বুধবার, জুলাই ৯, ২০২৫
বুধবার, জুলাই ৯, ২০২৫
25.6 C
Dhaka
Homeজীবনযাপনবর্ষায় বাড়ছে ডায়েরিয়া,কলেরা, জীবাণু ঘটিত রোগ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের

বর্ষায় বাড়ছে ডায়েরিয়া,কলেরা, জীবাণু ঘটিত রোগ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের

প্রকাশ: জুলাই ৯, ২০২৫ ১০:২৫

কলেরার প্রকোপ এখন অনেক কম হলেও, বর্ষার সময় এলে তার প্রকোপ বাড়ে। প্রতি বছরই শহর ও জেলায় কলেরা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যায়। এর কারণই হল দূষিত জল ও অস্বাস্থ্যকর খাবারদাবার। বর্ষায় কী ভাবে বাঁচবেন পেটের রোগ থেকে?

নিম্নচাপের বৃষ্টিতে নাজেহাল শহর। রাতভর বৃষ্টি হলেই পানি জমছে শহরের নানা জায়গায়। জমা পানি পেরিয়েই চলছে যাতায়াত। তা থেকে অসুখবিসুখও ছড়াচ্ছে। গত কয়েক দিনে কলেরা আক্রান্ত রোগীর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তা ছাড়া ডায়েরিয়ার প্রকোপও বেড়েছে। বর্ষার সময়ে পানিবাহিত নানা অসুখবিসুখ মাথাচাড়া দেয়, তার মধ্যে ডায়েরিয়া, কলেরা, আমাশয়ের মতো রোগ রয়েছে। তার উপর ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ তো রয়েছেই। এই সময়ে তাই একটু বেশিই সাবধানে থাকতে হয়।

কলেরার প্রকোপ এখন অনেক কম হলেও, বর্ষার সময় এলে তার দাপট বাড়ে। প্রতি বছরই শহর ও জেলায় কলেরা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যায়। এর কারণই হল দূষিত জল ও অস্বাস্থ্যকর খাবারদাবার, এমনটাই জানালেন সংক্রামক রোগ বিষয়ক চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার। তাঁর কথায়, “ভাইরাল জ্বর ও পেটের রোগ এই সময়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা। এর কারণ হল ব্যাক্টেরিয়ার প্রকোপ। ই-কোলাই ব্যাক্টেরিয়া মলের মধ্যে থাকে। কোনও কারণে মল জলের সঙ্গে মিশে গেলে সংক্রমণ হয়। তা ছাড়া, টাইফয়েড, ক্লসটিডিয়াম, সিরেলা, সালমোনেল্লা থেকেও সংক্রমণ হয়। বাসি খাবার খাওয়া, দূষিত জল কোনও ভাবে পেটে গেলেই মুশকিল। তা ছাড়া জল কোথায় রাখছেন, কোন পাত্র থেকে জল খাচ্ছেন এই সবও কিন্তু পেটের রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।”

বৃষ্টির জমা জল, পুকুর-নালার দূষিত জল থেকে আন্ত্রিক, ডায়েরিয়ার মতো রোগও ছড়াচ্ছে। পেটখারাপ, বমির সমস্যায় ভুগছেন অনেকে। ডিহাইড্রেশনও ভোগাচ্ছে। অনেক সময়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে নিকাশি নালা দিয়ে জল বয়ে চলেছে। সেই নোংরা, ঘোলাটে জলেই বাড়ির মেয়েরা গৃহস্থালির কাজ সারছেন। বাসন ধুচ্ছেন। জামা-কাপড় কাচছেন। বাড়ির ছোট ছেলেমেয়েরা আবার সেই জলেই শৌচকর্ম সারছে। এই দৃশ্য অধিকাংশ গ্রামাঞ্চলের। শহরাঞ্চলেও নিকাশি নালার জলে বাসনপত্র ধোয়ার কাজ সারেন অনেকেই। নিকাশি নালার কথা বাদ দিলে রয়েছে পুকুরের নোংরা জল। তার থেকেও জীবাণুঘটিত রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে।

ভরা বর্ষায় কী ভাবে সতর্ক থাকবেন?

বর্ষার সময় কল বা ট্যাপের জল সরাসরি পান করা থেকে বিরত থাকুন। পানীয় জল ফুটিয়ে তবেই পান করা ভাল।

চিকিৎসক জানাচ্ছেন, যদি ওয়াটার ফিল্টার বা পিউরিফায়ার ব্যবহার করেন, তবে সেগুলি সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। পিউরিফায়ারও যদি পরিচ্ছন্ন না থাকে, তা হলে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে।

যে বোতল থেকে জল পান করছেন বা যে পাত্রে জল রাখছেন, সেটি পরিচ্ছন্ন থাকা জরুরি। অনেকেই বাড়িতে কুঁজো বা মাটির পাত্রে জল রাখেন। সেখান থেকে গ্লাস ডুবিয়ে জল খান। এর থেকেও কিন্তু ব্যাক্টেরিয়ার আদানপ্রদান হতে পারে। তাই সতর্ক থাকতে হবে।

বাইরে খাবার বা পানীয়ের সঙ্গে বরফ মেশানো থাকলে তা এড়িয়ে চলুন, কারণ, বরফ তৈরির জল দূষিত হতে পারে।

রান্নাঘর পরিষ্কার রাখা জরুরি। আনাজপাতি, শাকপাতা ভাল করে নুন জলে ধুয়ে তবেই রান্না করতে হবে। কাটা ফল, কাঁচা স্যালাড এই সময়ে কম খাওয়াই ভাল।

এই সময়ে বাইরের খাবার যতটা সম্ভবঅঙ্গে এড়িয়ে যেতে হবে। ফাস্ট ফুড একেবারেই নয়। ঘরের হালকা খাবার এই সময়ে খুবই উপকারী। তেল, মশলা যুক্ত খাবারও এড়িয়ে চলুন।

রান্না করা খাবার এবং অবশিষ্ট খাবার পরিষ্কার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন যাতে মশা-মাছি বা পোকামাকড় বসতে না পারে। ফ্রিজে রাখা বাসি খাবার খাবেন না।

পরিবারের কারও ডায়েরিয়া ও ঘন ঘন বমি হতে থাকলে, দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। সাধারণ পেটের সমস্যা হলে নুন-চিনির জল খাওয়া উচিত। এ ছাড়াও পাতলা ডাল দিয়ে ভাত খাওয়া যেতে পারে । আর সমস্যা যদি বেশি হয়, তা হলে খুব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় খবর