রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৭ হাজার ৩৮৪ জন। এরমধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২৪ হাজার ৩১২ জন। মারা গেছেন ১৪১ জন।
মহাখালীর ডিএনসিসি ডেঙ্গু হাসপাতালের রোগীরা জানান, দ্রুত সময়ে হাসপাতালে না আসায় পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করছে। অন্যদিকে রোগীর স্বজনরা বলেন, বয়স্ক ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছে। সচেতনতার অভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
মহাখালী ডিএনসিসি ডেঙ্গু বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক জানান, চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে পর্যায়ক্রমে প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবাইকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম জানান, ডেঙ্গু বিষয়ে আগে যেসব পরিকল্পনা করা ছিল, সেই অনুযায়ীই কাজ করছেন তারা। কাউন্সিলর না থাকার কারণে একটু সমস্যা হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি শিগগিরই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আসছে অক্টোবরে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে ডেঙ্গুর প্রকোপ। বিশেষ করে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ১৮টি জেলা উচ্চঝুঁকিতে আছে। সেগুলো হলো রাজধানী ঢাকা, বান্দরবান, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, বরিশাল, বরগুনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, খুলনা, যশোর, নড়াইল, মেহেরপুর, ময়মনসিংহ, মাদারীপুর ও মানিকগঞ্জে পরিস্থিতি খারাপ হবে। বিশেষ করে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কারণে সৃষ্ট ঘনবসতি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ চোখ রাঙাচ্ছে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের দিকে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।