যে ব্যক্তির কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ আছে তার জন্য ইসলামের এ বিধান পালন করা ওয়াজিব। কোরবানির পর পশুর চামড়া ব্যবহারের নির্দিষ্ট বিধান রয়েছে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে রাসুল! আপনি বলুন, আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ বিশ্বজাহানের পালনকর্তা আল্লাহর জন্য উৎসর্গিত।’ (সুরা আনআম: ১৬২)
কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে এখনো আমাদের মধ্যে অনেক ভুল ধারণা রয়ে গেছে। আর এসব কারণে অনেক সময় ইসলামী শরিয়তের বিধি লঙ্ঘিত হয়। কোরবানির পশুর চামড়ার ব্যবহার কিংবা বিক্রি করা টাকা ঠিক কি কাজে লাগানো যাবে এ সম্পর্কে রয়েছে ইসলামের সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। যা অনেকেরই জানা নেই।
ইসলামী শরিয়তের বিধান অনুযায়ী, কোরবানির চামড়া দান করা উত্তম। তবে কোরবানিদাতা চাইলে চামড়া ব্যবহার করতে পারবে। তাতে কোনো নিষেধ নাই।
কোরবানি পশুর চামড়ায় যাদের হক
মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে যেসব পশু কোরবানি করা হয়, সেগুলোর চামড়া দিয়ে নিজে উপকৃত হওয়া যায়। তবে বিক্রি করে মূল্য নিজে গ্রহণ করা যায় না এবং কাজের বিনিময় হিসেবেও দেওয়া যায় না।
আলী (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (স.) আমাকে তার কোরবানির পশু জবাই করতে, পশুর গোশত, চামড়া ও নাড়িভুঁড়ি সদকা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আর এগুলোর কোনো কিছু কসাইকে দিতে নিষেধ করেছেন।’ (বুখারি: ১৭১৭; মুসলিম: ১৩১৭)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা কোরবানির পশুর চামড়া দ্বারা উপকৃত হও; তবে তা বিক্রি করে দিও না।’
পশুর চামড়া বিক্রির অর্থ সদকা করা নিয়ে হাদিসে বলা হয়েছে, কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করলে সেই অর্থ অবশ্যই সদকা করার নিয়তে বিক্রি করতে হবে। সদকা করার নিয়ত না করে যদি কেউ নিজের খরচের নিয়ত করে তাহলে তা গুনাহ ও নাজায়েজ হবে। চামড়ার পুরো মূল্য সদকা করাই জরুরি। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ৫/৩০১; কাজিখান : ৩/৩৫৪)
আমাদের সমাজে যারা জাকাত, ফিতরা পাওয়ার উপযুক্ত তারাই কোরবানির চামড়ার অর্থ পাওয়ার হকদার। তবে এক্ষেত্রে এতিম, গরিব তথা ইলমে দ্বীনের গরিব শিক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তা দেওয়া যাবে।
ইলমে দ্বীনের শিক্ষার্থী যদি এতিম বা গরিব হয় তবে তাকে জাকাত, ফিতরা ও কোরবানির চামড়ার মূল্য দানে অধিক সাওয়াব রয়েছে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব কোরবানি দাতাকে চামড়ার ব্যবহারের বিষয়ে যথাযথ পন্থা অবলম্বন করার তাওফিক দান করুন। আর তা বিক্রি করলে তার মূল্য বা অর্থ ইয়াতিম, গরিব, মিসকিন ও ইলমে দ্বীনের গরিব শিক্ষার্থীকে দান করার তাওফিক দান করুন। আমিন।