বৃহস্পতিবার (২৩অক্টোবর) বিকেলে ফটিকছড়ি উপজেলা সদর বিবিরহাট বাজারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক উপস্থাপিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ করা হয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও চট্টগ্রাম-২ ফটিকছড়ি আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, ধানের শীষ বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির প্রতীক। গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতীক। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে মানবিক বাংলাদেশ গড়তে সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ধানের শীষে ভোট দিয়ে এদেশের মানুষ কখনও প্রতারিত হয়নি। বিএনপি বরাবরই সাধারণ মানুষের ভোটের মর্যাদা রেখেছে।বিএনপি ক্ষমতায় আসলে উন্নয়ন হয়, মানুষ শান্তিতে থাকে।
দুপুর থেকে ফটিকছড়ি ও ভুজপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি নেতা-কর্মী-সমর্থকরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে মাদ্রাসা মাঠে জড়ো হন। বিকেল তিনটা নাগাদ ফটিকছড়ি তালিমুদ্দিন মাদ্রাসা মাঠ কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। সমবেত হাজারো জনতার উদ্দেশ্যে কাদের গনি চৌধুরী বক্তব্য দেন।
এরপর তিনি বিবিরহাট বাজারে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ শেষে গণমিছিল বের করেন।
মিছিলটি বিবিরহাট বাজার, নাজিরহাট, রোসাংগিরি, আজিম নগর হয়ে মাইজভান্ডারে এসে শেষ হয়।এসময় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে মাজার জিয়ারতও করেন তিনি।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, তারেক রহমান একটি মানবিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন। যেখানে মানুষ শান্তিতে থাকবেন, কোনো নাগরিক তার অধিকার বঞ্চিত হবেন না।বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে গণতন্ত্র বারবার চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে দেশে স্বৈরশাসন, ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতা জনগণের প্রত্যাশাকে বারবার ব্যাহত করেছে। বিশেষত, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়ার অভাব এবং স্বচ্ছতার সংকট গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি দুর্বল করে দিয়েছে। বিএনপির ৩১ দফা মূলত এই সংকটগুলো চিহ্নিত করে একটি নতুন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছে। এটি কেবল সমস্যাগুলোর সমাধানই নয়, বরং একটি টেকসই গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে তোলার পরিকল্পনাও প্রস্তাব করেছে।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন,বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) যে ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছে, তা বাংলাদেশের গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় একটি সুসংহত ও সময়োপযোগী নীতিমালা হিসেবে পরিগণিত হতে পারে। এই প্রস্তাবনায় গণতন্ত্রের বর্তমান সংকট নিরসন এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাগুলো নিয়ে একটি সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা তুলে ধরা হয়েছে।তাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ৩১ দফা জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা হিসেবে উঠে এসেছে। গণতন্ত্র, সুশাসন এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকারের ভিত্তিতে প্রণীত এই দফাগুলো দেশকে নতুন এক যুগের পথে নিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের সংকট বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিনের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতির কারণে রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরে নানান সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুসৃত বেগম খালেদা জিয়া সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে পার্লামেন্টারি পদ্ধতির সরকার প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা জাতীয় নির্বাচনের সুষ্ঠুতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করেছে।
বিএনপি সব মত ও পথের সমন্বয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ভিত্তিক একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে এবং সফলভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।
বিএনপি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে যে, প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও অভিপ্রায় অনুযায়ী, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ভিত্তিক একটি সম্মিলিত, বৈষম্যহীন এবং সম্প্রীতির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে। যার মাধ্যমে এই রাষ্ট্রে ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি, গোত্র,পেশা নির্বিশেষে সবাইকে স্নেহ ও ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করে, একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে এগিয়ে যাবে।
লিফলেট বিতরণ শেষে গণমিছিলে অন্যদের মধ্যে সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্যানেল মো. সারোয়ার হোসেন, এম মোরশেদ হাজারী, ওসমান তাহের সম্রাট ,আহমদ গনি চৌধুরী, কে এম আজম, হাসান চৌধুরী, সেলিম খান, মুহাম্মদ হোসেন প্রমুখ ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


