এই দিনে পৃথিবীর উত্তর মেরু সূর্য থেকে সবচেয়ে বেশি দূরের দিকে হেলে থাকে। ফলে উত্তর গোলার্ধে সূর্য আকাশের দক্ষিণ দিকে সবচেয়ে নিচু অবস্থানে দেখা যায় এবং দুপুরেও সূর্যের উচ্চতা থাকে বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে। এর প্রভাবেই দিনের দৈর্ঘ্য কমে গিয়ে রাত সবচেয়ে দীর্ঘ হয়।
জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক শীত নির্ধারণ করা হয় পৃথিবীর সূর্যকে ঘিরে অবস্থান ও অক্ষের ঝোঁকের ওপর ভিত্তি করে। অর্থাৎ, সূর্যের অবস্থান ও পৃথিবীর কক্ষপথের হিসাব অনুযায়ী যে ঋতু গণনা করা হয়, সেটিই জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঋতু। এই হিসেবে উত্তর গোলার্ধে সাধারণত ২১ ডিসেম্বর থেকেই শীতকাল শুরু হয়।
শীতকালীন অয়নান্তকে কেন্দ্র করে বিশ্বের বিভিন্ন সভ্যতায় রয়েছে নানা উৎসব ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। প্রাচীন রোমে এ সময় পালিত হতো ‘স্যাটারনালিয়া’ উৎসব। এক সপ্তাহব্যাপী এই উৎসবে চলত ভোজ, উপহার বিনিময় এবং সামাজিক রীতিনীতিতে দেখা যেত ব্যতিক্রমী চিত্র এমনকি প্রভুরা দাসদের সেবা করতেন।
এদিকে, দক্ষিণ গোলার্ধে এই সময় সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখা যায়। সেখানে ২১ ডিসেম্বর হয় গ্রীষ্মকালীন অয়নান্ত—যেদিন দিন সবচেয়ে বড় এবং রাত সবচেয়ে ছোট।
উত্তর গোলার্ধ বলতে ভূ-মধ্যরেখার উত্তরের অংশকে বোঝায়। এই গোলার্ধে রয়েছে বাংলাদেশসহ প্রায় পুরো এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, আফ্রিকার উত্তরাংশ ও গ্রিনল্যান্ড। অন্যদিকে, ভূ-মধ্যরেখার দক্ষিণে অবস্থিত অঞ্চলগুলো নিয়ে গঠিত দক্ষিণ গোলার্ধে পড়ে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, আর্জেন্টিনা, চিলি, পেরু, ব্রাজিলের দক্ষিণাংশ, ইন্দোনেশিয়ার কিছু অঞ্চল এবং অ্যান্টার্কটিকা। দুই গোলার্ধে ঋতুর ধরন একে অপরের ঠিক বিপরীত।
যদিও জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক হিসেবে শীত শুরু হয় অয়নান্তের দিন, তবে আবহাওয়াবিদরা সাধারণত ১ ডিসেম্বর থেকেই শীতকাল গণনা করেন।
স্বস্তির খবর হলো, ২১ ডিসেম্বরের পর থেকেই সূর্য ধীরে ধীরে আকাশে একটু বেশি উঁচুতে উঠতে শুরু করবে। এর ফলে উত্তর গোলার্ধে দিন বড় হতে থাকবে এবং রাত ধীরে ধীরে ছোট হতে শুরু করবে।


