পানি খাওয়া জরুরি। তবে কিডনি ভাল রাখতে চুমুক দেওয়া আরও কিছু পানীয়ে। জেনে নিন কোনগুলি খেলে ভাল থাকবে শরীরের ‘ছাঁকনি’টি।কিডনির কাজ থমকে যেতে পারে পানির অভাব হলে। কোন পানীয়ে ভাল থাকবে প্রত্যঙ্গটি?
রক্ত থেকে যত দূষিত পদার্থ ছেঁকে মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বার করে কিডনি। কিডনির কর্মক্ষমতা যদি বেশ কিছুটাও কমে যায়, তার প্রভাব পড়তে পারে সমগ্র শরীরে। বিকল হতে পারে অন্য প্রত্যঙ্গও।
সেই কারণেই চিকিৎসকেরা বলেন, শরীরের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যঙ্গটিকে ভাল রাখা জরুরি। বিশ্ব জুড়েই কিডনির অসুখ বাড়ছে। চিকিৎসকেরা এ জন্য যেমন অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনকে দায়ী করছেন, তেমনই পর্যাপ্ত পানি না খাওয়ার অভ্যাসের দিকেও ইঙ্গিত করছেন।
শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বার করে দেওয়ার প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ভাবে সম্পাদনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি দরকার। অতিরিক্ত পানি খেলে তা যেমন কিডনির উপর চাপ বাড়াতে পারে, তেমনই ঠিকমতো পানি না খেলেও সমস্যা হতে পারে। পানি কম খাওয়ার অভ্যাসে কিডনিতে পাথার হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। তা ছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে, শরীরে তাপমাত্রা ঠিক রাখতেও পর্যাপ্ত পানি খাওয়ার দরকার হয়।
বয়স, ওজন, কায়িক শ্রম, বিশেষ শারীরিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে কতটা পানি খাওয়া দরকার। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী জানাচ্ছেন, ওজন যদি পাউন্ডে ধরা হয়, তার অর্ধেক আউন্স পানির দরকার একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের জন্য। এই অঙ্কে কারও ওজন ৭০ কেজি হলে তিনি ২.৩ লিটার পানি খাবেন। পানির চাহিদা মরসুম, কায়িক শ্রমভেদে ভিন্ন হয়। যিনি পরিশ্রমসাধ্য কাজ করেন, ব্যায়াম করেন তাঁর ক্ষেত্রে ৩৫০ মিলিলিটার অতিরিক্ত পানি খাওয়া দরকার। প্রসূতিদের ক্ষেত্রে বাড়তি ৭০০ মিলিলিটার এবং স্তন্যদায়ী মায়েরা অতিরিক্ত ৯৫০ মিলিলিটার পানি খাবেন।
উদ্ভিজ্জ দুধ: কাঠবাদাম, নারকেল, ওট্স দুধ খেতে পারেন কিডনি ভাল রাখতে। গরুর দুধও খাওয়া যায়। তবে প্রাণিজ দুধে থাকা ল্যাক্টোজ় নামক কার্বোহাইড্রেট হজমে সমস্যা থাকলে উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া দুধ খাওয়া ভাল।
ফলের রস: চিনি কিডনির জন্য মোটেই ভাল নয়। ফল বা খাবারে থাকা প্রাকৃতিক মিষ্টত্ব ক্ষতিকর না হলেও চিনি দেওয়া চা, দুধ ভাল নয়। তুলনামূলক কম মিষ্টি, এমন ফল বেছে নিন। মুসম্বি, বাতাবি, কমলা, যে কোনও রকম লেবুই কিডনির স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য ভাল। লেবুর রস, আপলের স্মুদি, টাটকা সব্জির রস খাওয়া যেতে পারে পানির ঘাটতি মেটাতে।
কম নুন দেওয়া ব্রথ: মুরগির মাংস সেদ্ধ করা পানি বা সব্জি সেদ্ধ করা পানি বা ব্রথও কিডনির স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পারে। তবে নুন বা সোডিয়ামের পরিমাণ অবশ্যই কম রাখা দরকার।
সোডা, এনার্জি ড্রিঙ্ক, চিনি দেওয়া শরবত, অ্যালকোহল— কিডনির পক্ষে ক্ষতিকর। বদলে চিনি ছাড়া ভেষজ চা, ডিটক্স পানীয়ে চুমুক দেওয়া যেতে পারে।