মিষ্টি স্বাদের কিশমিশ ছোট থেকে বড় সকলেরই প্রিয়। খাবারে সাদা চিনি বাদ দিতে অনেকেই কিশমিশও মিশিয়ে নেন। এতে থাকে ফ্রুক্টোজ় এবং গ্লুকোজ থাকেই, এ ছাড়াও মেলে ফাইবার, পটাশিয়াম, আয়রন এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। কিশমিশ হজমে সহায়ক, আয়রনের ঘাটতি দূর করে, একই সঙ্গে শরীরে শক্তি জোগাতেও সাহায্য করে।
উপকারিতার শেষ নেই। কিন্তু কী ভাবে খেলে এর পুষ্টিগুণ ঠিকমতো পাওয়া যাবে? কেউ কিশমিশ জলে ভিজিয়ে খান। তবে দুধে ভিজিয়ে খেলে কি বাড়তি লাভ হবে? পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক বলছেন, ‘‘কিশমিশ দুধে ভেজালে দুধেরও কিছু কিছু পুষ্টিগুণ জুড়বে। তার ফলে একটু হলেও পুষ্টিগুণ বাড়বে।’’
১। কিশমিশ ভেজালে তা নরম হয়ে যায়। ফলে চিবিয়ে খেতে যাঁদের অসুবিধা, তাঁদের জন্য এটি ভাল। কিশমিশ ভেজানো জলের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণ যথেষ্ট। ফ্রি র্যাডিক্যালের হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করে এই পানীয়। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করতেও সাহায্য করে।
২। রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কিশমিশের জল। কারণ, এই পানীয়ের মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম। রক্তে আয়রনের অভাব হলে নিয়মিত কিশমিশ ভেজানো জল খাওয়া যেতে পারে।
৩। অন্ত্র ভাল রাখতে, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে ফাইবার প্রয়োজন। কিশমিশের মধ্যে থাকা ফাইবার সহজপাচ্য হয়ে ওঠে জলে ভিজলে। সেই জল নিয়মিত খেলে পেট ভাল থাকে।
দুধে ভেজালে, দুধ কিশমিশের মিষ্টত্ব এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট কিছুটা হলেও শুষে নেবে।
তবে এর বেশ কিছু উপকারিতাও রয়েছে বলছেন পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক।
দুধ সুষম খাবার বলে বিবেচিত। ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন এ, ডি-সহ নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর। দুধে ভোজানো কিশমিশ কিছুটা হলেও শরীরে আর্দ্রতার জোগান দেয় এবং দ্রুত শক্তি মেলে এতে। সকালে উঠে দুধে ভেজানো কিশমিশ খেলে শরীরে বল মিলবে।
দুধে ভেজানো কিশমিশ থেকে আয়রন এবং ভিটামিন বি১২ পাওয়া যায়। আয়রন রক্তাল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।
ক্যালশিয়াম এবং পটাশিয়াম দুই-ই মিলবে এতে। হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য তা অত্যন্ত ভাল।
এক গ্লাস বা আধ গ্লাস দুধে ৬-৭টি কিশমিশ ভিজিয়ে নিন। কিশমিশ থাকায় চিনি মেশানোর প্রয়োজন পড়বে না। ছোটদের এ ভাবে খাওয়াতে পারেন।
তবে পুষ্টিবিদ সতর্ক করছেন, দুধে থাকা ল্যাক্টোজ় হজমে সমস্যা থাকলে জলে ভিজিয়ে কিশমিশ খাওয়া যেতে পারে। কিংবা উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রাপ্ত দুধও খাওয়া যায়। কিশমিশে যেহেতু শর্করা থাকে, তাই ডায়াবেটিকদের তা পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।