বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২৫, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২৫, ২০২৫
14 C
Dhaka
Homeস্বাস্থ্যযে কারণে দরকার হয় কিডনি ডায়ালাইসিসের

যে কারণে দরকার হয় কিডনি ডায়ালাইসিসের

আপডেট: ডিসেম্বর ২৪, ২০২৫ ১:৩৯
প্রকাশ: ডিসেম্বর ২৩, ২০২৫ ১২:০৫

কিডনি বিকল হওয়ার সর্বশেষ ধাপ বা এন্ড স্টেজ রেনাল ডিজিজ আক্রান্ত রোগীদের জন্য ডায়ালাইসিস একটিজীবন রক্ষাকারী চিকিৎসাপদ্ধতি। যখন একজন মানুষের কিডনি তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতার ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ হারিয়ে ফেলে, তখন শরীর থেকে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত তরল বের করে দেওয়ার জন্য কৃত্রিম এই উপায়ের প্রয়োজন হয়।

মূলত রক্ত থেকে বিষাক্ত ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন এবং বাড়তি লবণ সরিয়ে রক্ত পরিষ্কার রাখাই এর মূল কাজ। কিডনি যখন এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তখন রক্তে বিষাক্ত পদার্থ জমে শরীর ফুলে যাওয়া, প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব এবং দীর্ঘমেয়াদী দুর্বলতার মতো মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়।

অনেক ক্ষেত্রে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া বা রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে হৃৎস্পন্দনে সমস্যা তৈরি হলে ডায়ালাইসিস ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকে না।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে ডায়ালাইসিস প্রধানত দুইভাবে সম্পন্ন করা হয়। হেমোডায়ালাইসিস এবং পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস। হেমোডায়ালাইসিসে একটি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে শরীরের বাইরের রক্ত পরিষ্কার করা হয়, যার জন্য সপ্তাহে অন্তত ২-৩ বার হাসপাতালে যেতে হয় এবং প্রতিবার প্রায় ৪ ঘণ্টা সময়ের প্রয়োজন হয়।

অন্যদিকে, পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস পেটের ভেতরের প্রাকৃতিক পর্দা ব্যবহার করে করা হয়, যা রোগী চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শে নিজ বাসাতেই সম্পন্ন করতে পারেন। তবে ডায়ালাইসিস শুরু করার আগে রোগীর শারীরিক প্রস্তুতির পাশাপাশি মানসিক ও পারিবারিক প্রস্তুতিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে হাতে ‘এভি ফিস্টুলা’ বা ক্যাথেটার তৈরির ছোট অস্ত্রোপচার এবং দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার মানসিক ধকল সামলাতে পরিবারের সক্রিয় সমর্থন প্রয়োজন।

ডায়ালাইসিস একটি চলমান ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা পদ্ধতি হওয়ায় অর্থনৈতিক পরিকল্পনার বিষয়টিও মাথায় রাখা জরুরি। দীর্ঘ মেয়াদে সুস্থ থাকতে ডায়ালাইসিসের পাশাপাশি নিয়মিত ওষুধ সেবন, পরিমিত ঘুম এবং হালকা ব্যায়ামের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। শুরুতে কিছুটা দুর্বলতা বা বমি ভাব থাকলেও সময়ের সাথে শরীর এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেয়।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, সঠিক সময়ে ডায়ালাইসিস শুরু করলে এবং খাদ্যতালিকায় পটাশিয়াম ও পানির ভারসাম্য বজায় রাখলে একজন কিডনি রোগী দীর্ঘ সময় স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। তাই আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়াই জীবন রক্ষার প্রধান উপায়।

 

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় খবর