রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
20 C
Dhaka

নির্বাচন আয়োজনের পর নিজের কাজে ফিরে যাব: প্রধান উপদেষ্টা

0

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নিজের কাজে ফিরে যাবেন বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

প্রতিবছরের মতো এবারও বর্ষসেরা দেশ নির্বাচন করেছে ‘দ্য ইকোনমিস্ট’। ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে এবার বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক এই গণমাধ্যম। এ উপলক্ষে সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়।

নির্বাচন আয়োজনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পরিকল্পনা জানতে চান উপস্থাপক। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আসলে আমার চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাকে জোর করে এ কাজে আনা হয়েছে। আমি আমার কাজ উপভোগ করছিলাম। এ জন্য প্যারিসে ছিলাম। সেখান থেকে অন্য কিছু করার জন্য আমাকে টেনে আনা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি আমার নিয়মিত কাজে ফিরে যেতে পারলে খুশি হব। যা আমি সারা জীবন ধরে করেছি এবং তরুণরাও এটিকে ভালোবাসে। সুতরাং আমি আমার সেই দলে বা কার্যক্রমে ফিরে যাব যেটা আমি সারা বিশ্বে তৈরি করেছি।

সাক্ষাৎকারে বর্তমান বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়েও কথা হয়। জঙ্গিবাদের ঝুঁকি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না; এটি আমি আশ্বস্ত করছি। তরুণরা ধর্ম নিয়ে নিরপেক্ষ। তারা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়। এই তরুণরা পুরো বিশ্ব পরিবর্তন করতে পারে। এটা শুধু এক দেশ বা আরেকটি দেশ পরিবর্তনের বিষয় না। বাংলাদেশ যা করেছে এটি একটি উদাহরণ যে তরুণরা কত শক্তিশালী। আমাদের উচিত তাদের প্রতি মনোযোগ দেওয়া। বিশেষ করে তরুণীদের ওপর। তারা বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের উচিত তরুণ-তরুণীদের ওপর মনোযোগ দেওয়া যাতে তারা নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। তাদের সুযোগ এসেছে। তাদের সক্ষমতাও রয়েছে। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তিন তরুণ আমার ক্যাবিনেটে আছেন। তারা দুর্দান্ত কাজ করছে। তারা সক্ষম। এই তরুণরা গত শতাব্দীর তরুণ নয়। তারা এই শতাব্দীর তরুণ। তারা অন্যান্যদের মতোই সক্ষম।

প্রসঙ্গত, বর্ষসেরা দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম ঘোষণার কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক এই গণমাধ্যম বলেছে- সবচেয়ে ধনী, সুখী বা নৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকারী কি না, সেই হিসাবে নয়; সেরা দেশ বেছে নেওয়া হয় আগের ১২ মাসে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে কি না, সেই বিচারে।

এবারের সেরা দেশ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত তালিকায় ছিল পাঁচটি দেশ। বাংলাদেশ ছাড়াও সিরিয়া, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পোল্যান্ড রয়েছে এই তালিকায়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকেই বেছে নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়েছে, আমাদের এবারের বিজয়ী বাংলাদেশ, যারা এক স্বৈরশাসককে উৎখাত করেছে। আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, যিনি সাড়ে ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশটি ১৫ বছর ধরে শাসন করছিলেন। দেশের স্বাধীনতার হিরোর এক কন্যা হিসেবে তিনি একসময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি দমন শুরু করেন, নির্বাচনে কারচুপি করেন, বিরোধীদের কারাগারে পাঠান এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। তার শাসনামলে বিশাল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের সময় প্রতিশোধমূলক সহিংসতার ইতিহাস রয়েছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি দুর্নীতিগ্রস্ত। ইসলামি চরমপন্থাও একটি হুমকি। তবে এখন পর্যন্ত তাদের পরিবর্তন আশাব্যঞ্জক। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সেখানে রয়েছে একটি অস্থায়ী সরকার, যা ছাত্র, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের সমর্থন পেয়েছে। এই সরকার শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে।

২০২৫ সালে এই সরকারকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে হবে এবং কবে নাগাদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। এর আগে নিশ্চিত করতে হবে যে দেশটির আদালত নিরপেক্ষভাবে চলছে এবং বিরোধী দলগুলোকে সংগঠিত হওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। এর কোনোটিই সহজ হবে না।

 

তেল আবিবের পার্কে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত ১৪

0

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) আলজাজিরা ও দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের শহর তেল আবিবে আঘাত হেনেছে। ক্ষেপণাস্ত্রটি তেল আবিবের একটি পাবলিক পার্কে আছড়ে পড়ে।

শেহাব নিউজ এজেন্সি এবং কুদস নিউজ নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, হামলায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছে।তবে এক্স-এর একটি পোস্টে ইসরায়েলি পুলিশ বলেছে যে ক্ষেপণাস্ত্রটি বস্তুগত ক্ষতি করেছে। তবে কোনো মানুষের ক্ষতি হয়নি। পুলিশ ও বোমা বিশেষজ্ঞরা এলাকাটিকে সুরক্ষিত করার জন্য কাজ করছে। বাসিন্দাদের ঘটনাস্থল থেকে দূরে থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। অবিস্ফোরিত বোমা থাকার আশঙ্কায় ঝুঁকি এড়াতে এবং সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য তেল আবিববাসীকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে দ্য টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি তেল আবিবের আকাশ সীমায় প্রবেশ করলে সাইরেন বেজে উঠে। কিন্তু আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়।

ক্ষেপণাস্ত্রটি হুতি-ই ছুড়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে ইসরায়েলি বাহিনী খোঁজ নিচ্ছে। এ ছাড়া আরও হামলার আশঙ্কায় তেল আবিবে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রাখা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহ থেকে নিয়মিত ইসরায়েলে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতি। এমনকি তারা ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও ছুড়ে।

এদিকে ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবাননে সর্বাত্মক হামলা চালিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ ছাড়া গত সপ্তাহে আকস্মিক বাশার আল আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ায় ভয়ংক হামলা চালায় বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাহিনী। অপরদিকে সর্বাত্মক হামলার সাহস না করলেও ইরান ও ইরাকেও হামলার ঘটনা ঘটছে। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে এমন বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টির ধারাবাহিকতায় অভিযানের নামে এবার আরেক দেশে সর্বাত্মক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইহুদিবাদীরা।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এমন ইঙ্গিত মিলেছে। প্রতিবেদনটিতে ইসরায়েলি পাবলিক ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের বরাত দেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলের পাবলিক ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (কেএএন) জানিয়েছে, ইসরায়েল ক্রমাগত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জবাবে ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।ওই দিনের শুরুতে হুতিদের একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং একটি ড্রোন নিক্ষেপ করার পরে এই ঘোষণা আসে। ইরানের আঞ্চলিক মিত্রদের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে কেএএন।

ইসরায়েলের সামরিক সূত্র দাবি করেছে, সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত আসাদ সরকার এবং লেবাননে হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর দুর্বল অবস্থানের কারণে ইরান হুতিদের ওপর ভর করছে। হুতিরা সমগ্র ইরানের অক্ষের পক্ষে ইসরায়েলে আক্রমণ করার ধান্ধা নিয়েছে বলে দাবি নেতানিয়াহুর বাহিনীর। তাই হুতিদের ইসরায়েল আক্রমণের আগেই ব্যবস্থা নিতে চাইছে ইহুদিবাদীরা।

 

ভিসা বন্ধ রাখায় ভারতের পরিবর্তে পূর্বমুখী হচ্ছেন বাংলাদেশের পর্যটকরা

0

ভারতের ভিসা বন্ধ থাকায় বিদেশ ভ্রমণে এখন পূর্বমুখী হচ্ছেন বাংলাদেশের পর্যটকরা। পছন্দের গন্তব্য তালিকায় থাকছে চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড কিংবা মালদ্বীপ। ভারত সাধারণ ভিসা বন্ধ করায় পর্যটকরা বিকল্প গন্তব্য খুঁজছে বলে মত এয়ারলাইন্সগুলোর।

বছরের শেষ ও শুরুর দিকে চার থেকে পাঁচ মাস, দেশ থেকে দেশান্তরে ঘুরে বেড়ান ভ্রমণ পিপাসুরা। তাইতো সিলেট, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন রুট ও বিদেশের ফ্লাইটগুলোতেও যাত্রীদের বাড়তি চাপ থাকে বিমানবন্দরে।

বাংলাদেশি পর্যটকদের কাছে সহজে ভ্রমণ ও চিকিৎসা নিতে বরাবরই শীর্ষে ছিল ভারত। তবে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর থেকে সাধারণ ভিসা বন্ধ রেখেছে দেশটি। এমন প্রেক্ষাপটে বিদেশ ঘুরতে পূর্ব দিকে মুখ ফিরিয়েছেন ভ্রমণকারীরা।

ভ্রমণকারীরা বলছেন, ভারতে যেতেই হবে এমন তো না। বাংলাদেশেও তো ঘোরার মতো অনেক জায়গা আছে। তাছাড়া বিদেশে যেতে চাইলে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে যাওয়া যায়।

চলতি মৗসুমে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, চীন, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কাসহ বেশ কয়েকটি দেশে বেড়েছে বাংলাদেশি পর্যটক। এমন তথ্য দিয়েছে ট্রাভেল ও ট্যুর এজেন্সিদের সংগঠন আটাব-এর।

আটাব সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ বলেন, নতুন ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে আমরা দেখতে পাচ্ছি শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপ ভালো জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এর পাশাপাশি চীনের বিভিন্ন জায়গা যেমন গুয়াংজু, কুনমিং এবং বেইজিং ভালো জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।ভারত সাধারণ ভিসা বন্ধ করায় পর্যটকরা বিকল্প গন্তব্য খুঁজছে বলে মত এয়ারলাইন্সগুলোর।

ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এখন পিক সিজন চলছে। তাছাড়া জুলাই-আগস্টের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সবার মাঝে ঘুরার একটা প্রবণতা তৈরি হয়েছে। সেই জায়গা থেকে অনেকে ব্যাংকক অথবা কাঠমুন্ডু যাচ্ছে। ট্যুরিস্টদের যাতায়াত বন্ধ হয়নি। যেহেতু ভারতে যাওয়া যাচ্ছে না তাই ভিন্ন ভিন্ন বিকল্প তৈরি হচ্ছে।

সেপ্টেম্বরে দেয়া ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ভারত ভ্রমণ করেছেন প্রায় ৪৭ লাখ ৮০ হাজার পর্যটক। এদের মধ্যে ২১ দশমিক ৫৫ শতাংশই ছিল বাংলাদেশি।

নির্বাচন ইস্যুতে সরকারকে চাপে রাখতে চায় বিএনপি

0

নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখবে বিএনপি। সরকারের তরফ থেকে এরই মধ্যে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচির যে ধারণা দেওয়া হয়েছে, সেটিকে ‘অস্পষ্ট ও হতাশাজনক’ বলে মনে করে দলটি। বিএনপি মনে করে, ‘পতিত’ ফ্যাসিবাদীদের দেশবিরোধী নানামুখী ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবিলায় নির্বাচনই এখন সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত এবং সেদিকেই তাদের ফোকাস করতে হবে। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠিত হয়েছে। কিন্তু সরকারের তরফ থেকে এখনো সুনির্দিষ্টভাবে দিনক্ষণ না বলায় নির্বাচনের উদ্যোগ নিতে পারছে না ইসি। তাই নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সরকারের ওপর রোডম্যাপের চাপ অব্যাহত রাখার অংশ হিসেবে বড় বড় সভা-সমাবেশ করার চিন্তাভাবনা করছে বিএনপি। গত বুধবার অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বেশ কয়েকজন নেতা এমন প্রস্তাব দেন। কারণ সরকারের অবস্থান স্পষ্ট না হওয়ায় ইসি গঠনের পরও নির্বাচন নিয়ে তারা এখনো পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারছেন না।

বিএনপি এখন রাষ্ট্র মেরামতের দলীয় রূপরেখা ৩১ দফাকে নতুন করে ব্র্যান্ডিংয়ে ব্যস্ত। এ নিয়ে বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালার পর এখন জেলাভিত্তিক কর্মশালা চলছে, যেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হচ্ছেন। জেলা পর্যায়ে এ কার্যক্রম শেষ হলে তখন নির্বাচনের দাবিতে আরও সোচ্চার হবে দলটি। এর অংশ হিসেবে সারা দেশে সভা-সমাবেশ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত না হলেও আগামী ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ মাঠে নামতে পারে বিএনপি।

জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ ইস্যুতে সম্ভাব্য কী কর্মসূচি দেওয়া যায়, তা নিয়ে কয়েকজন প্রস্তাব দেন। কেউ কেউ বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া উচিত হবে না। কারণ সরকার ফেল করলে সেটি হবে সামগ্রিক ব্যর্থতা। বিএনপি এই সরকারকে ব্যর্থ দেখতে চায় না। তারা চায়, সরকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে তাদের কাজ সম্পন্ন করুক।

বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর অব্যাহত দাবির মধ্যে বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি নিয়ে একটা ধারণা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তিনি বলেন ‘মোটাদাগে বলা যায়, ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা যায়।’ জানা গেছে, প্রধান উপদেষ্টার এই ভাষণ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার এই ভাষণ নিয়ে দলের কোনো নেতাই সন্তোষ প্রকাশ করেননি। নেতারা মনে করেন, সরকার নির্বাচনের জন্য ২০২৫ সালের শেষ থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত যে সম্ভাব্য সময়ের ধারণা দিয়েছে, সেটি দীর্ঘ সময়। যেটা নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের সময়ক্ষেপণ এবং নির্বাচনকে প্রলম্বিত করারই অংশ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচনমুখী প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো প্রাথমিকভাবে এবং প্রধানতম সংস্কার বলে মনে করি। এই সরকারের প্রধান ও প্রথম দায়িত্ব হলো একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়া। আর সেজন্য কিছু আইনি সংস্কার, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও মাঠের সংস্কার দরকার আছে। আমরা পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে দেখেছি, এ ক্ষেত্রে সংস্কারে চার থেকে ছয় মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়। সুতরাং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান, গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে আমরা যেন কোনো কৌশল প্রয়োগ না করি। ভোটের জন্য সবাই অপেক্ষা করছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব, নির্বাচনমুখী প্রয়োজনীয় সংস্কার সেরে ভোটের আয়োজন করতে হবে। তার মতে, নির্বাচনমুখী সংস্কার কার্যক্রম শেষে নির্বাচনী প্রস্তুতির জন্য তিন থেকে চার মাসের বেশি যৌক্তিক সময় লাগার কথা নয়।

জানা গেছে, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপির কেউ কেউ অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, সরকার দ্রুত নির্বাচন চায়। এ ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতারা সরকারের ওপর অযাচিত চাপ তৈরির চেষ্টা করছে। নির্বাচন বিলম্বের এটিও অন্যতম কারণ। নেতারা মনে করেন, এ বিষয়টি সরকারকেই মোকাবিলা করতে হবে। ‘পতিত’ ফ্যাসিবাদের দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র এবং জনগণের চাহিদা ও প্রত্যাশার আলোকে ছাত্রদের রাজনৈতিক বাস্তবতা বুঝিয়ে আস্থায় নিতে হবে এবং এটি সরকারের দায়িত্ব।

বিএনপি নেতারা বলছেন, নির্বাচন নিয়ে তারা কোনো তাড়াহুড়া করছেন না; বরং সরকারকে তারা সহায়তা করতে চান এবং করছেনও। এজন্য সরকারকে তারা যৌক্তিক সময় দিচ্ছেন। গত ১৫-১৬ বছর ধরে ভোটাধিকারবঞ্চিত জনগণ এখন যেহেতু ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে রয়েছে, তা ছাড়া এতদিন নির্বাচনের ওপর রাজনৈতিক দলগুলোরও আস্থা ছিল না; তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন সরকারের উচিত, রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। তাহলে দলগুলো একদিকে যেমন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারবে, অন্যদিকে সরকারের সংস্কার কার্যক্রমেও সহায়তা করতে পারবে। কারণ মেয়াদের প্রায় সাড়ে চার মাস অতিবাহিত হলেও সরকার সুনির্দিষ্টভাবে কী করতে চায়, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। নির্বাচনের ব্যাপারে তারা এখনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারেনি, এটিই দলটির হতাশার জায়গা। কারণ বিএনপি এই সরকারকে ব্যর্থ দেখতে চায় না।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপের ধারা বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বিষয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, বিএনপি সেটিকে স্বাগত জানিয়েছে। বিএনপি মনে করে, ওই রায়ে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরলেও সেই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার ফরম্যাট কী হবে, সেটি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন আছে। নেতারা বলছেন, দেশে পাঁচ বছর পর পর নির্বাচন নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়, সেটা যাতে না হয়, সেজন্য রাজনৈতিক মতৈক্য প্রয়োজন, যাতে এই ব্যবস্থাকে আরও গ্রহণযোগ্য ও শক্তিশালী করা যায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা হয়। দলটির নেতারা মনে করেন, যে কারোই নতুন দল করার অধিকার রয়েছে, ছাত্ররাও সেটা করতে পারে। সেই দল যদি পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের প্ল্যাটফর্ম না হয়, তাহলে ছাত্রদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাবে বিএনপি। তা ছাড়া নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে দোষ দেখেন না বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও। গত সেপ্টেম্বরে নয়াপল্টনে দলের এক সমাবেশে তিনি বলেন, কেউ যদি মনে করেন, একটি উন্নত এবং নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য আরও নতুন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন রয়েছে, তাতেও দোষের কিছু নেই। কারণ শেষ পর্যন্ত, জনগণই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, তারা কাকে সমর্থন জানাবে কিংবা কাকে সমর্থন দেবে না।

বিশেষ আইনে করা ইন্ট্রাকোর চুক্তি সংশোধনে চিঠি

0

ভোলার গ্যাস সিএনজি (কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস) করে দেশের বিভিন্ন শিল্পকারখানায় সরবরাহ করতে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন পিএলসির সঙ্গে করা চুক্তি সংশোধন করা হচ্ছে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিশেষ আইনে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত এই কোম্পানিটির সঙ্গে এখন ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সিএনজি করার চুক্তি রয়েছে। চুক্তি সংশোধন করে সিএনজি করতে কোম্পানিটিকে ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। চুক্তি সংশোধনের বিষয়ে এরই মধ্যে ইন্ট্রাকোকে এ-সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে। পেট্রোবাংলা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিশেষ আইনে করা চুক্তির কয়েকটি বাতিল করলেও বেশিরভাগ এখনো রয়ে গেছে। ক্ষমতায় আসার কিছুদিনের মধ্যে সামিট, মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করলেও ইন্ট্রাকোর চুক্তি বাতিল করেনি। এমনকি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রায় তিন মাস পর গত নভেম্বরে ইন্ট্রাকো আনুষ্ঠানিকভাবে ভোলার গ্যাসকে সিএনজি করে সরবরাহ শুরু করে। ওই মাসেই বিশেষ আইন রহিতকরণ অধ্যাদেশ জারি করে বর্তমান সরকার। খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশেষ আইন রহিত অধ্যাদেশ জারি করার মধ্য দিয়ে বিগত সরকারের অবৈধ চুক্তিগুলোকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। ইন্ট্রাকোর সঙ্গে করা চুক্তি সংশোধনের উদ্যোগ উদ্দেশ্যমূলক। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগীদের সুরক্ষা দিচ্ছে সরকার।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা চুক্তি সংশোধনের জন্য ইন্ট্রাকোকে চিঠি দিয়েছি। চুক্তিতে বেশ কিছু অসামঞ্জস্যতা রয়েছে, তা সংশোধন করা হবে। তিনি বলেন, এ ছাড়া ভোলার গ্যাস সিএনজি করতে দরপত্র আহ্বান করা হবে। নথি তৈরির কাজ চলছে। নতুন বছরের শুরুতে দরপত্র আহ্বান করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, গত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে ভোলার গ্যাস সিএনজি করে সরবরাহ শুরু করেছে ইন্ট্রাকো। সামিট ও এক্সিলারেট এলার্জির মতো ইন্ট্রাকোর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করার সুযোগ থাকলেও জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে রহস্যজনক কারণে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। যে কারণে এ বিষয়ে পেট্রোবাংলাও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। কর্মকর্তারা জানান, ভোলার গ্যাস সিএনজি করার পর যে দামে বাজারে বিক্রি করছে, তা বেশি হওয়ার কারণে শিল্প-কারখানার মালিকরা এই গ্যাস নিতে আগ্রহও দেখাচ্ছে না। প্রতিযোগিতামূলক দামে চুক্তি করা গেলে উৎপাদন খাতের অনেকেই এই গ্যাস কিনতে আগ্রহী হতেন।

ওই কর্মকর্তা জানান, গত সপ্তাহে চুক্তি সংশোধন করতে ইন্ট্রাকোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চুক্তি সংশোধন করে কোম্পানিটিকে গ্যাস সরবরাহের পরিমাণ ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট থেকে কমিয়ে ৫ মিলিয়ন ঘনফুট করা হবে। পাশাপাশি গ্যাসের দামও সংশোধন করা হবে। নতুন বছরে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সিএনজি করতে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হবে। এই কর্মকর্তা আরও জানান, ইন্ট্রাকোকে যখন ভোলার গ্যাস সিএনজি করার কাজ দেওয়া হয়, তখন আরও বেশ কয়েকটি কোম্পানি আগ্রহ প্রকাশ করেছিল; কিন্তু তৎকালীন সরকারের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় প্রভাব বিস্তার করে এককভাবে কাজটি নেয় ইন্ট্রাকো।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বিষয়টি নিয়ে বলেন, আমরা বিশেষ আইন বাতিল চেয়েছি; কিন্তু সরকার অধ্যাদেশ করে আইন রহিত করল এবং আগের সরকারের অবৈধ চুক্তিগুলোকে বৈধতা দিয়েছে। তিনি বলেন, ইন্ট্রাকোর সঙ্গে চুক্তি সংশোধন উদ্দেশ্যমূলক। অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারের সুবিধাভোগীদের সুরক্ষা দিচ্ছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ রহিতকরণ অধ্যাদেশ বাতিল চেয়ে আমরা আদালতে মামলা করেছি, যা চলমান রয়েছে। জনস্বার্থে বিশেষ আইনের সঙ্গে এই আইনের অধীনে হওয়া সব চুক্তি বাতিল করতে হবে।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২১ মে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির সঙ্গে ১০ বছরের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে ইন্ট্রাকো। পরে একই বছরের ২১ ডিসেম্বর ধামরাইয়ের অবস্থিত গ্রাফিক্স টেক্সটাইল লিমিটেডের কারখানায় সিএনজি আকারে ভোলার গ্যাস সরবরাহের মধ্যদিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। ৩ হাজার পিএসআই (প্রতি বর্গ ইঞ্চি) চাপে প্রতি সিলিন্ডারে গ্যাসের পরিমাণ ছিলো ৩৫০০ ঘনমিটার। বিশেষ আইনে করার এই চুক্তির মাধ্যমে কোম্পানিটি ভোলার থেকে প্রাথমিকভাবে ৫ মিলিয়ন ঘনফুট এবং পরবর্তীতে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দৈনিক সিএনজি আকারে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করবে। চুক্তি অনুযায়ী, ইন্ট্রাকো সরকার থেকে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস কিনেছে ১৭ টাকায়। আর বিক্রি করছে ৪৭ টাকা ৬০ পয়সায়।

সিএনজিখাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, ভোলার গ্যাস আরও কমদামে সরবরাহ করা যেত। ভোলার গ্যাসকে ১ হাজার পিএসআই থেকে বুস্টার কম্প্রেসরের মাধ্যমে ৩ হাজার পিএসআই প্রেসারে কম্প্রেস করে মোবাইল স্টোরেজের মাধ্যমে পানি এবং স্থল পথে সহজে নিয়ে আসা যায়। এতে করে একদিকে কম্প্রেসন চার্জ অর্ধেকেরও কম হবে এবং ডিকম্প্রেসন চার্জ একেবারে বাদ যাবে। দেশে শতাধিক মোবাইল স্টোরেজ বাংলাদেশে বিভিন্ন সিএনজি স্টেশন থেকে বিভিন্ন গার্মেন্ট ও শিল্পে গ্যাস সরবরাহের কাজে বিদ্যমান আছে। সরকার চাইলে কয়েক শত ইন্ডাস্ট্রিকে অনুমতি দিতে পারে যারা ফিড গ্যাসের মূল্য (ঘন মিটার ১৭ টাকা) পরিশোধ করে নিজস্ব খরচে কম্প্রেস ও পরিবহন করে তাদের ইন্ডাস্ট্রিতে নিয়ে আসবে। এ ছাড়া প্রতিঘণ্টায় ৫০০ ঘনমিটার গ্যাস প্রক্রিয়া করার সক্ষমতার দেশীয় ‘বুস্টার কম্প্রেসর’ মাত্র ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা যেখানে প্রতিঘন্টায় বিদ্যুৎ খরচ হবে মাত্র ৫০ কিলোওয়াট সুতরাং প্রতি ঘনমিটার গ্যাস কম্প্রেস করতে খরচ হবে মাত্র ২ থেকে ৩ টাকা। অন্যদিকে বর্তমানে যে মোবাইল স্টোরেজগুলো বিদ্যমান সেগুলো একেকটি প্রতি বার ৩ হাজার ঘনমিটার গ্যাস বহন করতে পারে। ভোলা থেকে ঢাকা ও আশপাশে যাতায়াত করতে যদি প্রতি বার ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়, তাহলে পরিবহন খরচ হবে প্রতি ঘন মিটারে মাত্র ৭ থেকে ৮ টাকা; কিন্তু বিগত আওয়ামী সরকার নির্দিষ্ট ওই কোম্পানি ছাড়া আর কোনো কোম্পানির প্রস্তাব শুনতে আগ্রহী ছিল না। ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব, প্রতি ঘনমিটার গ্যাস ক্রয় মূল্য ১৭ টাকার পরিবর্তে ২৭ টাকা এবং কম্প্রেশন চার্জ প্রতি ঘন মিটার ১০ টাকা হারে যোগ করে বিক্রয়মূল্য ৩৭ টাকা ধার্য করা হলে সরকার, ব্যবসায়ী ও গ্রাহকরা লাভবান হবে। আগ্রহী শিল্প মালিকরা এই গ্যাস পরিবহন ভাড়া পরিশোধ করে তাদের কারখানায় নিয়ে যাবে। বর্তমানে ভোলার তিনটি গ্যাসক্ষেত্রের উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট। যেখানে উৎপাদন হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ মিলিয়ন ঘনফুট। আর বাকি গ্যাস উদ্বৃত্ত অবস্থায় রয়েছে।

 

শিক্ষার্থীদের নতুন দল ঘিরে রাজনীতিতে নানা সমীকরণ

0

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ধারা যুক্ত করতে শিগগির নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন হতে যাচ্ছে। রাষ্ট্র সংস্কার ও পুনর্গঠনের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটি ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির সমন্বয়ে এই দল গঠিত হবে, যার লক্ষ্য ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে একদফা দাবির আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে দেশ ও জাতির সমস্যা সমাধান। তবে দলটির নাম, নেতৃত্ব, কমিটি, গঠনতন্ত্র ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে একটি সূত্রে জানা গেছে, যেহেতু বৈষম্যের বিরুদ্ধে, সর্বক্ষেত্রে ন্যায়বিচারের পক্ষে তাদের আন্দোলন, তাই দলের আগে-পরে ‘জাস্টিস’ শব্দটি থাকতে পারে।

এ দলে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সরাসরি সংযুক্তি না থাকলেও প্ল্যাটফর্মটির অনেকেরই অংশগ্রহণ থাকবে বলে জানা গেছে। এমনকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বে থাকা কোনো কোনো প্রতিনিধিও নতুন দলে সম্পৃক্ত হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

এমন সময়ে দলটি গঠন হতে যাচ্ছে, যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে এবং সেখানে সম্ভাব্য নতুন দলেরও সরাসরি অংশগ্রহণ রয়েছে। অন্যদিকে ছোটখাটো ও অতি প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম শেষ করে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর দ্রুত নির্বাচনের চাপ রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর তরফ থেকে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা সম্পর্কে প্রাথমিক একটি ধারণা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। আর সংস্কার বিলম্বিত হলে পরের বছরের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। এমন প্রেক্ষাপটে নতুন দল গঠনের বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। দল গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে কেউ কেউ এটিকে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য বলে অভিহিত করেছেন। তবে সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে দল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হলে শুরুতেই সেই উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।

গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে রাজধানীতে একটি বিজয় শোভাযাত্রা করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। বাংলামটর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অভিমুখে বেশ বড়সড় মিছিল নিয়ে এই শোভাযাত্রা হয়। এর আগে নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে ছোট আকারে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হলেও ঘটা করে শোডাউন দেখা যায়নি। শোভাযাত্রায় ঢাকার বিভিন্ন থানা থেকে সংগঠনের ব্যানার নিয়ে সদস্যরা উপস্থিত হন। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা-থানা থেকেও কর্মসূচিতে যোগ দেন অনেকে। এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয় যে, তারা নতুন দল নিয়ে আসছেন। এর আগে সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আগামী এক-দুই মাসের মধ্যেই ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দেওয়া হবে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। সম্ভাব্য নতুন দলটিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরাসরি সংযুক্তি না থাকলেও এতে প্ল্যাটফর্মটির অনেকেরই অংশগ্রহণ থাকবে। তবে নতুন দল গঠিত হলেও জাতীয় নাগরিক কমিটির বিলুপ্তি হবে না। নতুন দলের কারণে বিলুপ্ত হবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনও। এই দলে তরুণদের প্রাধান্য দিয়ে অভ্যুত্থানের পক্ষের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সমাগম ঘটানোর চেষ্টা করা হবে। বিশেষ করে নাগরিক কমিটিতে থাকা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীসহ এর বাইরে অনেকেই রয়েছেন, তারা স্থান পাবেন এ দলে। পাশাপাশি বিরাজমান রাজনৈতিক দলগুলো থেকে কেউ এ দলে আসতে চাইলে তাদেরও স্বাগত জানানো হবে।

সর্বশেষ গত ৮ সেপ্টেম্বর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে রাষ্ট্রের সংস্কার ও পুনর্গঠনের লক্ষ্যে আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা ও জবাবদিহির পরিসর তৈরি, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক উদ্যোগের সঙ্গে আলোচনা, ফ্যাসিবাদী কাঠামো ও শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখাসহ ৮ দফা নিয়ে গঠিত হয় জাতীয় নাগরিক কমিটি। ৫৫ সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু হওয়া এই প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক হন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং সদস্য সচিব হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সমাজকল্যাণ সম্পাদক আখতার হোসেন। মুখপাত্র করা হয় সামান্তা শারমিনকে। যদিও পরে প্ল্যাটফর্মটিতে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে এটির সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠন করা হয়েছে। পুনর্গঠিত কমিটিতে আটজনকে যুগ্ম আহ্বায়ক, আটজনকে যুগ্ম সদস্য সচিব, পাঁচজনকে

সহ-মুখপাত্র, চারজনকে যুগ্ম মুখ্য সংগঠক এবং ১৪ জনকে সংগঠক করা হয়। এ ছাড়া কয়েক ধাপে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করার পর বর্তমানে প্ল্যাটফর্মটির সদস্যসংখ্যা ১৪৭। এরই মধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনটি ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন নাগরিক কমিটির নেতারা। গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় শতাধিক কমিটি গঠন করে সংগঠনের বিস্তৃতিও ঘটিয়েছেন তারা। ১৭টি জেলার বিভিন্ন থানা, তিনটি মহানগরী, একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছে নাগরিক কমিটি। তৃণমূল পর্যায়ে কমিটি পৌঁছে দিতে কাজও করছেন প্ল্যাটফর্মটির নেতারা।

এরই মধ্যে নানা মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে, নতুন রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য ও আদর্শ কী হবে। বিদ্যমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে তাদের পার্থক্যই বা কী হবে। তাদের অর্থনৈতিক নীতি কেমন হবে? তাদের রাষ্ট্র কাঠামো কি পুঁজিবাদী, সমাজতান্ত্রিক, কল্যাণমূলক, নয়া উদার গণতান্ত্রিক, নাকি ইসলামী ভাবধারার—এ নিয়ে গঠিতব্য দলটির বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। তবে একটি গণমাধ্যমে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ‘আমরা একটা মধ্যমপন্থি রাজনীতির কথা বলছি। এটাই আমাদের আদর্শ হবে। আমরা বাম-ডান এমন যে, বিভাজন আছে সেগুলোতে ঢুকতে চাই না। আমরা বাংলাদেশ প্রশ্নে এক থাকতে চাই। ইসলাম ফোবিয়ার রাজনীতি অথবা উগ্র ইসলামপন্থি বা উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির মধ্যেও আমরা নেই।’

নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আন্দোলন চলাকালে গত ৩ আগস্ট ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের যে একদফা দাবি জানানো হয়েছিল, সেই আকাঙ্ক্ষাকেই ধারণ করে এই জনপদের মানুষদের সমস্যা সমাধানকল্পে নতুন রাজনৈতিক দল আমরা নিয়ে আসতে চাচ্ছি। যারা সর্বস্তরের জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে। সংগঠনের নাম আমরা এখনো ঠিক করিনি। নামসহ সংগঠনের অন্য সব আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে আমাদের খসড়া (স্ক্রিপ্টিং) চলমান রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের পরামর্শক্রমে আমরা দ্রুতই একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছব বলে আশা করছি। এরপর আমরা সবকিছুই সামনে নিয়ে আসব।

রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠিত হলে জাতীয় নাগরিক কমিটি বিলুপ্ত হবে কি না এবং নাগরিক কমিটির সঙ্গে সেই দলের কী সম্পর্ক থাকবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটি বিলুপ্ত হবে না। গঠিতব্য রাজনৈতিক দলে নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী অনেক শক্তির অংশগ্রহণ থাকবে। আমরা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে এই রাজনৈতিক দলকে আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। বৈষম্যবিরোধী ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সব শক্তির সমন্বয়ে কমিটি গঠিত হবে।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে দ্বিদলীয় একটি ধারা বিদ্যমান। ভোটারদের একটি বড় অংশ রাজনীতি বলতে আওয়ামী লীগ বা বিএনপিকেই বোঝে। এ দুটি দলেই ভোটাররা বিভক্ত। সেখানে নতুন দল কতটা সুবিধা করতে পারবে, সে প্রশ্নটি রয়েই গেছে। তবে নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন কালবেলাকে বলেছেন, এই দলে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে যেন একই প্ল্যাটফর্মে একই সঙ্গে দাঁড়াতে পারে সেসব বিষয়ও প্রাধান্য দেওয়া হবে। সব পেশার মানুষের অংশগ্রহণ এবং ভারসাম্য যেন থাকে, সে বিষয়টাকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।

জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, নাগরিক কমিটিতে সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট, কালচারাল অ্যাক্টিভিস্টসহ অনেকেই আছেন। তাদের মধ্য থেকে যারা রাজনীতি করতে ইচ্ছুক, নাগরিক কমিটির বাইরেও যারা আসতে চান এবং বিদ্যমান কোনো দলে রাজনীতি করেন, তাদের নিয়ে তরুণদের সমন্বয়ে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করা হবে। এটা শুধু নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ নিয়ে একটা দল হবে, এমনটা নয়। এদের একটা অংশ নিয়ে অন্যদের সমন্বয়ে রাজনৈতিক দল হবে। দলটির নেতৃত্ব কত সদস্য বিশিষ্ট হবে এবং দলপ্রধান কে হবেন এ বিষয় নিয়ে এখন আলোচনা চলছে।

তবে দল গঠন সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, দল গঠনের বিষয়ে আমাদের ফোরামে আপাতত আলাপ হয়নি। এ ব্যাপারে আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলিনি। আমাদের প্ল্যাটফর্মটা আগে গোছাতে হবে।

অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গঠন করার সময়ই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, এই প্ল্যাটফর্ম কখনো রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে কাজ করবে না। তবে কোনো নতুন দল আত্মপ্রকাশ করলে, এই ব্যানার থেকে যার যার ইচ্ছা অনুযায়ী সেখানে যুক্ত হতে পারেন। এটা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার।

বিরাজমান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া: নতুন প্রেক্ষাপটে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিরাজমান রাজনৈতিক দলগুলো। গত বুধবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দলটির নেতারা মনে করেন, যে কারোরই নতুন দল করার অধিকার রয়েছে, ছাত্ররাও সেটা করতে পারে। সেই দল যদি পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের প্ল্যাটফর্ম না হয়, তাহলে ছাত্রদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাবে বিএনপি।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, রাজনৈতিক দল যে কেউ গঠন করতে পারে। ছাত্ররা আন্দোলন করেছে। তারা মনে করছে, দেশের জন্য হয়তো আরও কিছু করতে পারবে, দেশকে আরও কিছু দিতে পারবে। সেই লক্ষ্যে হয়তো তারা নতুন দল করতে চাচ্ছে, করুক। দল গঠন করার অধিকার সবার রয়েছে। তারা নির্বাচন করতে চাইলে করবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, রাজনীতি করা তো নাগরিক অধিকার। নাগরিকের মতপ্রকাশ ও কথা বলার স্বাধীনতা আছে। মতাদর্শ চর্চার জায়গাটাই হলো রাজনীতি। বাংলাদেশে অনেক রাজনৈতিক দল আছে। যে কেউ দেশের আইন ও সংবিধান মেনে বৈধভাবে রাজনীতি করতে পারে। সেটা নাগরিক কমিটি হোক বা অন্য কেউ হোক। সেই অধিকার চর্চা করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নতুন স্বাধীনতা সবাই অর্জন করেছে। এই স্বাধীনতা অর্জনের পর সবাই তার জায়গা থেকে দেশ ও জাতির জন্য ভূমিকা রাখতে চাইবে। আমরা একটা দল, আরও অন্যান্য দল আছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্ন দল রাজনীতির মাঠে আসতে পারে। তবে রাজনীতির যে উদ্দেশ্য—দেশের স্বার্থ ও জনগণের কল্যাণ এবং একটি দেশের মানুষের চিন্তা-চেতনার আলোকে মানুষের কল্যাণে কাজ করা, দেশের

স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা, দেশের উন্নয়নে অবদান রাখা, সেসব যেন প্রতিপালিত হয়। এসব উদ্দেশ্য সামনে রেখে কেউ রাজনৈতিক দল গঠন করতে চাইলে আমরা তাকে স্বাগত জানাব।

গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-তরুণরা যদি নতুন রাজনৈতিক দল করতে চান, নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চান, সেটাকে স্বাগত জানাই। তাদের প্রতি মানুষের যে মনোযোগটা আছে, সেটাকে সম্বল করে তারা নতুন দল করতে পারেন; নিশ্চয়ই তাদের সেই সুযোগ এবং অধিকার আছে। তবে সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে তারা দল গঠনের উদ্যোগ নিলে শুরুতেই তাদের উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সেজন্য দল করতে চাইলে তাদের উচিত হবে, যারা সরকারে আছেন, তাদের বেরিয়ে আসা। কারণ, মানুষ এটা নিয়ে বহুমুখী প্রশ্ন তুলবে, এটাকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করবে না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অতীতের কিংস পার্টির অভিজ্ঞতাটা সুখকর নয়। মানুষ মনস্তাত্ত্বিকভাবে এটাকে নেয় না। সরকারে থেকে তারা যদি এ ধরনের রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন, তাহলে ছাত্র-তরুণদের যে সম্ভাবনা আছে, সেই সম্ভাবনার অনেকখানিই নষ্ট হয়ে যাবে। এ ছাড়া সরকারও অপ্রয়োজনীয় বিতর্কের মধ্যে পড়বে। কারণ, এই সরকার চরিত্রের দিক থেকে দলনিরপেক্ষ একটা সরকার। বিশেষ কোনো দল বা মতাদর্শের প্রতি সরকারের যদি কোনো পক্ষপাত থাকে, তাহলে সরকারের এই নিরপেক্ষতা থাকবে না, সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আর সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হলে তাদের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকি থাকবে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দল করার অধিকার সবারই আছে। তারাও করতে পারে, করুক। বুধবার তারা (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সমাবেশে যে বক্তব্য রাখল, তাতে মনে হলো, সেই বক্তব্যে ক্ষমতার প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করা হলো। তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো লাগবে কেন, তারা তো জনগণের ভালোবাসা দিয়েই দল করতে পারে। করুক, জনগণ যদি পছন্দ করে, তো হবে। কোনো রাজনৈতিক দল তো আর জনগণের ভালোবাসা ছাড়া হবে না। গায়ের জোরে, দাপট দেখিয়ে, অহংকার দেখিয়ে তো আর দল করতে পারবে না কেউ।

 

হিন্দুদের ওপর সহিংসতা নিয়ে ভারতের তথ্য বিভ্রান্তকর

0

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক দেওয়া এক পোস্টে এমন দাবি করে প্রেস উইং।

ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়া টুডে, আনন্দবাজারসহ একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, হিন্দু ধর্মালম্বীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ২০২২ সালে ৪৭টি, ২০২৩ সালে ৩০২টি এবং ২০২৪ সালে ২ হাজার ২০০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। তথ্যটি বিভ্রান্তিকর এবং অতিরঞ্জিত।

স্বাধীন মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মতে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংস ঘটনার সংখ্যা ১৩৮টি, যাতে ৩৬৮টি বাড়ি ঘরে হামলা হয়েছে এবং ৮২ জন আহত হয়েছে।

পোস্টে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করছে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৪ আগস্ট থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে অন্তত ৯৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার অভিযোগে ৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রেস উইংয়ের মতে, এসব ঘটনার বেশিরভাগই ৫ আগস্ট থেকে ৮ আগস্টের মধ্যে ঘটেছে, যখন দেশে কোনো সরকার ছিল না। এসব হামলার বেশিরভাগই ঘটেছে রাজনৈতিক কারণে।

এ ধরনের অপরাধ নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে।

 

নতুন ভাইরাস ডিঙ্গা ডিঙ্গার লক্ষণ ও প্রতিকার

0

করোনার পর নতুন এক ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। অদ্ভুত নামের ভাইরাসটি বর্তমান সময়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। নতুন এই ভাইরাসের নাম ডিঙ্গা ডিঙ্গা।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন এ ভাইরাসে আক্রাক্ত হচ্ছেন আফ্রিকার দেশ উগান্ডার বুন্ডিবুগিও জেলার মানুষরা। নারী ও কিশোরীরাই মূলত এ ভাইরাসে আক্রাক্ত হচ্ছেন। প্রায় ৩০০ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এ ভাইরাসে আক্রান্তদের জ্বর এবং অত্যধিক শরীর কাঁপুনি হচ্ছে। এ কারণেই ভাইরাসটির নাম ডিঙ্গা ডিঙ্গা।

জি নিউজে বলা হয়েছে, ডিঙ্গা ডিঙ্গা শব্দটির অর্থ নাচের মতো কাঁপা। স্থানীয় চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এর কারণ ও প্রতিকারের উপায় বের করার চেষ্টা করছেন। কীভাবে এবং কেন এ রোগ ছড়াচ্ছে তা এখনো জানা যায়নি।

ডিঙ্গা ডিঙ্গায় আক্রান্তের লক্ষণ :

ডিঙ্গা ডিঙ্গায় আক্রান্ত হলে রোগীর শরীরে অত্যধিক কাঁপুনি হতে থাকে। অনিয়ন্ত্রিত কাঁপুনি এ ভাইরাসে আক্রান্তের অন্যতম লক্ষণ। একইসঙ্গে জ্বর, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, সারা শরীরে ব্যথার মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে। মাথা ব্যথাও করে।

ডিঙ্গা ডিঙ্গায় আক্রান্তের শ্বাসকষ্ট হয়। আক্রান্ত ব্যক্তি খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। এমনকি অবস্থা ভয়াবহ হলে দেহ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে।

প্রতিকার :

বুন্ডিবুগিও জেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কিয়িটা ক্রিস্টোফার জানিয়েছেন, ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগের চিকিৎসায় বর্তমানে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য দলগুলো এ চিকিৎসা প্রদান করছে। এই রোগে এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।

তিনি আরও বলেন, এই রোগের চিকিৎসায় ভেষজ ওষুধ এখনো কার্যকর প্রমাণিত হয়নি। সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে এবং সাধারণত রোগীরা এক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠছেন। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, যদি এই রোগের লক্ষণ দেখতে পান তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসা নিলে দ্রুত সময়ে সুস্থ হওয়া সম্ভব।

 

ধানমন্ডিতে উপদেষ্টা হাসান আরিফের প্রথম জানাজা সম্পন্ন

0

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে ধানমন্ডি ৭ নম্বর জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নিয়েছেন।তার দ্বিতীয় জানাজা শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় হাইকোর্ট চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাকে রাজধানীর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

হাসান আরিফের দাফনের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, উপদেষ্টা হাসান আরিফের মেয়ে কানাডায় আছেন। প্রথমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে তার জন্য অপেক্ষা করা হবে। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বাদ জোহরই দাফন সম্পন্ন হবে।এর আগে শুক্রবার বিকেল ৩টায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান উপদেষ্টা হাসান আরিফ। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।

হাসান আরিফ ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কলকাতা থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।

কর্মজীবনে তিনি ১৯৬৭ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন। এরপর ঢাকায় এসে বাংলাদেশ হাইকোর্টে কাজ শুরু করেন।

হাসান আরিফ বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভূমি এবং ধর্ম মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি অক্টোবর ২০০১ থেকে এপ্রিল ২০০৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে ছিলেন। এ ছাড়া তিনি জানুয়ারি ২০০৮ থেকে জানুয়ারি ২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন।

এএফ হাসান আরিফ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ, নির্মাণ সালিশ, বাণিজ্যিক সালিশ, অর্থ, ব্যাংকিং এবং সিকিউরিটিজ বিষয়, করপোরেট, বাণিজ্যিক ও ট্যাক্সেশন বিষয়, সাংবিধানিক আইন বিষয়, আরবিট্রেশন এবং বিকল্প বিরোধ সমাধানের অন্যান্য পদ্ধতি নিয়ে কাজ করেছেন।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন এএফ হাসান আরিফ।

 

১৫ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

0

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ইরান এবং হুতিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তালিকায় একাধিক ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান ও জাহাজ রয়েছে।

ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, ইরানের পেট্রোলিয়াম এবং পেট্রোকেমিক্যালের বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত তিনটি জাহাজে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এসব জাহাজের মাধ্যমে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করে দেশটি। এ ছাড়া তারা তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সমর্থন, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়ন এবং হিজবুল্লাহ, হামাস ও হুতিদের সহায়তা দিয়ে আসছে।

মার্কিন ভারপ্রাপ্ত আন্ডার সেক্রেটারি ফর টেররিজম অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেনস ব্রেডলি স্মিথ জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ডের জন্য অর্থায়নকারী মূল রাজস্ব উৎসগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইরান এসব কর্মকাণ্ডের জন্য জাহাজ, বিভিন্ন কোম্পানি এবং সহায়তাকারীদের একটি নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করে।

অন্যদিকে ইরান জানিয়েছে, তাদের পারমাণবিক প্রকল্প মূলত শান্তিপূর্ণ লক্ষ্য অর্জনের জন্য।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা জাহাজগুলো হলো জিবুতির পতাকাবাহী ক্রুড অয়েল ট্যাংকার এমএস এনোলা, সান ম্যারিনোর পতাকাবাহী এমএস এনজিয়া ও পানামার পাতাকাবাহী এমএস মেলেনিয়া। নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তাদের সকল সম্পত্তি জব্দ করা হবে। এ ছাড়া তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হবে।

ট্রেজারি বিভাগ আরও জানিয়েছে, হুতিদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার অভিযোগে ১২ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এসব ব্যক্তির মধ্যে অন্যতম হলেন হাসিম আলি আহমদ আল মাদানি। তিনি হুতিদের সংশ্লিষ্ট সানার সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রধান। তার বিরুদ্ধে হুতিদের জন্য ইরান থেকে বেআইনিভাবে তেল পাচার, অস্ত্র পাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ করা হয়েছে।