রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
20 C
Dhaka

বিমানবন্দরে নেমেই হাসপাতালে ছুটে গেলেন প্রধান উপদেষ্টা

0

দুবাই থেকে ঢাকায় ফেরার পরপরই এএফ হাসান আরিফের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রয়াত উপদেষ্টাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বিমানবন্দর থেকে ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে ছুটে যান ড. ইউনূস।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে দুবাই থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে বহনকারী একটি বিমান ঢাকায় অবতরণ করে।এ এফ হাসান আরিফের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তার আকস্মিক মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। উপদেষ্টা হাসান আরিফ একজন শীর্ষ আইনজীবী, তিনি অন্তর্বর্তী সরকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন।’

বাংলাদেশের সাবেক এই অ্যাটর্নি জেনারেল দীর্ঘদিন ধরে আইন পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ২০০৮ থেকে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।তার কয়েক দশকব্যাপী দীর্ঘ জনসেবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘হাসান আরিফ একজন উজ্জ্বল আইনজীবী হিসেবে এবং ভিন্নমতাবলম্বী, ভিন্নমতের কণ্ঠস্বর ও আমাদের সমাজের প্রান্তিক মানুষের মানবাধিকার রক্ষায় তার সক্রিয় ভূমিকার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’

প্রধান উপদেষ্টা শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান এবং বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

 

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে তারেক রহমানের অভিনন্দন

0

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) এক অভিনন্দন বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ক্রিকেটের দামাল ছেলেরা তাদের সাফল্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে বাংলাদেশকে উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করবেন। তিনি আরও বলেন, এখন যেমন ছেলেরা সত্যিই ভালো খেলছেন, আবার যখন খেলবেন তখনও তারা ভালো খেলবেন- এই প্রত্যাশা করি।

শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮০ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে নিল বাংলাদেশ। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে এই সংস্করণে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয় এটি।এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও টি-টোয়েন্টি দলের ক্রিকেটার ও কর্মকর্তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের সাফল্য কামনা করেছেন।

 

ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার নিরব ৩ দিনের রিমান্ডে

0

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদের আদালত এ আদেশ দেন।এ মামলার অপর দুই কিশোর আসামি আরাফাত ও সিফাত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার আবেদন করেছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এমএ কালাম খান।

রিমান্ড শুনানিতে পুলিশ জানায়, আসামিরা চুনকুটিয়া এলাকায় অবস্থিত রূপালি ব্যাংক জিনজিরা শাখায় ঢুকে কর্মকর্তাদের জিম্মি করে ১৬ লাখ টাকা লুট করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা ৯৯৯-এ পুলিশকে জানালে ব্যাংকটি ঘিরে ফেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এরপর সেনাবাহিনীর সদস্যরা এলে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় আসামিরা। রিমান্ডে নেওয়া লিয়ন পেশায় গাড়িচালক। বাকি দুজনের একজন একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী, আরেকজন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।

 

গণপিটুনির ভয়ে আ.লীগ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে : মুজিবুর রহমান

0

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার উদ্যোগে জেলার গোদাগাড়ীর সাফিনা পার্কে শিক্ষাসফর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন নিয়ে তামাশা করেছে। দিনের ভোট রাতে করেছে। এরপর আবার তারা নিজেরা নিজেরা ভোট করেছে। জনগণকে কখনোই ভোট দিতে দেয়নি। স্বৈরাচার যাতে আর প্রতিষ্ঠিত না হতে পারে সে ব্যাপারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে তারা আর ফিরতে পারবে না। আওয়ামী লীগ শুধু নিজেদের স্বার্থ দেখেছে। অন্য কারো স্বার্থ দেখেনি। জনস্বার্থে কোনো কাজও করেনি।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মন্ডল বলেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ৫৪ হাজার জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। কোনো বিচার হয়নি। প্রত্যেক হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে হবে। নতুন করে ধ্বনিত হচ্ছে, রক্ত দিয়ে কিনেছি এই স্বাধীনতা আর কোনো হাতে তুলে দিতে পারি না। প্রকৃত স্বাধীনতার সুখ দিতে প্রয়োজন ইসলামী মূল্যবোধের সরকার। সেই লক্ষে জামায়াত কাজ করছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক আশরাফুল আলম ইমন বলেন, ভ্রমণ একটি আনন্দময় ইবাদত এবং জ্ঞান-প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার উৎস। তিনি কুরআনের আয়াত উপস্থাপন করে বলেন, সফর বা ভ্রমণের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো পূর্ববর্তী মানুষদের কীর্তি ও পরিণতি সম্বন্ধে জানা ও শিক্ষা গ্রহণ করা। এর মাধ্যমে মানুষের চোখ-কান খুলে যায়। সত্য, সঠিক পথ ও পন্থা গ্রহণে সহায়ক হয় এবং জীবন পরিচালনার পাথেয় সঞ্চয় করা যায়। তিনি সবাইকে অর্জিত শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে কার্যকর ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।

শিক্ষাসফর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজপাড়া থানার নায়েবে আমির মাওলানা আজমল হক খান। রাজপাড়া থানার সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগরীর, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সোহেল, রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি ডা. জাহাঙ্গীর, রাজশাহী জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুল খালেক, সেক্রেটারি গোলাম মোরতুজা প্রমুখ।

 

জীবনের বিনিময়ে হলেও অভ্যুত্থানের স্পিরিট রক্ষা করবো : সারজিস আলম

0

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তার চেক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫৮ শহীদ পরিবারের প্রতিটিকে ৫ লাখ টাকা করে মোট দুই কোটি ৯০ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।

এ সময় সারজিস বলেন, জেলা পর্যায়ে যে সব শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধারা রয়েছেন জেলা প্রশাসন এবং পুলিশসহ অন্যান্য স্টেক হোল্ডাররা মিলে তাদের দায়িত্ব ভাগ করে নিলে আমাদের জন্য সহজ হয়ে যায়। যোগ্যতা অনুযায়ী শহীদ পরিবার থেকে একজন করে হলেও চাকরির ব্যবস্থা করি, তাহলে আমাদের দায়িত্বগুলো সহজ হয়ে যায়।

পুলিশের উদ্দেশ্যে সারজিস বলেন, পুলিশ চাইলে অনেক কিছু ঠিক হয়ে যাওয়া সম্ভব। তাদের প্রভাবটা মাঠ পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অল্প কিছুদিন সহযোগিতার জন্য এসেছে, আবার চলে যাবে। পুরো বাংলাদেশের মাঠ পর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য পুলিশ যে ভূমিকা পালন করতে পারে আর কেউ সেটা পারে না। যাদের কাছে প্রত্যাশা সবচেয়ে বেশি, তাদের কাছে চাওয়াটাও বেশি হয়। আমরা এখনো আপনাদের প্রতি আস্থা হারাইনি, আমরা আস্থাটা রাখতে চাই। কিন্তু আস্থাটা রাখতে পারব কিনা সেটা আপনাদের কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে সারজিস আলম বলেন, যদি আপনাদের জায়গা থেকে এই দায়িত্বটুকুর ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র গড়িমসি করেন- এই বাংলাদেশে আপনাদের মুখ দেখানোর আর কোনো পথ থাকবে না।

তিনি বলেন, এই রাষ্ট্রের বিভিন্ন কাঠামোর যারা কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন, রাষ্ট্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে যতটুকু দায়িত্ব পালন করা উচিত ছিল ততটুকু করেননি। একটা ফ্যাসিস্ট দল একটা ফ্যাসিস্ট রেজিম আওয়ামী লীগের হুকুম মতো দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ দায় যে, বিগত ১৬ বছরে আমরা এরকম একটা স্বৈরাচার সিস্টেমকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হতে দিয়েছি। রাষ্ট্র কাঠামোর বিভিন্ন ক্ষেত্রে যার যতটুকু পাওয়ার ছিল তার দায়িত্ব তত বেশি। আমাদের এই অভ্যুত্থান চলাকালীন সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নৃশংস একটি হামলা চালায় এবং রংপুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় হত্যাযজ্ঞটি শুরু হয়, তখন এই খুনি শেখ হাসিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মাঠ পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পুলিশকে ব্যবহার করেছে। বিগত ১৬ বছরেও বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে ব্যবহার করেছে।

তিনি বলেন, যারা শেখ হাসিনার দালাল ছিল, তোষামোদকারী ছিল, তারা বেঁচে গিয়েছে। আরেকটা বেঁচে যাওয়ার পদ্ধতি ছিল, হয় আপনাকে নিষ্ক্রিয় দর্শক হতে হবে অথবা দাস হতে হবে। এর বাইরে যদি আপনি কিছু হওয়ার চিন্তা করেন তাহলে আপনাকে হয়রানি করার জন্য মামলা, জেল, জুলুম, গুম, খুন, হত্যা যেভাবে যা কিছু করা যায় সবকিছু করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে অপব্যবহার করা হয়েছে। এই ক্ষতিটা যতটা না বাংলাদেশ পুলিশের হয়েছে, তার চেয়ে বেশি বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির হয়েছে। প্রায় আড়াই লাখ সদস্যের একটি পরিবার, এই একটি পরিবার যদি চায় এবং পদ অনুযায়ী, শপথ অনুযায়ী তাদের দায়িত্বটুকু রাষ্ট্রের জন্য সঠিকভাবে পালন করে তাহলে এই বাংলাদেশের আমরা যে স্বপ্ন দেখি, প্রত্যাশা করি, সেই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অর্ধেকের বেশি রাস্তা অটোমেটিক প্রশস্ত হয়ে যায়। কিন্তু বিগত ১৬ বছরে এবং এই অভ্যুত্থানের সময় এ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে অপব্যবহার করা হয়েছে।

সারজিস আলম আরও বলেন, আমরা এই অভ্যুত্থানের সঙ্গে কোনো দিনও, জীবন চলে গেলেও বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারি না। এটা কোনো দিনও সম্ভব না।

তিনি বলেন, এখন অনেকেই রয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক, ব্যক্তিগত, গোষ্ঠীগত উদ্দেশ্যে এই অভ্যুত্থানের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেককেই প্রশ্নবিদ্ধ করার নোংরা চেষ্টা চালাচ্ছে। অনেক রাজনৈতিক দল জুলাইয়ের ৩০ তারিখ পর্যন্ত বলেছিল আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি, আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের সঙ্গে একমত হবো কিনা। এই সংগ্রামে যুক্ত হব কিনা। তারা যদি বড় বড় গলায় আমাদের সামনে বলে এই গণঅভ্যুত্থানে তারাই সামনের সারিতে ছিল, আমরা শুধু অংশগ্রহণ করেছি। তাদের শুধু আমরা বলতে চাই, বড় গলায় কথা বলার আগে নিজেরা বিবেকবোধের জায়গা থেকে একটি জিনিস শুধু চিন্তা করুন জুলাইয়ের পুরো মাসে আপনাদের অবস্থানটা কী ছিল। জুলাইয়ের পুরো মাসে আপনাদের কথা বলার জায়গাগুলো কেমন ছিল। কথা বলার জায়গাগুলো কেমন ছিল। ব্লেইম গেম দিয়ে আমাদের আত্মবিশ্বাসকে নষ্ট করতে পারবেন না।

অনুষ্ঠানে খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার, অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি মো. হাসানুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেন, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মো. তারিকুল ইসলাম, আশরফা খাতুন ও মো. ওয়াহিদুজ্জামান বক্তৃতা করেন।

এতে স্বাগত বক্তৃতা দেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।

অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। তারা জীবন দিয়ে নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়ে গেছেন। এ বাংলাদেশ আত্মপ্রত্যয়, দুর্বার ও সাহসের বাংলাদেশ। নতুন বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে। এই অভ্যুত্থানের ইতিহাস নতুন বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার সংগ্রামের ফসল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে একটি মহল অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। অভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার চেষ্টা এখনো চলছে। ছাত্রদের স্পৃহা, মনের আকাঙ্ক্ষা আমাদের বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। গত ১৫ বছর সব ক্ষেত্রে বৈষম্য ছিল। আমাদের সমাজ ও বাংলাদেশকে বৈষম্যহীনভাবে গড়ে তুলতে হলে সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্য, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সদস্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় ও খুলনা জেলার সমন্বয়ক ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

উপদেষ্টা হাসান আরিফ মা-রা গেছেন

0

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মা-রা যান তিনি।তার মৃ-ত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমান মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন।

হাসান আরিফ ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কলকাতা থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।

কর্মজীবনে তিনি ১৯৬৭ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন। এরপর ঢাকায় এসে বাংলাদেশ হাইকোর্টে কাজ শুরু করেন।

হাসান আরিফ বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভূমি এবং ধর্ম মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি অক্টোবর ২০০১ থেকে এপ্রিল ২০০৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে ছিলেন। এ ছাড়া তিনি জানুয়ারি ২০০৮ থেকে জানুয়ারি ২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন।

এএফ হাসান আরিফ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ, নির্মাণ সালিশ, বাণিজ্যিক সালিশ, অর্থ, ব্যাংকিং এবং সিকিউরিটিজ বিষয়, করপোরেট, বাণিজ্যিক ও ট্যাক্সেশন বিষয়, সাংবিধানিক আইন বিষয়, আরবিট্রেশন এবং বিকল্প বিরোধ সমাধানের অন্যান্য পদ্ধতি নিয়ে কাজ করেছেন।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন এএফ হাসান আরিফ।

 

সমবায়ী শিক্ষা প্রবর্তনের প্রস্তাব ড. ইউনূসের

0

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) মিশরে রাজধানী কায়রোতে ১১তম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধান উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘প্রথমত, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও সমমানের জ্ঞান বিতরণী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কার্যকর ও ফলমুখী সংযোগ তৈরি ও তা গভীর করতে হবে। বিশেষ করে ফলিত বিজ্ঞান শাখার ছেলে-মেয়েদের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রস্তুত করায় মনোনিবেশ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ডি-৮ সদস্য দেশগুলোকে উদ্যোক্তা ও উচ্চতর শিক্ষার মধ্যে আজকের দূরত্ব ঘুচিয়ে আরও কাছাকাছি আনতে হবে। তাদের লক্ষ্য হতে হবে এই শিক্ষা থেকে অর্জিত জ্ঞানের ডি-৮ দেশগুলোর নেতাদের বৈশ্বিক ব্যবসা ও শিল্পের তীব্র প্রতিযোগিতার বাজারের টিকে থাকা নিশ্চিত করতে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা।

তিনি আরও বলেন, ‘যদি এতে ডি-৮ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কাঠামোকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে বলে, তবে আমাদের তা-ই করা উচিত। ব্যবসাকে শুধু সম্পদ গড়ে তোলার মাধ্যম হিসেবে না দেখে এটি যেন মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে সেভাবে রূপান্তরিত করতে হবে। তারা একটি নতুন সভ্যতা গড়ে তুলতে সামাজিক ব্যবসায় সম্পৃক্ত হবেন।’

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, দ্বিতীয়ত, ডি-৮ দেশগুলোতে তারা বছরের পর বছর ধরে প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে লাখ লাখ লোককে মৌলিক শিক্ষা ও দক্ষতা প্রদানের চেষ্টা করেছে।

তিনি বলেন, ‘১.২ বিলিয়ন মানুষের মধ্যে, এটি প্রায়শই একটি কঠিন কাজ। উদাহরণস্বরূপ ‘মানদণ্ডে’ পৌঁছানোর জন্য আমরা দূরশিক্ষণের মাধ্যমে চেষ্টা করেছি। কীভাবে কর্মক্ষেত্রে লাখ লাখ যুবককে দক্ষ করা যায় তা নিয়ে আমাদের আরও গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। কর্মক্ষেত্রেও সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যবোধ ও নীতি-নৈতিকতাও কঠোর দক্ষতার মতোই গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি আরও বলেন, ‘এবং এ ছাড়াও আমরা বিভিন্ন বৃত্তিমূলক ক্ষেত্রে অব্যাহতভাবে লাখ লাখ লোককে পুনরায় দক্ষ করে তোলার চ্যালেঞ্জেরও সম্মুখীন।’

মৌলিক এআই-ভিত্তিক সরঞ্জাম এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলো এখন নাগালের মধ্যে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস ডি-৮ নেতাদের একটি সমবায়ী শিক্ষা এজেন্ডা বিবেচনা করার আহ্বান জানান, যা তাদের জাতীয় অঙ্গীকারের পরিপূরক হতে পারে।

তিনি বলেন, যুব উদ্যোক্তাদের বিশ্বের মতই ‘কাজের বিশ্ব’ও যেভাবে দ্রুত বিকশিত হচ্ছে, ডি-৮ দেশগুলোকে তাদের ছেলে-মেয়েদের অর্থনীতির নেতা হওয়ার উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে নতুন ধরনের ‘শিক্ষা’ উদ্ভাবন করতে হবে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমাদের দেশগুলোর মহান ঐতিহ্য, প্রজ্ঞা ও কৃতিত্ব রয়েছে। আমাদের দেখতে হবে যে, কীভাবে আমরা সেগুলোর মধ্যে সমন্বয় করে নতুন কিছু গড়ে তুলতে পারি। বছরের পর বছর ধরে যে ডিজিটাল বিপ্লব চলছে, আমরা এখনও তার পুরো সুবিধা নিতে পারিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন যেহেতু এআই সুলভ হয়েছে, তাই আসুন আমরা আমাদের উদ্যোক্তা ছেলে-মেয়েদের সুবিধার জন্য এক্ষেত্রে বাধাগুলো মোকাবিলা করতে পারি কি না, তা ভেবে দেখি। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে, আমি আমাদের বিবেচনার জন্য দুটি নির্দিষ্ট পদক্ষেপ প্রস্তাব করতে চাই।’

 

একাত্তরের অমীমাংসিত সমস্যা মীমাংসা করুন, শেহবাজকে ড. ইউনূস

0

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইসলামাবাদের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে ১৯৭১ সালের অমীমাংসিত সমস্যাগুলো মীমাংসা করার আহ্বান জানিয়েছেন।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ১১তম ডি-৮ সম্মেলনের ফাঁকে মিসরের রাজধানী কায়রোর একটি হোটেলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বিষয়গুলো বারবার আসছে। আসুন আমরা সামনে এগিয়ে যেতে সেই বিষয়গুলোর ফয়সালা করি।’

জবাবে শরিফ বলেন, ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারত বিষয়গুলো মীমাংসা করেছে, কিন্তু যদি অন্যান্য অমীমাংসিত সমস্যা থাকে, তবে সেগুলো দেখতে পেলে তিনি খুশি হবেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিষয়গুলো চিরতরে সুরাহা করে ফেলা ভালো হবে।

তারা ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিদের বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে সম্মত হয়।এখানে প্রাপ্ত এক বার্তায় বলা হয়, দুই নেতা চিনিশিল্প এবং ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনার মতো নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারিত করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন।

অধ্যাপক ইউনূস ও শরিফ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত বৈদেশিক নীতির মূল বৈশিষ্ট্য সার্কের পুনরুজ্জীবনসহ পারস্পরিক স্বার্থ সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

২০০৬ সালের নোবেল শান্তি বিজয়ী ২০২৬ সালের মধ্যভাগের আগে ‘প্রয়োজনীয় সংস্কার’ এবং সাধারণ নির্বাচন করতে তার সরকারের পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, তিনি সংস্কারের বিষয়ে সংলাপের জন্য একটি ঐকমত্য গঠন কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

শরিফ বলেন, ‘আমরা সত্যিই আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার অপেক্ষায় রয়েছি।’

তিনি সার্ক পুনরুজ্জীবনে অধ্যাপক ইউনূসের উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং আঞ্চলিক সংস্থার শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

অধ্যাপক ইউনূস শরিফকে বলেন, ‘এটি একটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’

তিনি বলেন, ‘আমি সার্কের ধারণার একজন বড় অনুরাগী। আমি ইস্যুটি নিয়ে কথা বলেই যাব। আমি সার্ক নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন চাই। তিনি বলেন, যদিও তা কেবল একটি ফটো সেশনের জন্যও হয়, তবুও এটি একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করবে।’

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালিত চিনিকলগুলোকে আরও ভালোভাবে পরিচালনার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রস্তাব দেন।তিনি বাংলাদেশে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের কারণে মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন এবং বলেন, ঢাকা এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘প্রায় এক দশক আগে পাঞ্জাবে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইকে বিশ্বমানের বলে প্রশংসিত হয়েছিল। বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য আমরা বাংলাদেশে প্রতিনিধিদল পাঠাতে পারি।’

অধ্যাপক ইউনূস, শরিফকে তার সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং আশা করেন পাকিস্তান ও বাংলাদেশ এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী।

সিদ্দিকী পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দারকে ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শরিফও অধ্যাপক ইউনূসকে তার সুবিধামতো সময়ে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান।

 

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা নতুন করে তদন্তে হাইকোর্টের অভিমত : পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

0

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৭৯ পৃষ্ঠা করে পৃথক দুটি মামলার (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।

গত ১ ডিসেম্বর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও শিশির মনির।রায়ে এ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। বিচারিক আদালত এ মামলায় ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছিলেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাটি চালানো হয়। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে বেঁচে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। তবে হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে নিতে তৎকালীন সরকার নানা তৎপরতা চালায় বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল।

এরপর ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার মামলার তদন্ত নতুনভাবে শুরু করে। ২০০৮ সালে এ মামলায় প্রথমে ২২ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। পরে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে এ মামলার অধিকতর তদন্ত হয়। এরপর তারেক রহমানসহ আরও ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এ মামলায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। রায়ে ৪৯ জনকে সাজা দেওয়া হয়েছিল।

গ্রেনেড হামলা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের আগে অন্য একটি মামলায় মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়। এর আগে গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১১ সালে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন তিনি। অবশ্য পরে তা আদালতে প্রত্যাহার করেন বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৮ সালে মামলার সব নথিপত্র হাইকোর্টে এসে পৌঁছায়। এটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ‘ডেথ রেফারেন্স’ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। কোনো ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যে ১৯ আসামি খালাস পেয়েছেন

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, মাওলানা তাজউদ্দীন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ও মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত যে ১৯ আসামি খালাস পেয়েছেন

শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ ওরফের আবু ওমর, আবু হোমাইরা ওরফে পীরসাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমদ ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, আরিফ হাসান ওরফে সুজন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর ওরফে সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, মহিবুল মোত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন (পলাতক), আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন (পলাতক), মো. খলিল (পলাতক), জাহাঙ্গীর আলম বদর ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর (পলাতক), মো. ইকবাল (পলাতক), লিটন ওরফে মাওলানা লিটন (পলাতক), তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া (পলাতক), হারিছ চৌধুরী (পলাতক), কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (পলাতক), মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মুফতি আবদুল হাই (পলাতক) এবং রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে বাবু ওরফে রাতুল বাবু (পলাতক)।

 

ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

0

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আইডিএফ জানিয়েছে, ইয়েমেন থেকে উৎক্ষেপণ করা ক্ষেপণাস্ত্রটি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে ভূপাতিত করা হয়েছে। ফলে এটি ইসরায়েলের আকাশসীমায় প্রবেশ করেনি। দেশটির সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ভূপাতিত করা ক্ষেপণাস্ত্রের শার্পনেল পতিত হওয়ার কারণে সাইরেনব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভূপাতিত করা ক্ষেপণাস্ত্রের শার্পনেল রামাত গান এলাকায় পার্কিং করা গাড়ির ওপর পড়েছে। এতে বেশ কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইসরায়েলের মাগেন ডেভিড আদমের স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছে, একই এলাকার একটি স্কুলেও শার্পনেল পতিত হয়েছে। এতে সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

এর আগে দেশটিতে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলিয়েছে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরা। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হুতিরা সেন্ট্রাল ইসরায়েলকে নিশানা করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। গাজায় যুদ্ধ বন্ধ না হলে এ হামলা অব্যাহত রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।

টেলিভিশনে এক বার্তায় হুতিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি বলেন, প্যালেস্টাইন-২ নামে সোমবার একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে।

কেবল ইসরায়েলে হামলা নয়, লোহিত সাগরে দেশটির সংশ্লিষ্ট জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরা। মার্কিন সেনা সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ১০০টির বেশি জাহাজে হামলা চালিয়েছে হুতিরা। তাদের হামলার ভয়ে বেশিরভাগ জাহাজ কোম্পানি গুরুত্বপূর্ণ এই দুই নৌপথ এড়িয়ে গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছে। এতে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে পশ্চিমারা।

হুতিদের হামলার জবাবে বেশ কয়েকটি দেশের সমন্বয়ে একটি টহল জোট গঠন করে যুক্তরাষ্ট্র। এই জোট গঠন করেও ইরানপন্থি যোদ্ধাদের থামাতে না পেরে ইয়েমেনে হুতিদের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী। তবে হামলা করেও এখন পর্যন্ত তাদের থামাতে পারেনি পশ্চিমারা।