আজ সোমবার বিকেল চারটায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের মুখপাত্র নিউরোসার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন (রেসিডেন্ট) আবদুল আহাদ এ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত আউটডোরে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। পাশাপাশি সব হাসপাতালে সকাল ৮টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
গত শনিবার রাতে দুর্ঘটনায় আহত হয়ে আসা এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে কর্মরত দুজন চিকিৎসকের ওপর হামলা হয়। হাসপাতালের ভেতরে ভাঙচুরও করা হয়। এই হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এবং কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ চার দাবিতে গতকাল সকালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রাখেন চিকিৎসকেরা। দুপুরে তাঁরা দেশব্যাপী সব হাসপাতালে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি দেন। পরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে রাত আটটার পর জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু হয়।
সার্জন আবদুল আহাদ আজ লিখিত বক্তব্যে বলেন, গতকাল রোববার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের সঙ্গে বৈঠক হয়। স্বাস্থ্য উপদেষ্টার দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যার অংশ হিসেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে একজনকে এবং রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হামলাকারীদের মধ্য থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা ডেন্টাল কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। তাই রোববার থেকেই বিভিন্ন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সেবা চালু করা হয়েছে।
আবদুল আহাদ বলেন, চিকিৎসকদের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে এখনো যাঁরা গ্রেপ্তার হননি, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসক ও রোগীদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন এবং হাসপাতালে স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
আজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ চালু থাকলেও বহির্বিভাগের সেবা বন্ধ ছিল। হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান দুপুরে জরুরি বিভাগের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, চিকিৎসকদের দাবি অনুযায়ী হাসপাতালে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় হওয়া মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের দ্রুত ধরার চেষ্টা চলছে। আর স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য পুলিশের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিটি এত দ্রুত পূরণ করা সম্ভব নয়।