মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে কাকরাইল মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল্লাহ সাবেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মিন্টু রোডে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে পৌঁছে এই স্মারকলিপি প্রদান করেন।
স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তাবলিগ জামাতের প্রতিনিধি মাওলানা সাদ কান্দলভিকে চলতি বছরের বিশ্ব ইজতেমায় আনার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করে স্মারকলিপিটি দেওয়া হয় ।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ব আমির হজরত মাওলানা সাদ (দা. বা.) একজন বিজ্ঞ আলেম হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে কোরআন ও হাদিসের আলোকে মূল্যবান বয়ান রাখতেন। এর আগে তিনি প্রতি বছর ইজতেমায় শরিক হতেন এবং ইজতেমার মূল বয়ানসহ আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করতেন। ২০১৮ সালের পর থেকে তাকে কোনো রকম যৌক্তিক কারণ ছাড়া বাংলাদেশে আসতে ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ব আমির এলে বিপুল সংখ্যক বিদেশি মেহমান বাংলাদেশে আসতেন। এতে বিদেশে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধিসহ অধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হতো।
এর আগে, সকালে মাওলানা সাদকে আসন্ন বিশ্ব ইজতেমায় আসতে অনুমতি দেওয়ার দাবিতে কাকরাইল মসজিদের সামনের সড়কে অবস্থান নেন সাদপন্থিরা। এতে ওই এলাকার সড়কের আশপাশের এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয় এবং চরম ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী।
পরে সাদপন্থিরা প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর সাদপন্থিরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি শেষ করে কাকরাইল মসজিদে ফিরে যান। তবে দাবি পূরণ না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন তাবলিগ জামাতের সাদপন্থিরা।
প্রসঙ্গত, তওবা না করলে ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। নভেম্বরের শুরুতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওলামা-মাশায়েখ মহাসম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী তার বক্তব্যে বলেন, সরকারের প্রতি আমার দাবি যতদিন মাওলানা সাদ তার গোমরাহি (বিভ্রান্তিকর) বক্তব্য থেকে তাওবা না করবেন, ততদিন তাকে বাংলাদেশে আসতে দেওয়া যাবে না। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা আলেমদের তত্ত্বাবধানে শূরায়ে নেজাম দ্বারা পরিচালিত হবে। কাকরাইল মারকাজের কার্যক্রম ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে চালু রাখতে হবে।
মাওলানা সাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের বর্তমান মুরুব্বি মাওলানা সাদ বিভিন্ন সময় কোরআন, হাদিস, ইসলাম, নবী-রাসুল, নবুওয়াত, সাহাবায়ে কেরাম এবং শরয়ী মাসআলা-মাসায়েল নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। তার বক্তব্যগুলো কোরআন-সুন্নাহবিরোধী; যা মেনে নেওয়া যায় না। তার এসব আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য দারুল উলুম দেওবন্দসহ বিশ্ব আলেমদের কাছে তিনি চরম বিতর্কিত হয়েছেন। আলেমরা দায়িত্ব নিয়ে তাকে সংশোধন করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন।