সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
18 C
Dhaka

শিক্ষায় আরও বেশি বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন

0
আমাদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভায় অতিথিরা
আমাদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভায় অতিথিরা

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘শিক্ষায় ন্যায্যতাভিত্তিক বাজেট: আমাদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এসব কথা বলেন। এই সভার আয়োজন করে শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাগুলোর মোর্চা গণসাক্ষরতা অভিযান।

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। তিনি বলেন, শিক্ষায় বরাদ্দ যদি শতাংশে দেখা হয়, তাহলে হয়তো কম। কিন্তু টাকার অঙ্কে দেখলে তা বেশি। তবে তিনিও অন্যদের অভিমতের সঙ্গে একমত যে শিক্ষায় আরও বেশি বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন। আগামী দিনে সরকার এগুলো বিবেচনা করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

আলোচনায় উঠে আসা বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘সমস্যাগুলো বলছেন। কিন্তু কীভাবে সমাধান করবেন, সেটি কিন্তু কেউ বলছেন না। আপনারা বলছেন টাকা কম, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ হচ্ছে না। অনেক রকম সমস্যার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সম্ভাবনা কীভাবে জাগিয়ে তুলতে পারি, সেটি কিন্তু আপনাদের বলতে হবে।’

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন এডুকেশন ওয়াচের চেয়ারপারসন ও জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। তিনি বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ সবাই গ্রহণ করেছিল। বিরোধীরাও খুব একটা বিরোধিতা করেনি। তারপর বাস্তবায়নে যখন এল, তখন মূল বিষয়গুলো বাদ দিয়ে নতুন নতুন বিষয় যেমন পঞ্চম শ্রেণিতে পরীক্ষা (প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা) ঢুকিয়ে দেওয়া হলো; যা শিক্ষানীতিতে ছিল না। বাংলাদেশে শিক্ষা নিয়ে এত বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে যে পঞ্চম শ্রেণি শেষে সমাপনী পরীক্ষা হবে। কিছুদিন পরে আবার হবে না। এখন বন্ধ করা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে আবারও নাকি কী ধরনের পরীক্ষা হবে। এভাবে যদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলতে থাকে তাহলে মানসম্মত শিক্ষা কী করে হবে? হতে পারে না।

খলীকুজ্জমান বলেন, ‘একটার পর একটি পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছি, জাতি হিসেবে সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না কীভাবে শিক্ষা এগোবে। সুতরাং এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ হওয়া উচিত। পঞ্চম শ্রেণি ও অষ্টম শ্রেণি শেষে পরীক্ষা বন্ধ হয়েছে, এটি যেন পুনরায় চালু না করা হয়।’

মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী। শিক্ষায় ন্যায্যতাভিত্তিক বাজেটের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, শিক্ষায় বিনিয়োগ, শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ। সেই শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগের জায়গা থেকে যেন সরে আসা না হয়, সেই প্রত্যাশা করেন তিনি।

স্থায়ী শিক্ষা কমিশন করা এবং শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের বিকেন্দ্রীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমদ। তিনি বলেন, এগুলো রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোছা. নূর জাহান খাতুন বলেন, এসএসসি পর্যন্ত এখনো ১৭ রকমের শিক্ষাব্যবস্থা আছে, যা একমুখী হওয়া উচিত। আরেকজনের দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বইয়ের মুদ্রণ আসলেই খারাপ। বাচ্চাদের সামনে লজ্জা পেতে হয়। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো কার্যকর করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

মতবিনিময় সভায় শিক্ষা বাজেটবিষয়ক উপস্থাপনা তুলে ধরেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, শিক্ষার বাজেট একটি বৃত্তের মধ্যে বন্দী হয়ে আছে। আসন্ন অর্থবছরে (২০২৪-২৫) মোট বাজেটের কমপক্ষে ১৫ শতাংশ শিক্ষায় বরাদ্দ করা এবং ২০২৬ সালের বাজেটে সেটি ২০ শতাংশে উন্নীত করার সুপারিশ করেন। একই সঙ্গে তিনি শিক্ষায় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি আরও কিছু সুপারিশও তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মাহবুবা নাসরীন ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম।

মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা সুবিধাবঞ্চিত কয়েকজন শিক্ষার্থীও কথা বলেন। এ ছাড়া একাধিক অভিভাবক ও বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা মতামত তুলে ধরেন।

চলতি বছর বারতে পারে আলুর দাম

0
আলু

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর পল্টনে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন ও সেভার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রোগবালাইয়ের কারণে এ বছর অন্তত ২০ শতাংশ আলুর উৎপাদন কম হয়েছে। গত বছর কোল্ড স্টোরেজে যেসব আলু সংরক্ষণ করা হয়েছিল সেগুলোর দাম ছিল ৮ থেকে ১২ টাকা কেজি। এবারে সেগুলোর দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা।

মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, কৃত্রিম সংকট ও বাজার অস্থিরতার কারণে ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা অন্তত ৩০ শতাংশ আলু আগেই মাঠ থেকে তুলে বাজারে বিক্রি করে দিয়েছে। এতে করে বড় একটি সংকট তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে ব্যাংক ঋণের সুদ ১৩-১৪ শতাংশ। উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে আমরা প্রজেক্ট করলে সেটা লাভজনক করা মুশকিল হয়ে পড়বে। এ কারণে সরকার আমাদের বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে বা বিদেশ থেকে ফান্ড নিয়ে যদি আমাদের ৩-৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেয় তাহলে আমরা এ খাতে বিনিয়োগ করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, দেশের কোল্ড স্টোরেজগুলোতে ৪টি করে চেম্বার রয়েছে। যেগুলো দুর্বলভাবে ব্যবসা করছে, সেগুলোর একটি বা দুটি চেম্বারকে বিশেষভাবে পেঁয়াজ বা অন্য পেরিশেবল কৃষিপণ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এ জন্য দরকার বিনিয়োগ, যে সহায়তাটুকু সরকারের কাজ থেকে আমরা চাই।

বক্তারা বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করলেই সংকট হয়, অথচ আমাদের পেঁয়াজ নষ্ট হয়। এর জন্য স্পেশালাইজড কোল্ড স্টোরেজ দরকার। তরমুজ, আম, টমেটে, গাজরের জন্য কোল্ড স্টোরেজ দরকার। কারণ হাজার হাজার টন এসব খাদ্য পণ্য উৎপাদন করলেও তা একটা সময় মাঠেই নষ্ট হয়। এখানে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য স্টোরেজ গুরুত্বপূর্ণ।

প্রসঙ্গত, মুন্সীগঞ্জের কোল্ড স্টোরেজগুলোতেও গত বছরের তুলনায় এ বছর ৩০ শতাংশ কম আলু সংরক্ষণ হয়েছে। এ ছাড়া ঠাকুরগাঁও, রংপুরের মতো জায়গাগুলোতে ১০ থেকে ২০ শতাংশ কম আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে। যে কারণে এ বছর বেশি দাম দিয়ে আলু খেতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী।

দেশের রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার

0
কেন্দ্রীয় ব্যাংক
কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২১ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবায়নে সঞ্চিত বিদেশি অর্থের পরিমাণ ছিল ২৫ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের গণনা পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী তা ছিল ১৯ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে গত ১ সপ্তাহে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ৫৩ কোটি ডলার।

দেশের আর্থিক খাত নিয়ন্ত্রণকারী সর্বোচ্চ সংস্থার নিট রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে। এটি শুধু আইএমএফকে দেওয়া হয়, প্রকাশ করা হয় না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই মেথডে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন প্রায় সাড়ে ১৭ বিলিয়ন ডলার। এ দিয়ে ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সংকটের কারণে রিজার্ভ থেকে বাজারে প্রচুর ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া এ মাসে আকুর বিলও পরিশোধ হয়েছে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কম এসব কারণেই মূলত রিজার্ভ কমছে।

রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়, বিদেশি বিনিয়োগ, বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ থেকে যে ডলার পাওয়া যায় তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরি হয়। আবার আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ বা কিস্তি পরিশোধ, বিদেশি কর্মীদের বেতনভাতা, পর্যটক বা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ বিভিন্ন খাতে যে ব্যয় হয়, তার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা চলে যায়। এভাবে আয় ও ব্যয়ের পর যে ডলার থেকে যায় সেটাই রিজার্ভে যোগ হয়। আর বেশি খরচ হলে রিজার্ভ কমে যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১০ বছর আগে ২০১৩ সালের জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। পাঁচ বছর আগে ছিল ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে বেড়ে ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে পৌঁছায়। ওই বছর ৮ অক্টোবর ৪০ বিলিয়ন ডলারের নতুন মাইলফলক অতিক্রম করে। এরপর তা বেড়ে ক‌রোনা মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ রেকর্ড গড়ে ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট। ওইদিন রিজার্ভ ৪৮ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার বা চার হাজার ৮০৪ কোটি ডলারে ওঠে যায়। এরপর ডলার সংকটে গত বছর থেকে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে।

আন্দোলন স্থগিত করেছে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ

0
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন

সভা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় ইন্টার্ন চিকিৎসকের অনুমতি সাপেক্ষে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মিটফোর্ড হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক, পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি আন্দোলন প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকেরাই একটি হাসপাতালের প্রাণ। তারা খেয়ে না খেয়ে হাসপাতালের রোগীদের সেবা করেন। সিনিয়র চিকিৎসকেরা রাউন্ড দিয়ে চলে গেলে এই ইন্টার্ন চিকিৎসকেরাই রোগীদের নানা রকম অসুবিধাগুলোর দেখভাল করেন। কাজেই তাঁদের দাবিগুলোর যৌক্তিকতা বুঝে আমি নিজে ফাইল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কথা বলেছি। প্রধানমন্ত্রী ফাইল গ্রহণ করেছেন এবং অতিদ্রুত দেশের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের জন্য ভাতা বৃদ্ধির সুরাহা করতে উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। আমি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতি এটাই বলতে চাই, তাঁরা আন্দোলন না করে চিকিৎসাশিক্ষার কাজে মনোযোগ দিন। প্রধানমন্ত্রী আপনাদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। আমি বিশ্বাস করি, আমরা দ্রুততম সময়ে আপনাদের ভালো খবর দিতে সক্ষম হব।’

এর আগে দুপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভায় আন্দোলনের বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, সচিব, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, অধ্যক্ষ, পরিচালকসহ পেশাজীবী চিকিৎসক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

সভায় আলোচনা করেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব ওয়াহেদুজ্জামান (অতিরিক্ত সচিব), বিএমএ সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএসএমএমইউর নবনিযুক্ত ভিসি দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন চৌধুরী, স্বাচিপ মহাসচিব কামরুল হাসান মিলন, বিসিপিএস সভাপতি অধ্যাপক শহীদুল্লাহসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

সভায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজসহ অন্যান্য বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতারা তাঁদের দাবিগুলোর মধ্যে বর্তমানে ভাতা ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা, প্রতিবছর এক হাজার টাকা করে ভাতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা রাখা, হাসপাতালে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা, চিকিৎসকদের ঝুঁকি ভাতা রাখা, বকেয়া ভাতা পরিশোধ করাসহ অন্যান্য দাবি তুলে ধরেন।

সভায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা দেশের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদার মনোভাবের কথা তুলে ধরেন। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কোনো ভাতা দেওয়ার নিয়ম ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের প্রতি উদার মনোভাব পোষণ করে ২০২১ সালে ভাতা ব্যবস্থা চালু করেন। ভাতা বৃদ্ধি করা নিয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি। প্রধানমন্ত্রী দ্রুতই একটি ভালো ও গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান বলেন, ‘ইন্টার্নি চিকিৎসকদের দাবির বিষয়টি আমরা অত্যন্ত সহানুভূতির সাথে গ্রহণ করেছি। যদিও বর্তমানে গোটা বিশ্বেই আর্থিক সংকট চলছে, তবু সরকার ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধি করতে আন্তরিক রয়েছে।’

সভায় পেশাজীবী চিকিৎসক নেতারা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলন তুলে নিতে অনুরোধ করেন। পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি পূরণে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দিলে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতারা একযোগে আন্দোলন প্রত্যাহারে একমত পোষণ করেন।

১১ টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক

0
প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা

সরকারি তহবিল থেকে ৭ হাজার ৯৩৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে ৪৮৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার। এটি চলতি অর্থবছরের ৮ম সভা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার, কৃষি, পানি ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য আবদুল বাকী, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন এবং ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য ড. মোহাম্মদ ইমদাদউল্লাহ মিয়ান।

একনেক সভায় নতুন ১০টি প্রকল্প উত্থাপন করা হয়েছে। তারমধ্যে ভৌত অবকাঠামো বিভাগের ৩টি। কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের ৫টি। আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের ১টি। শিল্প ও শক্তি বিভাগের ১টি। তা ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য ১টি ও একনেকে অবগতির জন্য ২টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়েছে।

ভৌত অবকাঠামো বিভাগের ৩টি প্রকল্পের মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে মিশরে কায়রোতে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স এবং আবাসিক ভবন নির্মাণ। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ২০টি মিটারগেজ ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ এবং ১৫০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ সংগ্রহ (প্রথম সংশোধিত)। সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের কাশিনাথপুর-দাশুরিয়া-নাটোর-রাজশাহী-নবাবগঞ্জ-কানসাট-সোনামসজিদ-বালিয়াদী বর্ডার (এন-৬) জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ ও প্রস্ততায় উন্নীতকরণ (নবাবগঞ্জ অংশ)।

কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান সরকারি মৎস্য খামারসমূহের সক্ষমতা ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন (প্রথম পর্যায়) ও ইমপ্রুভমেন্ট অব ফিস ল্যান্ডিং সেন্টার অব বাংলাদেশ ফিশারিস ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন ইন কক্সবাজার ডিস্ট্রিক্ট।

স্থানীয় সরকার বিভাগের বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের জেলাসমূহের পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়) এবং প্রোমোটিং রেজিলেন্স ফর ভালনারেবল থ্রট এক্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইমপ্রুভড স্কিলস এন্ড ইনফরমেশন (তৃতীয় পর্যায়)।

আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ৮টি বিভাগীয় শহরে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং কিডনি চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন (প্রথম সংশোধিত)। শিল্প ও শক্তি বিভাগের মধ্যে রয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ঢাকার মিরপুরে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড কমপ্লেক্স স্থাপন।

মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের বাংলাদেশ বেতার শাহবাগ কমপ্লেক্স, আগারগাঁও স্থানান্তর, নির্মাণ ও আধুনিকায়ন (প্রথম পর্যায়) ৩য় সংশোধিত।

এলিট প্যানেলে শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ

0
শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ
শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ

২০১০ সালে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুরের ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক আম্পায়ারিংয়ে অভিষেক হয় শরফুদ্দৌলার। এখন পর্যন্ত পুরুষদের ১০টি টেস্ট, ৬৩টি ওয়ানডে ও ৪৪টি টি-টোয়েন্টিতে অন-ফিল্ড আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর পাশাপাশি মেয়েদের ১৩টি ওয়ানডে ও ২৮টি টি-টোয়েন্টিতেও দায়িত্ব পালন করেছেন। মূলত দক্ষিণ আফ্রিকার মারাই এরাসমাস অবসরে যাওয়ার পর থেকে শরফুদ্দৌলার এলিট প্যানেলে ঢোকার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

এলিট প্যানেলে সুযোগ পাওয়া শরফুদ্দৌলা বলেছেন, ‘আইসিসির এলিট প্যানেলে নাম আসাটা দারুণ সম্মানের। আমাদের দেশের প্রথম ব্যক্তি বলে এটি আরও বিশেষ ব্যাপার। আমার ওপর যে আস্থা রাখা হয়েছে, তার প্রতিদান দিতে উন্মুখ হয়ে আছি। বেশ কয়েক বছর ধরেই আমার কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে এবং আরও চ্যালেঞ্জিং দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত আমি।’

সর্বশেষ বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অন–ফিল্ড আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করা শরফুদ্দৌলা আরও বলেন, ‘আইসিসি ও বিসিবিকে ধন্যবাদ, আমাকে সমর্থন জোগানোর জন্য। সহায়তা ও নির্দেশনার জন্য আমার অন্য সহকর্মীদেরও ধন্যবাদ। আমার পরিবার ও বন্ধুদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই আমাকে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার জন্য।’

আইসিসির আন্তর্জাতিক প্যানেল থেকে এবার এলিট প্যানেলে আম্পায়ার নির্বাচন করার জন্য যে নির্বাচক কমিটি কাজ করেছে, তাতে ছিলেন আইসিসির ক্রিকেট মহাব্যবস্থাপক ওয়াসিম খান, সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার, সাবেক আম্পায়ার টনি হিল এবং বিশেষজ্ঞ পরামর্শক মাইক রাইলি।

আইসিসির প্রধান নির্বাহী জিওফ অ্যালারডাইস শরফুদ্দৌলাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘আইসিসি এলিট প্যানেলের আম্পায়ার হওয়ায় শরফুদ্দোউলাকে অভিনন্দন। বাংলাদেশের প্রথম আম্পায়ার হিসেবে এ প্যানেলে আসার অর্জনের স্বীকৃতি দিতে চাই। অনেক বছর ধরে আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও আইসিসি টুর্নামেন্টে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের জন্য এটি তার প্রাপ্য পুরস্কার।’

২০২৩ পুরুষ বিশ্বকাপের আগে ২০১৭ ও ২০২১ সালে আইসিসির নারী বিশ্বকাপ, ২০১৮ সালে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন করেন শরফুদ্দৌলা।

 

প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন তাঁদের বউদের ভারতীয় শাড়িগুলো কেন পুড়িয়ে দিচ্ছেন না

0
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমার প্রশ্ন, যে বিএনপি নেতারা বলছেন ভারতীয় পণ্য বর্জন, তাঁদের বউদের কয়খানা ভারতীয় শাড়ি আছে? তাঁদের বউদের কাছ থেকে সেই শাড়িগুলো এনে কেন পুড়িয়ে দিচ্ছেন না।’

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি এখন বলব আমাদের এই বিএনপি নেতাদের, যাঁরা যাঁরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করবেন, সবাই বাড়িতে গিয়ে তাঁদের বউরা যেন কোনোমতে কোনো ভারতীয় শাড়ি না পরেন। তাঁদের আলমারিতে যে কয়টা শাড়ি আছে, সব এনে যেদিন ওই অফিসের সামনে পোড়াবেন, সেই দিন বিশ্বাস করব যে আপনারা সত্যিকার ভারতীয় পণ্য বর্জন করলেন।’

ভারত থেকে গরমমসলা, পেঁয়াজ, রসুন ও আদা আমদানির কথা তুলে এগুলো বিএনপি নেতারা রান্নায় ব্যবহার করবেন কি না, সে প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মসলাপাতি, আদা যা কিছু আসছে, তাদের কারও পাকের ঘরে যেন এই ভারতীয় মসলা না দেখা যায়। তাদের রান্না করে খেতে হবে এইসব মসলাবিহীন। কাজেই এটা তারা খেতে পারবেন কি না, সেই জবাবটা তাদের দিতে হবে।’

বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থান কত?

0
বায়ুদূষণ
বায়ুদূষণ

বায়ুদূষণের এ তালিকায় ২৬০ নিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। ১৮৮ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি, ১৭৬ স্কোর নিয়ে চতুর্থ স্থানে চীনের বেইজিং এবং ১৭১ স্কোর নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে নেপালের কাঠমান্ডু।

আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে ‘মাঝারি’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে দিনের পর দিন ঢাকায় বায়ু দূষণ বেড়েই চলেছে। এর ৩টি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুসারে, বিশ্বে বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বাড়ছে।

শিক্ষার্থীরা জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে

0
কিশোর গ্যাং
কিশোর গ্যাং

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪। দুপুরের দিকে চট্টগ্রাম নগরের গণি বেকারি এলাকায় কাঁধে ব্যাগ নিয়ে স্কুল ড্রেস পরা কয়েকজন ছাত্র আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় জামালখানের দিক থেকে আরেকটি কিশোর গ্রুপ এসে সেখানে অবস্থান নেয়। এরপর শুরু হয় কথা কাটাকাটি। তারপর লাঠি, বেল্টসহ নানা উপকরণ দিয়ে শুরু করে মারামারি। সর্বশেষ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় শেষ হয় ঘটনা। চট্টগ্রামে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরোধ, মারামারির ঘটনা এটাই প্রথম নয়। ২০২২ সালে জামাল খান চেরাগী পাহাড় এলাকায় দুদলের বাগবিতণ্ডার জেরে হাতাহাতি শুরু হলে ছুরিকাঘাতে খুন হয় কলেজছাত্র ইভান।

সিএমপির জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হলেও তারা আদতে সেখানে যাচ্ছে না। অভিভাবকরাও বিষয়টি জানতে পারছে না। তাছাড়া শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি বাধ্যবাধকতা না থাকার সুযোগে তারা পার্ক, রেস্টুরেন্ট ও খেলার মাঠে সময় কাটাচ্ছে। এক পর্যায়ে তারা কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। ক্লাসে উপস্থিত না থেকে শিক্ষার্থীরা কথিত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হয়ে কেউ যখন অন্য সহপাঠীর ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে, তখন স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য

শিক্ষার্থীও ‘গ্যাং সদস্য’ হতে আগ্রহী হয়ে ওঠে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় কালবেলাকে বলেন, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত উপস্থিত থাকলে বিপদগামী কাজ থেকে অনেকটাই দূরে থাকবে। সম্প্রতি আমরা তিনটি স্কুলের ওপর জরিপ চালাই, এতে দেখা গেছে শ্রেণিকক্ষ থেকে পালিয়ে অনেক শিক্ষার্থী অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। সমাজের অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বদ্ধপরিকর। পাশাপাশি অভিভাবক, শিক্ষকদেরও এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। এতে শিক্ষার্থীদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা অনেকাংশেই কমে আসবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি নিশ্চিতের ব্যাপারে শিক্ষা বোর্ড থেকে কড়াকড়ি আরোপ করা যেতে পারে।

জরিপে দেখা যায় সিএমপি স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের দ্বাদশ শ্রেণিতে ৩৮৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৮১ জন শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত ছিল। যা মোট শিক্ষার্থীর ২১ শতাংশ। ১৫৫ জন শিক্ষার্থী ৫০ শতাংশ ক্লাসও করেনি।

গুল এ-জার বেগম সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের দশম শ্রেণিতে মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান বিভাগে মোট শিক্ষার্থী ছিল ১১৬ জন। এর মধ্যে মাত্র ৩৩ জন শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন। ৬২ জন শিক্ষার্থী ৫০ শতাংশেরও কম ক্লাসে উপস্থিত ছিল।

উপস্থিতি বাড়াতে কিছু সুপারিশ: স্কুলে শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলে তা অভিভাবককে জানাতে এসএমএস পদ্ধতি চালুর করার সুপারিশ করেছে সিএমপি। পাশাপাশি সুপারিশ করা হয়েছে, নবম, দশম ও একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির মোট ক্লাসের ন্যূনতম ৭০ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত না থাকলে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ না রাখা; যেসব শিক্ষার্থীর উপস্থিতির হার যৌক্তিক কারণে ৭০ শতাংশের কম থাকবে তাদের জন্য শিক্ষা বোর্ডের সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা রাখা; ধারাবাহিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও শ্রেণিকক্ষে ৭০ শতাংশ উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা।

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরতে সিএমপির প্রতিবেদনে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ভারতে কোন শিক্ষার্থী যদি ৭৫ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত না থাকে তাহলে সে বোর্ড ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে না। তবে কারও উপস্থিতি যদি ৭৫ শতাংশের কম হয় তবে আঞ্চলিক বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করলে বোর্ড কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে। কিছু কিছু প্রদেশে স্কুলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থী উপস্থিত না হলে সেই তথ্য তাৎক্ষণিক অভিভাবককে জানিয়ে দেয়। ফলে ক্লাস চলাকালে অন্য কোনো স্থানে সময় কাটানোর সুযোগ পায় না শিক্ষার্থীরা।

আজ থেকে মেট্রো চলাচলের সময় বাড়ছে

0
মেট্রোরেল
মেট্রোরেল

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটনে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) কার্যালয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, বুধবার থেকে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে সর্বশেষ ট্রেন ছাড়বে রাত নয়টায়। আর মতিঝিল স্টেশন থেকে সর্বশেষ ট্রেন ছাড়বে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। তিনি বলেন, বুধবার থেকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের দিন পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচলের সময়সীমা এক ঘণ্টা বাড়বে। বাড়তি সময়ে আরও ১০টি ট্রেন চলাচল করবে। এতে দিনে মেট্রো চলাচলের মোট সংখ্যা হবে ১৯৪ বার। সেই সময় যাত্রী চলাচল করতে পারবেন দিনে ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫২ জন।

বর্তমানে মেট্রোরেল চলাচল করছে সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত। পিক আওয়ারে প্রতি ৮ মিনিট পরপর মেট্রোরেল চলাচল করে। আর বেলা ১১টা থেকে ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অফ পিক আওয়ারে ১২ মিনিট পরপর মেট্রোরেল চলাচল করে।

ডিএমটিসিএল সূত্র বলছে, রোজা শুরুর আগের ১৫ দিন প্রতিদিন গড়ে পৌনে তিন লাখ যাত্রী যাতায়াত করেছে। কিন্তু রোজা শুরুর পর দিনে গড়ে ২ লাখ ৩৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছে। মেট্রোরেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ধারণা, রোজার শেষ অর্ধে যাত্রীর চাপ বাড়বে। এ ছাড়া চলাচলের সময় বাড়ানোর ফলে যাত্রীসংখ্যা আগের জায়গায় চলে যাবে বা এর চেয়েও বেশি হবে। আর ঈদের পর বাড়তি যাত্রী অব্যাহত থাকলে এপ্রিলেই দুই ট্রেনের মধ্যে চলাচলের যে সময় নির্ধারিত আছে, তা কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।