আজ রোববার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম বানু বিবি। তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর স্বামীর নাম মরহুম আবদুল গফুর সরদার।
স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, প্রতিবছর হাজী দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে জাকাত দেওয়া হয়। আজ সকালে জাকাতের শাড়ি, লুঙ্গি ও টাকা দেওয়ার কথা ছিল। জাকাত দেওয়ার জন্য প্যান্ডেল তৈরি করা হয়। জাকাত নিতে ভোর থেকেই হাজী দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে মানুষ উপস্থিত হন। সকাল সাতটার দিকে কাপড় দেওয়া শুরু করা হয়। প্রথমে সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে জাকাত নিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। হুড়োহুড়ির মধ্যে কাপড় নিতে আসার সময় ওই নারী মাটিতে পড়ে যান। পদদলিত হয়ে তিনি গুরুতর আহত হন। তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক উম্মে জোহরা বলেন, সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ওই নারীকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল। তবে হাসপাতালের আনার আগেই তিনি মারা যান।
নিহত নারীর এক প্রতিবেশী শরীফুল ইসলাম বলেন, বছরখানেক আগে ওই নারীর স্বামী মারা যান। তাঁর ছেলেরাও সচ্ছল নন। গতকাল অনেক সকালে তিনি বাড়ি থেকে বের হন জাকাত আনতে।
জাকাত দেওয়ার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের একজন মিলন খান। তিনি বলেন, ভোর থেকেই বিভিন্ন বয়সের মানুষ জাকাত নিতে উপস্থিত হন। সকাল সাতটা থেকে জাকাত দেওয়া শুরু হয়। শুরুতে সবাই লাইন ধরে নিচ্ছিলেন। জাকাত দেওয়ার কিছু সময় পর লাইনের পেছন দিক থেকে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এতে সামনে প্যান্ডেলের বাঁশ ভেঙে যায়। হুড়োহুড়ির মধ্যে পড়ে ওই নারী গুরুতর আহত হন।
গৃহকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, সকাল সোয়া সাতটা থেকে জাকাতের লুঙ্গি, শাড়ি ও টাকা বিতরণ শুরু হয়। বিতরণ কাজকর্ম শেষ হয় বেলা ১১টায়। শৃঙ্খলার জন্য তিনি রাজবাড়ী সদর থানায় সহায়তা চেয়েছিলেন। তবে জাকাত দেওয়ার সময় পুলিশ ছিল না।
রাজবাড়ীর সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘রাতে আমাদের কাছে পুলিশ চাওয়া হয়ে ছিল। জাকাত বিতরণের ক্ষেত্রে তো পুলিশের ভূমিকা থাকে না। পুলিশের মোবাইল টিম সেখানে ছিল। তবে পুলিশ যাওয়ার আগেই এ দুর্ঘটনা ঘটে।