বুধবার, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫
বুধবার, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫
27 C
Dhaka
Homeজাতীয়বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে মানুষের ঢল

বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে মানুষের ঢল

প্রকাশ: ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫ ৯:৩৮

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ঢল নেমেছে মানুষের। 

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শহীদদেরকবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এরপর সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয় বুদ্ধিজীবী কবরস্থান প্রাঙ্গণ। একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ।

প্রসঙ্গত, ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের শেষলগ্নে বাঙালি যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে দেশের বুদ্ধিজীবীদের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞে। বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে বাঙালি মেধার সে নৃশংস নিধনযজ্ঞ গোটা বিশ্বকে হতবিহ্বল করে তোলে।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাত্র দুদিন আগে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ঘাতকচক্র কেবল ঢাকা শহরেই প্রায় দেড়শ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে অপহরণ করে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। সান্ধ্য আইনের মধ্যে সেই রাতে তালিকা ধরে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী ও পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় নিস্তব্ধ, ভূতুড়ে অন্ধকারে। পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজার ইটখোলায় বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় বুদ্ধিজীবীদের নিথর দেহ। কারও শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারও বা অমানুষিক নির্যাতনে ক্ষত-বিক্ষত। হাত পেছনে বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নাড়ি-ভুঁড়িও বের করে ফেলা হয়েছিল অনেকের। আর ঘুম থেকে জেগে ওঠা স্বাধীনতা ছুঁইছুঁই উল্লসিত মানুষ স্বজন হারানোর সেই কালরাত্রির কথা জানতে পেরে শিউরে উঠেছিল।

বাঙালি জাতির দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামে এসব বুদ্ধিজীবী স্বীয় মেধা-মনন ও লেখনীর মাধ্যমে স্বাধীনতার সংগঠকদের প্রেরণা জুগিয়েছেন। দেখিয়েছেন মুক্তির পথ। গোটা জাতিকেও উদ্দীপ্ত করেছেন অধিকার আদায়ের সংগ্রামে। আর সেটিই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাদের জন্য।

১৪ ডিসেম্বরকে বুদ্ধিজীবী নিধনযজ্ঞের শিকারের দিন হিসেবে স্মরণ করা হলেও মূলত ১০ ডিসেম্বর থেকেই ইতিহাসের এ ঘৃণ্যতম অপকর্মের সূচনা হয়। সপ্তাহজুড়ে এই তালিকায় একে একে উঠে আসে অসংখ্য বুদ্ধিদীপ্ত সাহসী মানুষের নাম। পরে কৃতী এসব বুদ্ধিজীবীর তালিকাই তুলে দেওয়া হয়েছিল কুখ্যাত আলবদর ও আলশামস বাহিনীর হাতে। নেপথ্যে ছিল পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা রাও ফরমান আলী। মূলত ১০ ডিসেম্বর থেকেই রাতের আঁধারে তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের বাসা থেকে চোখ বেঁধে রায়েরবাজার ও মিরপুর বধ্যভূমিতে নিয়ে গুলি করে, বেয়নেটে খুঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা শুরু হয়। এই অপকর্মের চূড়ান্ত নীলনকশারই বাস্তবায়ন ঘটে ১৪ ডিসেম্বর।

 

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় খবর