চলতি মাসে পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে নিউমোনিয়ার প্রাদুর্ভাবে ২৩৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ধোঁয়াশ, তীব্র শীত এবং শিশুদের টিকার কম হার এর পেছনে দায়ী।
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ঠাণ্ডা আবহাওয়া কমে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
নিউমোনিয়া হলো ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাক সৃষ্ট একটি সংক্রমণ। ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী এবং দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য রোগটি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ। পাঞ্জাবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ঠাণ্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে প্রতি বছর দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে প্রায় ৫৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়।
পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক জাভেদ আকরাম বলেছেন, ‘পাঞ্জাব বা পাকিস্তানে এটি কোনো নতুন ঘটনা নয়। তবে দীর্ঘ সময় ধরে ধোঁয়াশা ও হিমায়িত আবহাওয়ার কারণে প্রদেশে মৃত্যুর হার আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। ঠাণ্ডা আবহাওয়ার ছাড়াও নিউমোনিয়া এবং শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ মায়ের দুধ খাওয়ানোর এবং টিকাদানের কম হার’।
মন্ত্রীর মতে, প্রদেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৮ হাজার মানুষ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যুর হার ১.৩ শতাংশ। সংক্রমণ এড়াতে তিনি শীত মৌসুমে শিশু ও বয়স্কদের জন্য ঘর গরম রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘মায়ের দুধ খাওয়ানোর সুবিধা এবং সঠিক টিকাদান সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে আমরা গনমাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছি’।
জাভেদ আকরাম আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী সপ্তাহগুলোতে ঠাণ্ডা আবহাওয়া কমলে নিউমোনিয়া আক্রান্তের সংখ্যাও কমবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিউমোনিয়া একটি মৌসুমী রোগ, যা টিকা এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
ইসলামাবাদের পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের (পিআইএমএস) শিশু হাসপাতালের প্রধান অধ্যাপক মকবুল হুসেন বলেছেন, ‘নিউমোনিয়া একটি শীতকালীন রোগ। কারণ এই মৌসুমে ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়। তাই শিশু এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা আক্রান্ত হন। নিউমোনিয়ায় আক্রান্তদের অধিকাংশই অপুষ্টিতে ভুগছে, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম’। এই ধরনের রোগের বিরুদ্ধে শিশুদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে তাদের বুকের দুধ খাওয়াতে মায়েদের প্রতি আহ্বান জানান এ বিশেষজ্ঞ।
সূত্র: আরব নিউজ