সোমবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৫
সোমবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৫
25 C
Dhaka
Homeজেলার খবরদুমকীতে সুপারির খোল দিয়ে তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব তৈজসপত্র

দুমকীতে সুপারির খোল দিয়ে তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব তৈজসপত্র

প্রকাশ: ডিসেম্বর ১, ২০২৫ ৫:৪৫

দুমকীতে সুপারির খোল সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলছে। তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব প্লেট, বাটি, লবণদানি, চামচ, কাঁটা চামচ, ছুরি, ট্রে—সহ নানা ধরনের তৈজসপত্র। যা হোটেল–রেস্তোরাঁ এবং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে খাবার পরিবেশনে ব্যবহৃত হয়। প্লাস্টিক ও অনটাইম পণ্যের বিকল্প হিসেবে মাটিতে পচনশীল এসব তৈজসপত্রের কারখানা গড়ে তুলেছেন দুমকি উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের রাজাখালী গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা তৌকির আহমেদ সাবাব। পরিবেশ রক্ষার জন্য প্লাস্টিক রিসাইক্লিংয়ের পাশাপাশি তিনি এই পরিবেশবান্ধব উদ্যোগও গ্রহণ করেছেন। তাঁর এই পদক্ষেপ গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলছে এবং এলাকার দরিদ্র–অসহায় মানুষের কর্মসংস্থানের পথ তৈরি করছে।

সুপারি গাছের খোল গ্রামীণ জনপদের একটি পরিচিত উপকরণ। গাছ থেকে ঝরে পড়ে মাটির সঙ্গে মিশে যায়। গ্রামবাংলার নারীরা এসব খোল কুড়িয়ে গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু একসময়ের অবহেলিত এই সুপারির খোল এখন শহরের বাজারেও নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। পরিবেশবান্ধব তৈজসপত্র তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন উদ্যোক্তা তৌকির আহমেদের প্রতিষ্ঠিত ‘আলপথ গ্রুপ’।

লেবুখালির পায়রা সেতু থেকে ৯ কিলোমিটার পূর্বে লেবুখালি–বাউফল মহাসড়কের উত্তর পাশে রাজাখালী গ্রামে অবস্থিত ‘আলপথ গ্রুপ’-এর এই তৈজসপত্র তৈরির কারখানা। এছাড়াও ঢাকায় প্রতিষ্ঠানটির গার্মেন্টস ইউনিটে চামড়া ও পরিবেশবান্ধব পাট দিয়ে দেশি–বিদেশি ব্যাগ তৈরি করা হয়। এসব পণ্য দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে সরবরাহ করা হচ্ছে।

তরুণ উদ্যোক্তা তৌকির আহমেদ বলেন, “আমাদের দেশটা প্লাস্টিক দূষণের কারণে ভয়াবহ ক্ষতির মুখে। অনেক শিল্পকারখানা গড়ে উঠলেও পরিবেশবান্ধব শিল্প নেই বললেই চলে। তাই পরিত্যক্ত সুপারির খোল ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব তৈজসপত্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি।”

কারিগর সুখি আক্তার বলেন, “আমরা কখনো ভাবিনি সুপারির খোল দিয়ে এত সুন্দর তৈজসপত্র তৈরি করা যায়। চট্টগ্রাম থেকে প্রশিক্ষক এনে প্রথমে আমাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর আমরা তৈজসপত্র তৈরি শুরু করি। প্রথমে খোল ভালোভাবে শুকিয়ে মেশিনে দিতে হয়, তারপর দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যেই একটি পণ্য তৈরি হয়।”

কারখানার ব্যবস্থাপক মো. জলিলুর রহমান বলেন, “মূলত এখানে পরিবেশবান্ধব পণ্য উৎপাদন করা হয়। প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে সুপারির খোল দিয়ে অনটাইম পরিবেশবান্ধব তৈজসপত্র তৈরি করা হয় এবং তা দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাজারজাত করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য—পণ্যটি মানুষের কাছে সহজলভ্য করা।”

এ বিষয়ে দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর মো. ইজাজুল হক বলেন, “সুপারির খোল থেকে তৈজসপত্র তৈরির উদ্যোগ দেশের সবুজ শিল্পায়নে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এটি সত্যিকার অর্থেই পরিবেশবান্ধব এবং পরিবেশের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এ ধরনের উদ্যোগ আরও কেউ নিতে চাইলে উপজেলা প্রশাসন সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।”

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় খবর