২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের খোলা একটি ব্যাংক একাউন্টে জমা হয় ১ লাখ ৭৬ হাজার ডলার বা দুই কোটির বেশি টাকা। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের পর সেই অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ লোপাট করে দূতাবাসেরই একটি চক্র হিসাবটি বন্ধ করার উদ্যোগ নিলে ব্যাংক বিষয়টি দূতাবাসকে জানায়।
রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিনের বিদায় এবং এম শহীদুল ইসলামের দায়িত্ব গ্রহণের মাঝামাঝি এই অর্থ লোপাটের ঘটনা ঘটে। এ সময়ের মধ্যে দূতাবাসের আরেকটি অ্যাকাউন্ট থেকে সরানো হয় আরও ৩ লাখ ডলারের বেশি বা প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলাম দায়িত্ব নেয়ার পরপরই একটি চিঠির মাধ্যমে সেই সময়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও সচিবকে এ তথ্য জানান।
ওয়াশিংটন দূতাবাসে হওয়া এই দুর্নীতির প্রায় আড়াই বছর পর একটি তদন্ত কমিটি করেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে কৌশলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর করা তদন্ত কমিটির প্রধানকে বাদ দিয়ে নতুন করে কমিটি করা হয়। মনে করা হয়, সেই তদন্ত এখনো শেষ না হওয়ার পেছনে এটিই প্রধান কারণ। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অস্বীকার করেননি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ কে আব্দুল মোমেন বলেন,
বিষয়টি দুঃখজনক। আমি যখন সরকারে ছিলাম, তখন ওয়াশিংটনে আমাদের রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র সচিব এবং আমাকে জানিয়েছিলেন। আমাদের দেশের জন্য এটা অনেক টাকা। ডরমেন্ট অ্যাকাউন্টে বহুদিন ধরে তা পড়ে ছিল। তখন এতগুলো টাকা হঠাৎ করে উধাও হয়ে যাওয়ায় ব্যাংকই সতর্ক হয়ে গেল। রাষ্ট্রদূত আমাকে জানানোর পর সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কে দায়ী- এসব নির্ধারণের জন্য একটি কমিটি নিয়োগ করি। পরবর্তীকালে এটা পরিবর্তন হয়।
সাবেক মন্ত্রীর ইঙ্গিত দূতাবাসের মধ্যম সারির কোনো কর্মকর্তাই এ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, ‘স্টাফ এবং কর্মকর্তারা সব কিছু তৈরি করেন। আর যিনি রাষ্টদূত হন, তিনি শুধু সই করেন।’
যদিও ড. হাছান মাহমুদ নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর বিষয়টি তার নজরে আনা হয়েছে কিনা সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ড. মোমেন আশা করেন ড. হাছান মাহমুদ এই দুর্নীতির যথাযথ তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেবেন।