আজ বৃহস্পতিবার মস্কোয় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন পুতিন। পশ্চিমাদের সতর্ক করে তিনি বলেন, রুশ সেনারা ইউক্রেনে যুদ্ধের ময়দানে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। এখন কোনো দেশ যদি কিয়েভের সহায়তায় সৈন্য পাঠানোর সাহস দেখায়, তার ‘পরিণতি হবে দুঃখজনক’।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তাদের (পশ্চিমা দেশ) শেষ পর্যন্ত এটা মাথায় রাখা উচিত যে আমাদের এমন সব সমরাস্ত্র রয়েছে, যেগুলো তাদের ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম। পশ্চিমাদের সব পদক্ষেপই এমন সংঘাতের প্রকৃত ঝুঁকি সৃষ্টি করে, যেখানে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার হতে পারে। আর এভাবে সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।’
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে হামলার পর থেকে বেশ কয়েকবার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা তুলেছে মস্কো। পশ্চিমা দেশগুলোও বরাবরই এর সমালোচনা করে আসছে। এরই মধ্যে আবার হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন। তিনি এমন সময় এ কথা বললেন, যখন সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ইউক্রেনে ফরাসি সেনা পাঠানোর বিষয়টি নাকচ করছেন না।
এ ছাড়া যুদ্ধ শুরুর পর দীর্ঘ সময় ইউক্রেনের পাশে থাকা পশ্চিমা দেশগুলোকে নতুন সহায়তা নিয়ে দোলাচলে থাকতে দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে আটকে আছে ইউক্রেনের জন্য নতুন ৬ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা তহবিল। কিয়েভের এমন সংকটের মুহূর্তে সম্প্রতি দেশটির আভদিভকা শহর দখল করেছে রুশ বাহিনী। একই সঙ্গে অন্য এলাকাগুলোতেও অগ্রগতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
এদিকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার খড়গের নিচে থাকা রুশ অর্থনীতিও অনেকের প্রত্যাশার চেয়ে বেশ ভালো করছে। নিষেধাজ্ঞার জেরে মস্কো সবচেয়ে ভয়াবহ যে সংকটের মধ্যে পড়তে পারত, তা থেকে বাঁচাতে রাশিয়াকে বড় সহায়তা করেছে সামরিক উৎপাদনে বিপুল বিনিয়োগ এবং সেনাসদস্যদের উচ্চ বেতন ও নানা সুবিধা।
জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে দেশের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয় নিয়েও কথা বলেছেন পুতিন। ১৫ থেকে ১৭ মার্চ রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নির্বাচনে পুতিনের কোনো প্রকৃত বিরোধী নেই। ফলে নির্বাচনের ফল কী হবে, তা অনেকটাই নিশ্চিত। নির্বাচনের আগে চলতি বছরের শুরু থেকে গণমাধ্যমে পুতিনের উপস্থিতিও বেড়েছে। সম্প্রতি একটি বোমারু বিমানে চড়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন তিনি।