ঘটনাটি ইউরোপের দেশ জর্জিয়ার। জন্মের পর দুই বোনের বিচ্ছিন্ন হওয়া ও নাটকীয় পুনর্মিলনের এই গল্প প্রকাশ করেছে বিবিসি।
পাশাপাশি বিবিসির এই প্রতিবেদনে জর্জিয়ার একটি গুরুতর সমস্যার কথাও উঠে এসেছে। সেটি হচ্ছে, দেশটির হাসপাতাল থেকে উদ্বেগজনক হারে শিশু চুরি ও বিক্রি। দশকের পর দশক ধরে জর্জিয়ায় এই সমস্যা চলছে। কিন্তু সমস্যাটির কোনো সুরাহা হচ্ছে না।
অ্যামি ও অ্যানোর পরস্পরকে খুঁজে পাওয়ার এই গল্পের শুরু তখন, যখন তাঁদের বয়স ১২ বছর।
অ্যামি বাড়িতে বসে তাঁর প্রিয় টিভি অনুষ্ঠান ‘জর্জিয়া’স গট ট্যালেন্ট’ দেখছিলেন। প্রতিভা খোঁজের এই অনুষ্ঠানে একটি মেয়েকে নাচতে দেখে অ্যামি রীতিমতো চমকে যান। কারণ, মেয়েটি দেখতে হুবহু তাঁর মতোই ছিল। তবে অ্যামি তখনো জানতেন না, এই মেয়েটি তাঁর হারিয়ে যাওয়া যমজ বোন।
এই ঘটনার সাত বছর পর ২০২১ সালের নভেম্বরে অ্যামি টিকটকে তাঁর একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। নীল রঙের চুলের অ্যামির ভিডিওটি ভাইরাল হয়।
ভিডিওটি অ্যানোকে পাঠান তাঁর এক বন্ধু। অ্যানো ভিডিওটি দেখেন। অ্যানোর মনে হয়, ভিডিওতে থাকা মেয়েটি তো দেখতে একদম তাঁরই মতো।
ভিডিওর মেয়েটিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন অ্যানো। কিন্তু তাঁকে খুঁজে পেতে তিনি ব্যর্থ হন। পরে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ভিডিওটি শেয়ার করেন অ্যানো। অ্যামিকে চেনেন—এমন কেউ এই বার্তা দেখেন। তিনি দুজনকে ফেসবুকে যুক্ত করে দেন।
অ্যামির মনে পড়ে যায়, এই মেয়েটিকেই (অ্যানো) তো তিনি বছর সাতেক আগে ‘জর্জিয়া’স গট ট্যালেন্ট’ অনুষ্ঠানে দেখেছিলেন। তিনিও তো এই মেয়েটিকে খুঁজছিলেন।
অ্যামি ও অ্যানো পরস্পরের সঙ্গে যত কথা বলছিলেন, তত তাঁদের মধ্যকার নানা মিল বের হচ্ছিল। এমনকি দুজনের একই জিনগত রোগ থাকার তথ্যও সামনে আসে।
জর্জিয়ায় পরস্পর থেকে প্রায় দুই শ মাইল দূরে অবস্থান করা অ্যামি ও অ্যানো একপর্যায়ে দুই বছর আগে রাজধানী তিবলিশের রুসতাভেলি সেতুতে দেখা করেন। পরে তাঁরা নিজ নিজ পরিবারের মাধ্যমে আসল সত্য জানতে পারেন।
২০০২ সালে জন্ম হওয়া অ্যামি-অ্যানোর মা আজা শোনি। জন্ম-সংক্রান্ত অজ্ঞাত এক জটিলতায় তিনি কোমায় চলে গিয়েছিলেন। তখন তাঁর স্বামী গোচা গখরিয়া অ্যানো ও অ্যামিকে আলাদা দুটি পরিবারের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এর এতদিন পর এক হলো দুইবোন।