মঙ্গলবার, অক্টোবর ২৮, ২০২৫
মঙ্গলবার, অক্টোবর ২৮, ২০২৫
30 C
Dhaka
Homeজাতীয়শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি: প্রেস সচিব

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি: প্রেস সচিব

আপডেট: ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪ ৩:০৪
প্রকাশ: ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪ ১১:০১

অন্তর্বর্তী সরকার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ ও দেশ গড়ার স্বপ্ন ধারণ করে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এগিয়ে যাচ্ছে এটি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের যে স্বপ্ন ছিল তারই ধারাবাহিকতা। সে আলোকেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুল আলম বলেন, ৭১-এর হানাদার বাহিনী যা করেছে তার পুনরাবৃত্তি ২৪-এ করেছে আওয়ামী লীগ। ৭১-এর সময়ে পাক হানাদার বাহিনী যেভাবে ধরে নিয়ে গেছে, সেই একই পুনরাবৃত্তি জুলাইয়ে দেখা গেছে।এ সময় আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের ধারাবাহিকতায় ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান। দেশ গড়ার দ্বিতীয় সুযোগ হাতছাড়া হতে দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে শহীদদের আত্মত্যাগের পর আমরা স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে ব্যর্থ হয়েছিলাম। এক ধরনের মানসিকতার জন্য, একটা দলের ব্যর্থতার জন্য। সে ব্যর্থতার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়।এর আগে সকাল ৭টা ৫ মিনিটে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রসঙ্গত, নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের শেষলগ্নে পুরো দেশের মানুষ যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে। বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে বাঙালিকে মেধাশূন্য করার এ নৃশংস নিধনযজ্ঞ সেদিন গোটা জাতিসহ পুরো বিশ্বকেই হতবিহ্বল করে দিয়েছিল। এর দুই দিনের মাথায় ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানি বাহিনী। এর মধ্যদিয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে অভ্যুদয় ঘটে বাংলাদেশের।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ঘাতক চক্র কেবল ঢাকা শহরেই প্রায় দেড়শ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। সান্ধ্য আইনের মধ্যে সেই রাতে তালিকা ধরে ধরে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী ও পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় নিস্তব্ধ ভূতুড়ে অন্ধকারে।

পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজার ইটখোলাতে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় অনেক নিথর দেহ। কারও শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারও অমানুষিক নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত। হাত পেছনে বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নাড়িভুঁড়িও বের করে ফেলা হয়েছে অনেকের। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে উন্মুখ মানুষ স্বজন হারানোর সেই কালরাত্রির কথা জানতে পেরে শিউরে উঠেছিল। স্থবির হয়ে গিয়েছিল সবকিছু।

হত্যার পূর্বে যে তাদের নির্যাতন করা হয়েছিল, সে তথ্যও বের হয়ে আসে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী নিউজ উইকের সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের রচিত নিবন্ধ থেকে জানা যায় যে, নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে সরকারিভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ছাড়াও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও নানা কর্মসূচি পালন করবে।

 

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় খবর