হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পবিত্র যুগ থেকে আজ পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহ ইসলামের অন্যান্য মৌলিক আমল ও ইবাদতের ন্যায় সদকাতুল ফিতরও নিয়মিত আদায় করে আসছে।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) সদকাতুল ফিতরকে অপরিহার্য করেছেন, অনর্থক অশালীন কথা ও কাজে রোজার যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণের জন্য এবং নিঃস্ব লোকের আহার যোগানোর জন্য।
-সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১৬০৯
হজরত জারির (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, রমজানের রোজা সদকাতুল ফিতর আদায় করার পূর্ব পর্যন্ত আসমান-জমিনের মাঝে ঝুলন্ত থাকে। -আত তারগিব ওয়াত তারহিব: ২/৯৬
সদকাতুল ফিতর আদায়ের পরিমাণ
সদকাতুল ফিতর আদায়ের পরিমাণ সম্পর্কে হাদিসে দু’টি মাপকাঠি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
তা হচ্ছে, (‘সা’) ও (নিসফে সা’)। খেজুর, পনির, জব ও কিশমিশ দ্বারা আদায় করলে এক ‘সা’= ৩২৭০.৬০ গ্রাম (প্রায়), অর্থাৎ ৩ কেজি ২৭০ গ্রামের কিছু বেশি। আর গম দ্বারা আদায় করলে ‘নিসফে সা’= ১৬৩৫.৩১৫ গ্রাম বা ১.৬৩৫৩১৫ কেজি (প্রায়), অর্থাৎ ১ কেজি ৬৩৫ গ্রামের কিছু বেশি প্রযোজ্য হবে। -আওযানে শরইয়্যাহ পৃ. ১৮
বাংলা সের হিসেবে ১ সা’-এর পরিমাণ ৩ সের ৬ ছটাক এবং আধা সা’-এর পরিমাণ ১.৫ সের ৩ ছটাক। -কিতাবুন নাওয়াযেল ৭/২৪৩
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, হরজত রাসূলুল্লাহ (সা.) একজন ঘোষক প্রেরণ করলেন যেন মক্কার পথে পথে সে যেন এ ঘোষণা করে যে, জেনে রেখো! প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, গোলাম-স্বাধীন, ছোট-বড় সকলের ওপর সদকায়ে ফিতর অপরিহার্য। দুই মুদ (আধা সা) গম কিংবা এক সা অন্য খাদ্যবস্তু। -জামে তিরমিজি: ১/৮৫
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রমজানের শেষ দিকে বসরার মিম্বারের ওপর খুতবা দানকালে বলেছেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) সদকাতুল ফিতর গোলাম-স্বাধীন, নারী-পুরুষ ও ছোট-বড় প্রত্যেকের ওপর অপরিহার্য করেছেন এক সা খেজুর বা জব কিংবা আধা সা গম। -সুনানে আবু দাউদ: ১/২২৯
উপরোক্ত খাদ্যবস্তুর পরিবর্তে সেগুলোর মূল্য আদায় করারও অবকাশ রয়েছে। সেক্ষেত্রে উল্লিখিত খাদ্যবস্তুগুলোর মধ্য থেকে কোনো একটিকে মাপকাঠি ধরে তার নির্ধারিত পরিমাণ যথা- ‘সা’ বা ‘নিসফে সা’ এর বাজারমূল্য আদায় করলেও সদকাতুল ফিতর আদায় হয়ে যাবে। -রদ্দুল মুহতার: ২/৩৬৬