কুমিল্লার চান্দিনায় স্ত্রীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে স্বামী। পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়ার পচা গন্ধ পেয়ে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ দরজা ভেঙে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করে।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে চান্দিনা পৌরসভার রারিরচর গ্রামের একটি বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন- চান্দিনার ছায়কোট গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে রোজিনা আক্তার (২২) ও জেলার আদর্শ সদর এলাকার কাপ্তান বাজার এলাকার মুজিবুর রহমানের ছেলে সোহেল (২৮)।
জানা যায়, রোজিনা আক্তার একটি পার্লারে কাজ করতেন আর সোহেল বেকার ছিলেন।
পুলিশ জানায়, একই ভবনের পাশের ফ্লাটের ভাড়াটিয়ারা পঁচা গন্ধ পেয়ে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ দরজা ভেঙে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে। তবে কয়দিন আগে তারা মারা গেছেন, তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
একই ভবনের বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন বলেন, আমি ভবনের তৃতীয় তলায় থাকি। বৃহস্পতিবার থেকে দ্বিতীয় তলায় পঁচা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। প্রথমে ভেবেছি হয়তো ময়লার গন্ধ। শুক্রবার জুমার নামাজের পরও গন্ধ পেয়ে দ্বিতীয় তলার দরজা ধাক্কা দেই, কিন্তু কারও কোনো সাড়া শব্দ পাইনি। পরে তাদের ফোন নম্বরে ফোন করলেও কেউ ফোন রিসিভ করেনি। সন্ধ্যার পর থেকে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কেউ কিছু বলতে পারেনি। অবশেষে থানায় খবর দেই। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে দুই মরদেহ দেখতে পায়। প্রথম কক্ষে স্বামীর দেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে ছিল এবং আরেক কক্ষের বিছানায় স্ত্রীর মরদেহ পড়ে ছিল।
নিহত রোজিনার ভাই শাহজাহান জানান, সোহেল মাদকাসক্ত ছিল। প্রায়ই রোজিনাকে মারধর করতেন। ১০-১৫ দিন আগেও মাদকের টাকার জন্য রোজিনাকে মারধর করায় রোজিনা আমাদের বাড়িতে চলে যায়। পরে আবার তাকে বাসায় নিয়ে আসে সোহেল।
নিহত সোহেলের বোন মুন্নী আক্তার বলেন, দুই বছর আগে সোহেল আর রোজিনা প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। তাদের সন্তান নেই। সোহেল গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আমার বাসায় গিয়েছিল। তারপর থেকে তাকে ফোনেও আর পাইনি। তার স্ত্রীর ফোনেও কল দিয়েছিলাম, কেউ রিসিভ করেনি। শুক্রবার সন্ধ্যার পর বাসার মালিক ফোন করার পর ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ দুটি দেখতে পাই।
চান্দিনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মীর রেজাউল ইসলাম জানান, দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে- পারিবারিক কলহের কারণে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর স্বামী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে ৩-৪দিন আগে এ ঘটনা ঘটেছে। শনিবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই দম্পতির মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।