শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
19 C
Dhaka
Homeবাংলাদেশঈদের উৎসব না কাটতেই শুরু হচ্ছে বাংলা নববর্ষের উৎসব

ঈদের উৎসব না কাটতেই শুরু হচ্ছে বাংলা নববর্ষের উৎসব

প্রকাশ: এপ্রিল ১১, ২০২৪ ১১:৫১

ঈদের দুই দিন পরই বাংলা নববর্ষ। এই দুই উৎসব ঘিরে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বাজারগুলোয় ইলিশের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু বর্তমানে ইলিশ ধরা পড়ছে কম; বাজারে এর সরবরাহ কমেছে। ফলে খুচরা ও পাইকারি—দুই বাজারেই ইলিশের দাম বেড়েছে।

মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার দুপুরে বরিশাল, বরগুনার বিহসসেভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে এক কেজি ও এর ওপরের ওজনের প্রতিটি ইলিশ তিন থেকে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকা হচ্ছে। আর ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১ হাজার ২০০ টাকা। কয়েক দিন আগে এর দাম ছিল ৮০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা।

খুচরা বাজারের পাশাপাশি পাইকারি বাজারেও ইলিশের দাম বেড়েছে। সরবরাহ সংকটে ইলিশের মণ ছুঁয়েছে লাখ টাকা। ছোট আকারের ইলিশের মণও ছাড়িয়েছে অর্ধ লাখ টাকা। মঙ্গলবার বরিশাল নগরের ইলিশ মোকাম পোর্ট ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে বরিশাল সদর মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি জহির সিকদার বলেন, মেঘনা নদীর অভয়াশ্রমে দুই মাস ধরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলছে। এ ছাড়া অন্য সব নদ-নদীতেও বর্তমানে ইলিশসহ অন্য মাছের বেশ আকাল চলছে। বর্তমানে প্রতিদিন পোর্ট রোড মোকামে এক থেকে দেড় শ মণ ইলিশ মাছ আসছে; যা স্বাভাবিক সময়ের ছয় ভাগের এক ভাগ। ঈদ ও পয়লা বৈশাখ ঘিরে মাছের চাহিদা অনেক বেড়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় সরবরাহ খুবই কম। এতে দাম অনেক বাড়তি।

পোর্ট রোড মোকামে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছ প্রতি মণ লাখ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ ৯৬ হাজার, এক কেজি ওজনের ৮৫ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজির নিচে এলসি হিসেবে পরিচিত ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ হাজার টাকায়। ৬০০ গ্রাম কম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ হাজার টাকা।

বরিশালের নদীর মাছের স্বাদ বেশি হওয়ায় দাম বেশি হয় বলে জানান বরিশাল পোর্ট রোডের আরেক পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী রফিক মোল্লা। তিনি বলেন, মাছ কিনতে ঢাকা, চাঁদপুর, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা বাজারে রয়েছেন। ঈদ ও পয়লা বৈশাখ সামনে রেখে তাঁরা মাছ কিনতে এসেছেন। এ ছাড়া স্থানীয়ভাবেও চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সেই পরিমাণ মাছ মোকামে নেই; তাই দাম বাড়ছে।

পোর্ট রোড মোকামের আল্লাহর দান ইলিশ ঘরের মো. ইমন বলেন, গত তিন দিনে মাছের দাম মণপ্রতি ১০-২০ হাজার টাকা বেড়েছে। সামনে দাম আরও বাড়বে।
বরিশালের বাংলা বাজার ও চৌমাথা বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে ইলিশের সরবরাহ অনেক কম। রাকিবুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা মঙ্গলবার রাতে বলেন, চৌমাথা বাজারে এক কেজি ওজনের একটি ইলিশের দাম তিন হাজার টাকা হাঁকা হয়েছে। দুই হাজার টাকাতেও মাছটি কিনতে পারেননি।

বুধবার দুপুরে বরগুনা শহরের মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায় ক্রেতার ভিড়। মাছের দামও চড়া। মিলন নামে এক মাছ ব্যবসায়ী এক জোড়া ইলিশের দাম হাঁকেন সাড়ে চার হাজার টাকা। দুটি ইলিশের ওজন এক কেজির নিচে।

জি এম ফারুক নামের একজন ক্রেতা বললেন, ‘বাজারে এসে ইলিশ মাছের দাম শুনে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার অবস্থা। শুধু ইলিশ নয়, সব মাছের দামই প্রায় দ্বিগুণ। আমাদের তো এত দাম দিয়ে মাছ কেনার সামর্থ্য নেই।’

বরিশাল জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ‘বর্তমানে নদ-নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে কম। কিন্তু বাজারে ক্রেতাদের কাছে ইলিশের চাহিদা বেশি। চাহিদা যত বাড়বে, দাম তত বাড়বে। ক্রেতারাই দাম বাড়িয়ে দেন। এতে আমাদের কিছু করণীয় নেই।’

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় খবর