঙ্গিত দিয়ে কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেছেন,

وَالْبُدْنَ جَعَلْنَاهَا لَكُم مِّن شَعَائِرِ اللَّهِ لَكُمْ فِيهَا خَيْرٌ فَاذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَيْهَا صَوَافَّ فَإِذَا وَجَبَتْ جُنُوبُهَا فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْقَانِعَ وَالْمُعْتَرَّ كَذَلِكَ سَخَّرْنَاهَا لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ

অর্থ- আর কাবার জন্য উৎসর্গীকৃত উটকে আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন করেছি। এতে তোমাদের জন্য মঙ্গল রয়েছে। সুতরাং সারিবদ্ধভাবে বাধা অবস্থায় তাদের জবাই করার সময় তোমরা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করো।

এরপর যখন তারা কাত হয়ে পড়ে যায়, তখন তা থেকে তোমরা আহার করো এবং আহার করাও; যে কিছু চায় না তাকে এবং যে চায় তাকেও। এমনিভাবে আমি এগুলোকে তোমাদের বশীভূত করে দিয়েছি, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারো। (সুরা হজ : আয়াত ৩৬)

উল্লিখিত আয়াতে কারিমা থেকে সুস্পষ্ট, কোরবানির গোশত মোটামুটি ৩টি ভাগে ভাগ করার একটি নির্দেশনা বা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তাহলো-

এক. কোরবানি দাতা নিজেদের জন্য রাখবে তথা আহার করা।
দুই. আত্মীয়স্বজনদের এক ভাগ দেওয়া, যারা চায় না।
তিন. যারা অভাবি বা গরিব; (যারা চায় এবং না চায়) তাদের এক ভাগ দেওয়া।

অধিকাংশ ইসলামিক স্কলাররাই কোরবানির পশুর গোশতকে উল্লিখিত তিন ভাগে ভাগ করাকে মুস্তাহাব এবং উত্তম বলেছেন।

তবে হ্যাঁ, কেউ যদি তিন ভাগ করার ক্ষেত্রে কম-বেশি করে তাতেও কোনো সমস্যা নেই। কোরবানি হবে না বা কোরবানি নষ্ট হয়ে গেছে, এমনটি ভাবার কিংবা চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

কেন না কোরবানি দাতার জন্য কোরবানির পশুর গোশত একেবারে পাল্লায় মেপে তিন ভাগে ভাগ করা আবশ্যক কোনো বিষয় নয়। বরং কোরবানির পশুর এ গোশত ভাগ না করে এমনিতেই প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন এবং গরিব-অসহায়কে দেওয়া যাবে। এ জন্য ভাগ করতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

সুতরাং কোরবানিদাতা ব্যক্তি ইচ্ছা করলে কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী তিন ভাগে ভাগ করে তা হাদিয়া বা দান করার পাশাপাশি নিজেরাও আহার করতে পারেন।

তাতে মুস্তাহাবের ওপর আমল হয়ে যাবে। আবার চাইলে নিজের ইচ্ছেমতো ভাগ না করেও হাদিয়া দিতে পারেন বা দান করতে পারেন। তাতে কোনো সমস্যা নেই।

আল্লাহতায়ালা মুসলিম উম্মাহকে কোরআনের উপদেশ অনুযায়ী কোরবানির গোশত ভাগ ও আহার করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় খবর