বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টােবর) বিকেলে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন মিলনায়তনে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’-এর আয়োজনে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে ‘জলবায়ু অভিযোজনে গ্রামীণ নারী’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘মাইক্রো লেভেলে পুষ্টির অধিকাংশ অবদানই গ্রামীণ নারীদের। তারা যদি এসব প্রাণী পালন না করতেন, বাংলাদেশ কখনো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারত না। তাই দেশের উন্নয়নে তাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।’
ফরিদা আখতার আরও বলেন, ‘নারীরা ঠিকই আছেন, কিন্তু তাদের সামনে আনা হয় না। এমন নয় যে তারা নেই-বরং তাদের অবদানকে দৃশ্যমান করার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা যদি সামান্য উৎসাহ ও সহায়তা দিতে পারি, তবে তাদের ভূমিকা আরও দৃশ্যমান হয়ে উঠবে।’
জেলেদের ন্যায্য মজুরি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দাদন প্রক্রিয়ার কারণে আমাদের জেলেরা ন্যায্য মজুরি পান না। এটি একটি গুরুতর সমস্যা। দাদন প্রথার অবসান জরুরি, এজন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’ তিনি জেলে পরিবারের নারীদের স্বীকৃতি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন।
বাল্যবিবাহ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘বাল্যবিবাহ রোধ না করতে পারলে গ্রামীণ নারী শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারবেন না। এজন্য জাতীয় পরিকল্পনা থাকা উচিত। নারীদের সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে হবে-এটাই মূল কথা।’
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মো. হজরত আলী, সিভিক এনগেজমেন্ট ফান্ডের উপদলনেতা ক্যাথারিনা কোয়েনিগ, সুইডেন দূতাবাসের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন ও লিঙ্গসমতার সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার রেহানা খান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রতিনিধি দলের ‘রিসাইলেন্স লাইভলীহুড প্রোগ্রাম’-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মেহের নিগার ভূঁইয়া।
স্বাগত বক্তব্য দেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির প্রকল্প কর্মকর্তা (ক্যাম্পেইন ও যোগাযোগ) তাজওয়ার মাহমিদ।
বক্তারা বলেন, কৃষি উৎপাদন ও জলবায়ু সহনশীলতায় নারীর অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা সমাজ ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে প্রায়ই অদৃশ্য থেকে যায়। তারা নারী-সংবেদনশীল কৃষি ও জলবায়ু নীতি প্রণয়ন, ভূমি, অর্থ ও প্রযুক্তিতে সমান প্রবেশাধিকার এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
সেমিনারে বিভিন্ন নীতিনির্ধারক, উন্নয়ন সহযোগী এবং দেশের বিভিন্ন এলাকার নারী কৃষকরা অংশগ্রহণ করেন।

 
                                    