লিভার আমাদের শরীরের খুব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কিন্তু অনেকেই বুঝতে পারেন না লিভারে সমস্যা শুরু হলে শরীর আগে থেকেই কিছু সংকেত দেয়। রক্ত পরীক্ষা অবশ্যই সবচেয়ে নির্ভুল উপায়, তবে কিছু বাহ্যিক লক্ষণ দেখে লিভারের অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

ফ্যাটি লিভার আর ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স- এই দুটো সমস্যা একসঙ্গে দেখা দিলে শরীরের ক্ষতি অনেক বেশি হয়। লিভারে যত বেশি চর্বি জমে, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স তত বেড়ে যায়। আবার ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়লে লিভারে আরও চর্বি জমে। এই চক্র চলতে থাকলে লিভার গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
নিউ দিল্লির দ্বারকার অভিজ্ঞ ডায়াবেটোলজিস্ট ডা. ব্রীজমোহন অরোরা (২৪ বছরের অভিজ্ঞতা) জানিয়েছেন, রক্ত পরীক্ষা না করলেও শরীরের কয়েকটি সহজ লক্ষণ দেখে ফ্যাটি লিভার বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
রক্ত পরীক্ষা ছাড়াই যে লক্ষণগুলো লিভারের সমস্যা বুঝতে সাহায্য করতে পারে:
শক্ত ও বেরিয়ে থাকা পেট
যদি পেট খুব বেশি ফুলে থাকে এবং শক্ত মনে হয়, তবে সেটি বিপদ সংকেত হতে পারে। এটি ভিসারাল ফ্যাট, যা অঙ্গের ভেতরে জমে লিভারে চর্বির পরিমাণ বাড়ায়।
ঘাড় বা বগলে স্কিন ট্যাগ
ঘাড় বা বগলের কাছে ছোট ছোট তিলের মতো স্কিন ট্যাগ দেখা দিলে এটি ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।
পায়ে লাল বা বেগুনি দাগ
বিশেষ করে গোড়ালির কাছে যদি লাল বা বেগুনি রেখা দেখা যায়, তা-ও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের ইঙ্গিত দিতে পারে।
মুখ ফোলা লাগা
মুখ যদি বেশি ফুলে বা পাফি দেখায় এবং চোয়ালের হাড় স্পষ্ট না থাকে, তা লিভারে চর্বি জমার লক্ষণ হতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপ
রক্তচাপ যদি ১৪০-এর উপরে থাকে (যেমন ১৪৫–১৫০), সেটিও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের একটি সাধারণ লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
এই লক্ষণগুলো কেন গুরুত্বপূর্ণ?
ডা. অরোরা বলেন, অনেক সময় রোগীরা রক্ত পরীক্ষা করাতে চান না। এমন ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের জন্য এই বাহ্যিক লক্ষণগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ ক্লু হিসেবে কাজ করে। এগুলো দেখে চিকিৎসক প্রাথমিক ধারণা নিতে পারেন রোগীর লিভার বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের অবস্থা সম্পর্কে।
যত তাড়াতাড়ি ফ্যাটি লিভার বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ধরা পড়বে, তত দ্রুত জীবনযাপনের পরিবর্তন করে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যদিও রক্ত পরীক্ষা সবচেয়ে নির্ভুল পদ্ধতি, তারপরও এই লক্ষণগুলো প্রাথমিক সতর্কতা হিসেবে কাজে লাগতে পারে।


