আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুক
আদালতে হাজির করা হয়। এদিন হাজিরা দেওয়ার পর ইনুকে আদালত থেকে কারাগারে নিতে প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। এ সময় ইনুর দাঁড়িয়ে থাকা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাসানুল হক ইনু প্রিজনভ্যানে উঠে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য তাকে বলেন, ‘দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না।’
জবাবে ইনু বলেন, ‘আমি দাঁড়িয়ে থাকব, কী করবেন আপনি? কোন আইনে আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারব না? আপনি অর্ডার দেখান।’
এ নিয়ে দুজনের মধ্যে আরও কিছু সময় বাক্য বিনিময় হয়। পরে ইনু বলেন, ‘আপনি সিনক্রিয়েট করছেন কেন? অর্ডার নিয়ে আসেন।’
এরপর ওই পুলিশ সদস্য বিব্রত হয়ে প্রিজন ভ্যানের পেছনের অংশে গিয়ে বসে পড়েন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হাসানুল হক ইনুকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। তবে মামলার শুনানির জন্য তাকে এজলাসে তোলা হয়নি।
হাজিরা শেষে তাকে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে হাজতখানা থেকে বের করে প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। প্রিজনভ্যান আদালত প্রাঙ্গণে থাকা পর্যন্ত ইনুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ভ্যানের গ্রিলের ফাঁক দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায় তাকে। পরে সেই পুলিশ সদস্য আবার ইনুর পাশে গিয়ে দাঁড়ান।
এদিন জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের এ মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২ ফেব্রুয়ারি নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন।
নথি থেকে জানা গেছে, সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে অসাধু উপায়ে চার কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০৭ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া তার চারটি ব্যাংক হিসাবে ১১ কোটি ৮৮ লাখ ১৬ হাজার ১৯ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগও আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, তার স্ত্রী আফরোজা হকের বিরুদ্ধে এক কোটি ৪৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদক জানায়, হাসানুল হক ইনুর উপার্জিত অর্থ দিয়ে তার স্ত্রী সম্পদশালী হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।


