কৃষকের উৎপাদিত সবজি ঢাকার বাজারে কম খরচে সরবরাহের জন্য চালু হয়েছিল ‘কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন’। তবে উদ্বোধনের দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে ঢাকায় চলেই বন্ধ হয়ে যায় এই বিশেষ ট্রেনটি।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, ছয়টি রুটে কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন চালু হয়েছিল। কৃষকদের সাড়া না পাওয়া এবং খরচ তুলতে না পারায় পাঁচটি রুটে কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে৷ আপাতত ঢাকা-খুলনা রুটের ট্রেনটি চালু থাকছে।এর আগে গত শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে কোনো পণ্য ছাড়াই শূন্য লাগেজে ঢাকার উদ্দেশ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলস্টেশন ছেড়ে যায় কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন।
রহনপুর রেলস্টেশনের মাস্টার মামুনুর রশীদ জানান, ১ নভেম্বর তাদের জানানো হয়, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন। তবে কেন বন্ধ হচ্ছে তা জানানো হয়নি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, রহনপুর-ঢাকা রুটে কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেনটিতে পাঁচটি লাগেজ ভ্যান বগি। এরমধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগি একটি, বাকি চারটি সাধারণ বগি। অত্যাধুনিক লাগেজ ভ্যানে কৃষিপণ্যের মধ্যে ফল, সবজি ছাড়াও রেফ্রিজারেটেড লাগেজ ভ্যানে হিমায়িত মাছ, মাংস ও দুধ পরিবহনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের ঢাকায় যাওয়ার জন্য ছিল ব্যবস্থা। সবজির সঙ্গে তাদের বিনা ভাড়ায় যাওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছিল ট্রেনটিতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশেষ এই ট্রেনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলস্টেশন থেকে পণ্য পরিবহনে ভাড়া কেজিপ্রতি ১ টাকা ৩০ পয়সা। এর সঙ্গে মাঠ থেকে স্টেশন, স্টেশন থেকে মোকাম আলাদা পরিবহন খরচ ও কুলি খরচ মিলে প্রতিকেজির খরচ দাঁড়ায় ৩ টাকারও বেশি।
অন্যদিকে, ট্রাকে মালামাল পরিবহনের খরচ হয় দুই থেকে আড়াই টাকা। ফলে চালু হলেও ট্রেনে সাড়া মেলেনি।
ব্যবসায়ীদের দাবি, মূল ভাড়া কম থাকলেও কুলি ও অন্য পরিবহন খরচ মিলে সড়কপথের চেয়ে ট্রেনে খরচ পড়ছে বেশি। আরেকদিকে ট্রেনের সময় সকালে হওয়ায় বাজারজাত নিয়েও রয়েছে নানা শঙ্কা। তবে বিকেল কিংবা রাতে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করলে দিনের কৃষিপণ্য তুলে রাতভর পরিবহন করে সকালে মোকামে পৌঁছনো যায়। এ ছাড়া ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়সহ নানা কারণে সময়মতো মালামাল পৌঁছাতে না পারলে ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়েও শঙ্কা কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।