মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের জেরে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিচ্ছেন দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যরা। এই সংখ্যাটি শুধু বাড়ছেই। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী ১০৩ জন সদস্য অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম।
বিজিবি কর্মকর্তা জানান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হয়েছে।
গত কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গ্রুপের তুমুল লড়াই চলছে। তাদের ছোড়া গুলির সিসা ও রকেট লঞ্চার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তে উড়ে এসে পড়ছে। এতে ঘুমধুম-তুমব্রু এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন। ইতোমধ্যে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ঢুকে পড়া মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে সে দেশের সরকার যোগাযোগ করেছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ আছে। আজ সকালে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আমাদের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। তাদের বর্ডার গার্ডের সদস্যদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। এখন তাদের উড়োজাহাজ, নাকি নৌকায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, সেটা নিয়ে আমরা আলোচনার মধ্যে আছি।
মন্ত্রী জানান, এর আগে ভারতেও অনেকে (বিজিপি সদস্য) ঢুকে পড়েছিলেন। ভারত থেকে তাদের উড়োজাহাজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
মিয়ানমার থেকে এখনো অনেকে আসছেন উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমরাও যোগাযোগ করেছি। এখনো আরও আসছে, আসার সম্ভাবনা আছে। কয়েকজন আহত হয়েছে। তাদের কক্সবাজার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জাতীয় সংসদে বলেন, সীমান্তে উত্তেজনার পরিস্থিতি সরকার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছে৷ মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখছে৷
আইনমন্ত্রী বলেন, বিজিবি সদস্যদের ধৈর্য ধরার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ একই সঙ্গে সীমান্তবর্তী স্কুলগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷
এর আগে রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কোনো যুদ্ধে জড়াতে চাই না। আমরা যুদ্ধ চাই না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময়ই আমাদের সেই নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। তার মানে এই নয় যে, আমাদের গায়ে এসে পড়বে আর আমরা ছেড়ে দেব। সেটার জন্য আমরা সবসময় তৈরি আছি। আমরা ওখানে শক্তি বাড়িয়েছি। আমাদের পুলিশ ও কোস্টগার্ডকেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে আমাদের সীমানায় কেউ কোনোভাবে অনুপ্রবেশ করতে না পারে। সে ব্যাপারে আমরা খুব সতর্ক আছি।