শুক্রবার, মার্চ ২১, ২০২৫
শুক্রবার, মার্চ ২১, ২০২৫
24 C
Dhaka
Homeঅর্থনীতি ও বাণিজ্যঋণ চুক্তিতে আটকে আছে অয়েল ট্যাংকার ও বাল্ক জাহাজ কেনার প্রক্রিয়া

ঋণ চুক্তিতে আটকে আছে অয়েল ট্যাংকার ও বাল্ক জাহাজ কেনার প্রক্রিয়া

প্রকাশ: অক্টোবর ২৩, ২০২৪ ১১:২৪

বাণিজ্যিক চুক্তি হলেও ঋণ চুক্তিতে আটকে আছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জন্য চীন থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকায় দুটি অয়েল ট্যাংকার এবং দুটি বাল্ক জাহাজ কেনার প্রক্রিয়া।

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তোলনকারী দেশ থেকে সরাসরি জ্বালানি তেল বাংলাদেশে পরিবহনের জন্য কেনা হচ্ছিলো দুই লাখ মেট্রিক টন ক্রুড অয়েল বহনকারী দুটি অয়েল ট্যাংকার। আর বাল্ক জাহাজ দুটি ভাড়া দিয়ে বছরে বাড়তি ৫শ কোটি টাকা আয়ের পরিকল্পনা বাংলাদেশে শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি)।

বছরে চাহিদার ১২ থেকে ১৪ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল সৌদি আরবের পাশাপাশি আরব আমিরাত থেকে আমদানি করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। মূলত বিদেশি মাদার ভ্যাসেল হিসেবে পরিচিত ক্রুড অয়েল বহনকারী বিদেশি মালিকানাধীন বড় অয়েল ট্যাংকারগুলো বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়ায় অবস্থান নেয়। সেখান থেকে বিএসসির জাহাজগুলো লাইটারেজে করে সেই ক্রুড অয়েল নিয়ে আসে পতেঙ্গা উপকূলে, যা পৌঁছে যায় রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার ডিপোতে।

এখানে তেল খালাস শেষে আবার অয়েল ট্যাংকারগুলো ফিরে যায় পৃথিবীর বিভিন্ন বন্দরে। শুধু লাইটারেজে তেল পরিবহন নয়, একেবারে উত্তোলনকারী দেশ থেকে মাদার ভ্যাসেলের মাধ্যমে বিপিসির ক্রুড অয়েল আনার পরিকল্পনা দীর্ঘদিনের।

এর মধ্যে ২০২৩ সালে চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট করপোরেশনের সঙ্গে বিপিসি একটি বাণিজ্যিক চুক্তিও সম্পন্ন করে। প্রতিটি ৭৮০ কোটি হিসাবে দুটি অয়েল ট্যাংকারের দর ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। এছাড়া বাল্ক জাহাজের প্রতিটির দর ৪৬২ কোটি টাকা হিসাবে ৯২৪ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল।

তবে ঋণ চুক্তিতে আটকে গেছে বিএসসির জন্য চীন থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকায় দুটি অয়েল ট্যাংকার এবং দুটি বাল্ক জাহাজ কেনার প্রক্রিয়া। বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মাহমুদুল মালেক বলেন, ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হলে ৩০ মাসের মধ্যে জাহাজগুলো হাতে পাওয়ার কথা রয়েছে। জাহাজগুলো ডেলিভারি পেলে বিপিসি ক্রুড অয়েল সরাসরি বিদেশ থেকে আমদানি করতে পারবে।

এ চারটি নৌযানের মাধ্যমে বছরে ৫শ কোটি টাকার বেশি আয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে রেখেছে বিএসসি। বিশেষ করে বিদেশি জাহাজে করে ক্রুড অয়েল পরিবহনে পুরো জাহাজ ভাড়া ডলারেই পরিশোধ করতে হয়। বিএসসি জাহাজের মালিকানায় আসলে সাশ্রয় হবে ডলারের। তখন জাহাজ ভাড়া পরিশোধ হবে দেশীয় মুদ্রা অর্থাৎ টাকায়।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, বিএসসি ও অন্যান্য জাহাজ মালিক অয়েল ট্যাংকার কিনলে সেটি দেশের জন্য লাভজনক। কারণ দেশীয় জাহাজে তেল আসলে বাঁচবে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা।

সে সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ হওয়ায় চাকরির সুযোগ পাবে বাংলাদেশি নাবিক এবং ক্রু। ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরের ৩০ মাসের মধ্যে জাহাজ হস্তান্তরের বিধি-বিধান রয়েছে। অবশ্য বর্তমানে বিএসসির বহরে বাংলার অগ্রগতি, বাংলার অগ্রযাত্রা এবং বাংলার অগ্রদূত নামে তিনটি অয়েল ট্যাংকার রয়েছে।

নৌবাণিজ্য অধিদফতরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির আহমেদ বলেন, কোনো মাদার ভ্যাসেল বাংলাদেশের পতাকায় যুক্ত হওয়াটা দেশের জন্য গৌরবের। এর ফলে দেশের মেরিটাইম সেক্টর উপকৃত হবে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি আগুনে পুড়ে গেছে বাংলার জ্যোতি এবং বাংলার সৌরভ নামে বিএসসির দুটি অয়েল ট্যাংকার। এখন থেকে ভাড়া করা অয়েল ট্যাংকার দিয়ে ক্রুড অয়েল পরিবহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় খবর