রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, লেখক ও অধ্যাপক আলী রীয়াজকে প্রধান করে ৯ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন করেছে সরকার।সোমবার (৭ অক্টোবর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, জনপ্রতিনিধিত্বশীল ও কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও জনগণের ক্ষমতায়নের উদ্দেশে দেশের বিদ্যমান সংবিধান পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করে সংবিধান সংস্কারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ গঠন করা হলো।
কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মুহাম্মদ ইকরামুল হক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার এম মঈন আলম ফিরোজী, লেখক ফিরোজ আহমেদ, লেখক ও মানবাধিকার কর্মী মো. মুস্তাইন বিল্লাহ এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মো. মাহফুজ আলম।
সংবিধান সংস্কার কমিশন ৬ অক্টোবর থেকে কার্যক্রম শুরু করেছে। তারা সংশ্লিষ্ট সব মতামত বিবেচনা করে পরবর্তী ৯০ দিনের (৩ মাস) মধ্যে প্রস্তুত করা প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, কমিশন কার্যালয় সরকার নির্ধারণ করবে। কমিশনের প্রধান ও সদস্যরা সরকার নির্ধারিত পদমর্যাদা, বেতন বা সম্মানি ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে কমিশন প্রধান বা কোনো সদস্য অবৈতনিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে চাইলে বা সুযোগ-সুবিধা নিতে না চাইলে, তা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অনুমোদন করতে পারবেন।সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থা কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। কমিশন প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যক্তিকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ এ কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা দেবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছয়টি কমিশন গঠন এবং এতে প্রধান কারা থাকবেন তা জানান। ওই দিন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে তিনি আইনজীবী শাহদীন মালিকের নাম উল্লেখ করেন। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আলী রীয়াজকে নিয়োগ দিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি পাঠানো হয়।
এরপর গত ৩ অক্টোবর নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্থার কমিশন, দুর্নীতি দমন সংস্থার কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়।