গতকাল শনিবার (৮ নভেম্বর) সারাদিন আলোচনা হলেও সরকারি কার্যক্রম পুনরায় চালু করার বিষয়ে কোনো চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে, ফলে সিনেট
রোববারও অধিবেশনে বসার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই অচলাবস্থা এখন ৩৯ দিন ধরে চলছে। এর ফলে ফেডারেল কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না, বিমান সংস্থাগুলো ফ্লাইট বাতিল করছে ও লাখ লাখ আমেরিকানদের জন্য খাদ্য সহায়তা (ফুড স্ট্যাম্প) পেতে বিলম্ব হচ্ছে।
শাটডাউন অবসানের প্রধান বাধা হলো স্বাস্থ্যসেবা ভর্তুকি।
ডেমোক্র্যাট দলের দাবি হলো, সরকারি কার্যক্রম আবার চালু করার আগে রিপাবলিকানদের অবশ্যই আলোচনায় বসতে হবে এবং ‘ওবামাকেয়ার’ নামে পরিচিত স্বাস্থ্যসেবা আইনের (এসিএ) আওতায় যে স্বাস্থ্য বিমার ভর্তুকি দেওয়া হয়, সেটি এক বছরের জন্য বাড়ানোর বিষয়ে রাজি হতে হবে। এই ভর্তুকির সুবিধা প্রায় দুই কোটি ৪০ লাখ আমেরিকান নিয়ে থাকেন। যদি কংগ্রেস এই ভর্তুকি বাতিল করে দেয়, তাহলে আগামী বছর এই বিমার মাসিক খরচ (প্রিমিয়াম) গড়ে দ্বিগুণ বা তারও বেশি বেড়ে যাবে।
রিপাবলিকানরা বলছেন, এই আলোচনা পরে হতে পারে, সরকারকে প্রথমে পুনরায় কার্যক্রম চালু করতে হবে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্টভাবে ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে আপস করার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় রিপাবলিকান সিনেটরদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন ভর্তুকির জন্য বিমা কোম্পানিগুলোতে পাঠানো ফেডারেল অর্থ সরাসরি জনগণের কাছে পাঠানো হয়, যাতে তারা নিজেরাই ‘আরও ভালো’ স্বাস্থ্যসেবা ‘কিনতে’ পারে।
মধ্যপন্থিদের মধ্যে আলোচনার নেতৃত্ব দেওয়া ডেমোক্র্যাট সিনেটর জিন শাহীন জানিয়েছেন, ডেমোক্র্যাটদের এখন ‘আরেকটি পথ এগিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন’। শাহীন এবং অন্যান্য মধ্যপন্থি সিনেটররা একটি নতুন বিল নিয়ে আলোচনা করছেন যা সরকারের কিছু অংশ (যেমন খাদ্য সহায়তা, ভেটেরান্স প্রোগ্রাম) এবং আইনসভা শাখার জন্য অর্থ প্রদান করবে এবং ডিসেম্বর বা জানুয়ারি পর্যন্ত অন্য সবকিছুর জন্য তহবিল বৃদ্ধি করবে।
এই নতুন চুক্তিতে কেবল ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যসেবা ভোটের প্রতিশ্রুতি থাকবে, বর্ধিত ভর্তুকির গ্যারান্টি থাকবে না।
তবে ডেমোক্র্যাট সিনেট নেতা চাক শুমার যুক্তি দিয়েছেন যে ট্যাক্স ক্রেডিটের ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা করার আগে রিপাবলিকানদের ভর্তুকি এক বছরের জন্য বাড়ানোর প্রস্তাব গ্রহণ করা উচিত।
সিনেটে সপ্তাহান্তে অধিবেশন বসাটা খুবই অস্বাভাবিক ঘটনা। রিপাবলিকানদের সংখ্যা বেশি (৫৩ জন বনাম ডেমোক্র্যাটদের ৪৭ জন) থাকা সত্ত্বেও, সরকারের কার্যক্রম চালু করতে একটি বিল পাসের জন্য ৬০টি ভোটের প্রয়োজন হয়। তাই, রিপাবলিকানরা কোনো বিলের ওপর ভোট দিতে চাইছেন না, কারণ তারা নিশ্চিত নন যে তারা আইন পাস করার জন্য প্রয়োজনীয় ৬০টি ভোট পাবেন কিনা।
ট্রাম্প রিপাবলিকানদের ফিলিবাস্টার (আইন পাসের জন্য ৬০ ভোটের নিয়ম) শেষ করার আহ্বান জানালেও, রিপাবলিকান সিনেটের নেতা জন থুন একটি দ্বিদলীয় প্যাকেজের দিকে নজর দিচ্ছেন যা মধ্যপন্থি ডেমোক্র্যাটদের প্রস্তাবের প্রতিফলন ঘটাবে।
থুন যদি এই প্যাকেজ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে একটি পরীক্ষামূলক ভোট আসতে পারে। এই ভোটে ডেমোক্র্যাটদের একটি কঠিন বিকল্প বেছে নিতে হবে। তা হলো- শাটডাউনের যন্ত্রণা দীর্ঘায়িত করে জানুয়ারিতে ভর্তুকি বাড়ানোর জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়া, অথবা সরকারের কার্যক্রম পুনরায় চালু করার জন্য ভোট দেওয়া এবং স্বাস্থ্যসেবা ভোটের প্রতিশ্রুতির ওপর ভরসা রাখা।


