আধুনিকতার ছোঁয়া ও কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে বাঙালির ঐতিহ্যের প্রতীক — কাঠের লাঙল ও বাঁশের জোয়াল।
 হাজার বছরের ঐতিহ্যের অংশ এই কাঠের লাঙল ও বাঁশের জোয়াল ছিল কৃষকের জীবনের অবিচ্ছেদ্য উপকরণ। লোহার ফালযুক্ত কাঠের লাঙল আর বাঁশের তৈরি জোয়ালে বলদ জুড়ে হতো হালচাষ। এক সময় গ্রামের সকাল মানেই ছিল মাঠে গরুর গরগর শব্দ, হালচাষের দৃশ্য। এখন সেই দৃশ্য প্রায় বিলুপ্ত।
হাজার বছরের ঐতিহ্যের অংশ এই কাঠের লাঙল ও বাঁশের জোয়াল ছিল কৃষকের জীবনের অবিচ্ছেদ্য উপকরণ। লোহার ফালযুক্ত কাঠের লাঙল আর বাঁশের তৈরি জোয়ালে বলদ জুড়ে হতো হালচাষ। এক সময় গ্রামের সকাল মানেই ছিল মাঠে গরুর গরগর শব্দ, হালচাষের দৃশ্য। এখন সেই দৃশ্য প্রায় বিলুপ্ত।
বর্তমানে চাষাবাদে আধুনিক যন্ত্রপাতি — ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার — দখল করে নিয়েছে সেই জায়গা। আগে যেখানে ভোরবেলা গরু, লাঙল ও মই নিয়ে মাঠে বেরিয়ে পড়তেন কৃষক, এখন সেখানে শোনা যায় ট্রাক্টরের গর্জন।
গরু দিয়ে হালচাষ করা গলাচিপা থানার উলানিয়া এলাকার কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন,ছোটবেলায় হালচাষের কাজ করতাম। আমাদের বাড়িতে ছিল দুই-তিন জোড়া বলদ গরু। কাঠ ও লোহার লাঙল, জোয়াল, মই, আর বাঁশের লাঠি নিয়ে মাঠে যেতাম। গরু দিয়ে চাষ করলে জমিতে ঘাস কম হতো, জমি উর্বর থাকত। গরুর গোবর থেকে হতো জৈব সার, ফলে ফলনও ভালো মিলত। এখন এসব কেবলই স্মৃতি।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, আধুনিক প্রযুক্তির প্রভাবে লাঙল-জোয়াল এখন বিলুপ্তপ্রায়। কাঠের লাঙল দিয়ে জমি চাষ করতে সময় ও শ্রম বেশি লাগত, কিন্তু আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে অল্প সময়ে অনেক জমি চাষ করা সম্ভব। তাই কৃষকরা ঐতিহ্যবাহী হালচাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
একজন স্থানীয় কৃষক বলেন,
“এটি ছিল আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্যের প্রতীক। হয়তো ভবিষ্যতে কাঠের লাঙল, জোয়াল, মই কিংবা বলদ — সবই কেবল ইতিহাসের পাতায় বা গল্পে স্থান পাবে।”
আগে মাঠ থেকে ধান কেটে গরু দিয়ে মাড়াই করা হতো। এখন কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার যন্ত্রের মাধ্যমে একসঙ্গে ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও খড় আলাদা করার কাজ সম্পন্ন হয়।
এভাবেই কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির বিস্তারে গ্রামীণ ঐতিহ্যের প্রতীক কাঠের লাঙল ও বলদচালিত হালচাষ হারিয়ে যাচ্ছে কালের স্রোতে।

 
                                    