ঘটনার বিবরণে জানা যায়, রুমন জেয়ার্দ্দার জনির লেখনীতে চলতি মাসের ১৬ তারিখ, “সুদ ব্যবসায়ী রোজিনার অত্যাচারে নিঃস্ব অনেকে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে।” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয় জাতীয় সাপ্তাহিক বার্তা বিচিত্রা পত্রিকায়। পরবর্তীতে ফলোআপ নিউজের জন্য তথ্য সংগ্রহ ও সাক্ষাৎকার গ্রহনে ১৯ জুন (বৃহস্পতিবার) প্রতিবেদক রুমন ঘটনাস্থল মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানাধীন তরা ইউনিয়নে সুদ ব্যবসায়ী রোজিনার মুখোমুখি হলে, রোজিনা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সময় রোজিনার মেয়ে ঈশান আরও ২/৩ জন অজ্ঞাতনামা লোক নিয়ে মারমুখি হয়ে প্রতিবেদক রুমনকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। বিকাল ৪ টা ৪০ মিনিট হতে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত প্রায় ৪ ঘন্টা সময় তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। যা ঘিওর থানায় লিখিত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্তকারী অফিসার ঘিওর থানার সাব-ইন্সপেক্টর মুক্তার হোসেনের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বার্তা বিচিত্রাকে জানান, “থানায় উভয় পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।”
উল্লেখ্য, রোজিনার সুদের করবার ও ঋণ নিয়ে সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া সাধারণ মানুষের মানবেতর জীবন-যাপনের বেশ কিছু তথ্যচিত্র ইতোমধ্যে বার্তা বিচিত্রার হাতে এসে পৌছেছে। এ ধরনের সুদ কারবারিরা সাধারনত যে কোনো ব্যাংকের চেকের পাতা ও ফাঁকা স্ট্যাম্পে গ্রাহকের স্বাক্ষর রেখে বিভিন্ন অংকের টাকা চড়া সুদে লোন দিয়ে থাকে। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে সুদ-আসলে কয়েকগুণ টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারলে আগেই নিয়ে রাখা ফাঁকা স্ট্যাম্প ও ব্যাংক চেকে তারা তাদেরে ইচ্ছা মতো টাকা বসিয়ে গ্রাহকদের বিভিন্নভাবে হয়রানী করে থাকে। আসলেরও কয়েকগুণ বেশি সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও সাধারন জনগন। সুদের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসতে না পেরে তারা এক সময় নিঃস্ব হয়ে যায় এবং চেকের মামলা মাথায় নিয়ে জেল খাটার ভয়ে নিজ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র যাযাবরের মতো মানবেতর জীবন-যাপন করে।
এ বিষয়ে কথা হলে আইনজীবী এ্যাডভোকেট ইয়াছিন জাহান নিশান জানান, “সমবায় অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া কেউ সুদের ব্যবসা করতে পারে না। সমবায় সমিতি আইন অনুযায়ী সুদের ব্যবসা করতে হলে সমবায় অধিদপ্তরের অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। যদি কোনো ব্যক্তি বা সমিতি সমবায় অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া সুদের ব্যবসা করে, তবে তা অবৈধ এবং বেআইনি হিসেবে গণ্য হবে। বিশেষভাবে, সমবায় সমিতির নামে সুদের ব্যবসা করা একটি গুরুতর অপরাধ এবং এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।”
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তদন্তকারী অফিসার ঘিওর থানার সাব-ইন্সপেক্টর মুক্তার হোসেনের তদন্ত রিপোর্ট ও বার্তা বিচিত্রার অনুসন্ধান সমন্বয়ে প্রতিবেদন দেখুন আগামী সংখ্যায়।