ইসরায়েলের হেফাজতে আটক অবস্থায় নিহত আরও ৩০ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ গাজা উপত্যকায় ফেরত দেওয়া হয়েছে। ফেরত দেওয়া মরদেহগুলোর মধ্যে অনেকের দেহে নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে
জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর আল জাজিরার।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের মৃতদেহগুলো ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর আগে ফেরত দেওয়া মৃতদেহগুলোতেও চোখ বাঁধা এবং হাতকড়া পরানোর মতো আঘাতের চিহ্ন দেখা গিয়েছিল বলে চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে। অনেক মৃতদেহ ছিল বিকৃত বা পোড়া, আবার কারো কারো শরীর থেকে অঙ্গ বা দাঁত নিখোঁজ ছিল। এই মৃতদেহগুলো যাচাই-বাছাই করে শনাক্ত করার কাজ চলছে। সর্বশেষ এই মৃতদেহগুলো হস্তান্তরের পর মোট ২২৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দির দেহাবশেষ ফেরত এলো।
এই মৃতদেহগুলো ফিলিস্তিনি বন্দি ও ইসরায়েলি জিম্মি বিনিময়ের চুক্তির অংশ হিসেবে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় হামাস ২০ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে এবং ইসরায়েল প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।
এদিকে, এই নড়বড়ে যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ইসরায়েলি বাহিনী গাজা জুড়ে বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে। শুক্রবারের হামলায় কমপক্ষে তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ওয়ফা সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, গাজা সিটির শুজাইয়া এলাকায় ইসরায়েলি গুলিতে একজন নিহত ও তার ভাই আহত হয়েছেন। এছাড়া জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি শেলিংয়ে আরও একজন নিহত হন এবং পূর্বের হামলায় আহত তৃতীয় একজন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে, ইসরায়েল জিম্মি হিসেবে থাকা তিনজনের অজ্ঞাত মৃতদেহ ফেরত পেয়েছে বলে রেড ক্রস জানিয়েছে। এই নিয়ে হামাস এখন পর্যন্ত ১৭ জন ইসরায়েলি জিম্মির দেহাবশেষ ফেরত দিয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, হামাস মোট ২৮ জন জিম্মির দেহাবশেষ ফেরত দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মনে হলেও, ইসরায়েল এখনো গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিংগুলো খুলতে এবং মানবিক সহায়তার ট্রাকগুলিকে উপত্যকায় প্রবেশে সম্পূর্ণ অনুমতি দিতে রাজি হয়নি। জাতিসংঘের গুদাম থেকে সাহায্য পেতে ফিলিস্তিনিদের ‘প্রকৃতই সংগ্রাম করতে হচ্ছে’ বলে জানা গেছে।
লন্ডনের কিংস কলেজের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিভাগের প্রভাষক রব গেইস্ট পিনফোল্ড মন্তব্য করেছেন, জিম্মি বিনিময়ের চুক্তি হওয়ার পরেও এমনটা ঘটবে বলে ধারণা করা হয়েছিল।
অন্য একটি খবরে জানা গেছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর শীর্ষ আইনজীবী ইফাত তোমার-ইয়েরুশালমিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত বছর সাদেই তাইমান আটক কেন্দ্রে ফিলিস্তিনি বন্দির ওপর ইসরায়েলি সেনাদের যৌন হয়রানির একটি ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।


