সোমবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৫
সোমবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৫
28 C
Dhaka

আয়ানের মৃত্যু: ইউনাইটেডের পরিচালক ও দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

0

রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুলে ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে ‍মৃত্যু হয়েছে শিশু আয়ান আহমেদের। তার মৃত্যুর ঘটনায় ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে মামলা করেছে পরিবার।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বাড্ডা থানায় মামলাটি করেন শিশুর বাবা মো. শামীম আহমেদ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন গাজী।

তিনি বলেন, শিশু আয়ানের বাবা মো. শামীম আহমেদ অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে মামলাটি করেন। মামলায় ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই চিকিৎসক ও পরিচালককে আসামি করা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে রয়েছেন এনেসথেসিয়া স্পেশালিস্ট ডা. সাইদ সাব্বির আহমেদ, হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. তাসনুবা মাহজাবিন। তবে হাসপাতালের পরিচালকের নাম জানা যায়নি।

শিশু আয়ানের বাবা শামীম বলেন, ‘আমরা অনেক বড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লড়ছি। কতটুকু সফল হবো জানি না। এ হাসপাতাল আমাদের বাসার কাছে, আর অনেক বড় প্রতিষ্ঠান দেখেই এখানে আসা। তারা আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। আগামীকাল মানববন্ধন করব, এরপর স্বাস্থ্য অধিদফতরে অভিযোগ জানাব।’

আয়ানের দাদা আবদুস সালাম কবীর বলেন, ‘আমরা এক কাপড়ে আছি গত ১০ দিন ধরে। আমার ফুটফুটে সুন্দর নাতিরে ওরা মেরে ফেলেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানাই, যেন তিনি আমাদের দিকে দেখেন। তিনি যাতে এর কোনো ব্যবস্থা নেন।’

এদিকে এ ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল ও মেডিকেল শাখার পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. মাঈনুল আহসান জানান, মুগদা জেনারেল হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধানের নেতৃত্ব চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটির অন্য তিন সদস্যের মধ্যে একজন মুগদা হাসপাতালের এনেসথেসিয়া বিভাগের বিশেষজ্ঞ, আরেকজন মুগদা হাসপাতালেরই সহকারী পরিচালক। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন সহকারী পরিচালকও রয়েছেন এ কমিটিতে।

একনজরে বিপিএলের ৭ দলের পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড

0

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দশম আসর মাঠে গড়াচ্ছে আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে। দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি এই টি-টোয়েন্টি লিগকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো দল গঠন করেছে।

বিপিএলের উদ্বোধনী দিনে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মুখোমুখি হবে দুরন্ত ঢাকা। ৭ দলের এই আসরে মোট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ৪৬টি। প্রায় দেড় মাসের এই আসরের পর্দা নামবে ১ মার্চ ফাইনালের মধ্য দিয়ে।

প্রত্যেক শুক্রবার দিনের ম্যাচ শুরু দুপুর ২টায়, রাতের ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়। শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৬ দিনই দিনের ম্যাচ শুরু হবে দুপুর দেড়টায়, রাতের ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। শুধু ফাইনাল ম্যাচের জন্য রাখা হয়েছে রিজার্ভ ডে।

এদিকে বিপিএলের এবারের আসরের ড্রাফটে ৭ ক্যাটাগরিতে মোট ২০৩ জন দেশি ক্রিকেটারকে রাখা হয়েছিল। আর ৫ ক্যাটাগরিতে বিদেশি ক্রিকেটার ছিলেন ৪৪৮ জন। এর আগে একজন দেশি এবং একাধিক বিদেশি ক্রিকেটারকে সরাসরি চুক্তিতে দলে ভেড়ানোর সুযোগ পেয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। এ ছাড়া গত আসর থেকে ৩ জন ক্রিকেটার করে ধরে রাখারও সুযোগ ছিল তাদের।

একনজরে দেখে নেয়া যাক, বিপিএলের দশম আসরে ৭ দলের পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড…

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স

রিটেইন ও ডিরেক্ট সাইনিং: লিটন দাস, মোস্তাফিজুর রহমান, তানভীর ইসলাম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, সুনীল নারাইন, তাওহিদ হৃদয়, মঈন আলী, আন্দ্রে রাসেল, ইফতিখার আহমেদ, জামান খান, খুশদিল শাহ, জনসন চার্লস, নুর আহমেদ, নাসিম শাহ, রশিদ খান।

ড্রাফট : মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, জাকের আলী, মাহিদুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন, রাকিম কর্নওয়াল, ম্যাথু ওয়াল্টার ফোর্ড, ইমরুল কায়েস, মুশফিক হাসান, এনামুল হক।

রংপুর রাইডার্স

রিটেইন ও ডিরেক্ট সাইনিং : নুরুল হাসান সোহান, শেখ মাহেদী হাসান, হাসান মাহমুদ, আজমাতউল্লাহ ওমরজাই, নিকলাস পুরান, সাকিব আল হাসান, বাবর আজম, এহসানউল্লাহ, মাথিশা পাথিরানা, ব্রেন্ডন কিং, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।

ড্রাফট : রনি তালুকদার, শামীম হোসেন, রিপন মণ্ডল, হাসান মুরাদ, মিশেল রিপন, ইয়াসির মোহাম্মদ, আবু হায়দার, ফজলে রাব্বি, আশিকুজ্জামান।

দুর্দান্ত ঢাকা

রিটেইন ও ডিরেক্ট সাইনিং : তাসকিন আহমেদ, আরাফাত সানি, শরীফুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন, চতুরঙ্গা ডি সিলভা, সায়েম আইয়ুব, উসমান কাদির।

ড্রাফট : সাইফ হাসান, ইফরান শুক্কুর, আলাউদ্দিন বাবু, মেহরব হোসেন, লাহিরু সামারাকুন, সাদিরা সামারাবিক্রমা, মোহাম্মদ নাঈম, সাব্বির হোসেন, জসিমউদ্দিন।

ফরচুন বরিশাল

রিটেইন ও ডিরেক্ট সাইনিং : মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজ, খালেদ আহমেদ, ইব্রাহিম জাদরান, তামিম ইকবাল, শোয়েব মালিক, পল স্টার্লিং, ফখর জামান, মোহাম্মদ আমির, আব্বাস আফ্রিদি, দুনিত ভেল্লালাগে।

ড্রাফট : মুশফিকুর রহিম, রকিবুল হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, সৌম্য সরকার, ইয়ানিক ক্যারিয়াহ, কামরুল ইসলাম, প্রিতম কুমার, তাইজুল ইসলাম, প্রান্তিক নওরোজ, দিনেশ চান্ডিমাল।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স

রিটেইন ও ডিরেক্ট সাইনিং : শুভাগত হোম, জিয়াউর রহমান, নিহাদউজ্জামান, শহীদুল ইসলাম, মোহাম্মদ হারিস, নাজিবউল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ হাসনাইন, স্টিভ এসকিনাজি।

ড্রাফট : তানজিদ হাসান তামিম, আল আমিন হোসেন, সৈকত আলী, ইমরানুজ্জামান, কার্টিস ক্যাম্ফার, বিলাল খান, শাহাদাত হোসেন, সালাউদ্দিন শাকিল।

খুলনা টাইগার্স

রিটেইন ও ডিরেক্ট সাইনিং : নাসুম আহমেদ, নাহিদুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান, এনামুল হক, এভিন লুইস, ফাহিম আশরাফ, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, শাই হোপ, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র।

ড্রাফট : আফিফ হোসেন, রুবেল হোসেন, পারভেজ হোসেন, হাবিবুর রহমান, কাসুন রাজিতা, দাসুন শানাকা, মুকিদুল ইসলাম, আকবর আলী, সুমন খান।

সিলেট স্ট্রাইকার্স

রিটেইন ও ডিরেক্ট সাইনিং : মাশরাফি বিন মুর্তজা, জাকির হাসান, তানজিম হাসান, নাজমুল হোসেন, রায়ান বার্ল, বেন কাটিং, হ্যারি টেক্টর।

ড্রাফট : মোহাম্মদ মিঠুন, রেজাউর রহমান, আরিফুল হক, ইয়াসির আলী, রিচার্ড এনগারাভা, দুশান হেমন্ত, নাজমুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, নাঈম ইসলাম, জাওয়াদ রোয়েন, সালমান হোসেন।

মূল্যস্ফীতি অর্থনীতির জন্য জরুরি: অর্থমন্ত্রী

0

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রতিবেশী যেকোনো দেশের তুলনায় ভালো আছে। তাঁর দাবি, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা ও নানা সংকটের মধ্যেও এ সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। মূল্যস্ফীতিকে অর্থনীতির জন্য জরুরি বলেও মনে করেন তিনি।

তাঁর মতে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও যথেষ্ট ভালো আছে। তবে রিজার্ভে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নিট বা গ্রস—উভয় হিসাবেই বাংলাদেশ ভালো অবস্থায় আছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) রিজার্ভের যে লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে, সেটা আমরা পূরণ করতে পারিনি। আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রা কখনো পূরণ করা যাবে না। দেশে যত প্রবাসী আয় আসে, তা দ্বিগুণ করা সম্ভব। এত টালমাটাল পরিস্থিতির পরও দেশের রিজার্ভ ২৫-২৬ বিলিয়ন ডলার। এ বছর আমরা তা কোনোভাবেই ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামতে দেব না। এটা সম্ভব।’

ব্যাংকের সুদহার বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘সুদহার আগের পর্যায়ে রেখে দিলে এখন তা ২২-২৪ শতাংশে উঠে যেত। তাতে আমাদের অর্থনীতি ও দেশের মানুষ হারিয়ে যেত, কিন্তু আমরা তা হতে দিইনি।’

কিন্তু সুদহার আবার বাড়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সুদহার বাড়ছে, তা ঠিক। বাজার যদি তা নিতে পারে, তাহলে কেন বাড়বে না? কিন্তু সুদহার যখন বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, সে সময় ছোট, মাঝারি, এমনকি বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে বেশি সুদ দেওয়া সম্ভব ছিল না। এরপর খেলাপি ঋণ বেড়ে গেলে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়িয়ে আমরা তা বাড়তে দিইনি। কিছু ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে বলে পত্রিকা থেকে জেনেছি, তা থাকবে না।’

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলেছে, ২০০৮ থেকে ২০২৩—এই ১৫ বছরে দেশের ব্যাংক খাত থেকে ছোট–বড় ২৪টি অনিয়মের মাধ্যমে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। এটিকে তারা অনিয়মের খুব ক্ষুদ্র চিত্র বলে উল্লেখ করেছে। এ বিষয়ে নতুন সরকারের কোনো পরিকল্পনা থাকবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন সরকার এখনো গঠিত হয়নি। ফলে এখনই এ বিষয়ে কিছু বলা সমীচীন হবে না।’

সিপিডির পরামর্শের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যখন দায়িত্ব নিই তখনই তাদের বলেছি, আপনারা এর মধ্যে আসবেন না। তারা বারবার বলেছে, ডিভ্যালু (টাকা অবমূল্যায়ন) করেন। তা না করলে টিকতে পারবেন না। আমরা সেটা শুনিনি। আমরা তো টিকে আছি! আমরা কি না খেয়ে আছি? বাজারে জিনিসপত্র তো পাওয়া যাচ্ছে। বাজার থেকে কোনো জিনিস অবিক্রীত ফেরত আসে?’

এ সময় মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গ তুললে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি অর্থনীতির জন্য জরুরি। যাঁরা অর্থনীতি নিয়ে ওইভাবে চিন্তা করেন না, তাঁরা মূল্যস্ফীতি না চাইতে পারেন। ৮–১০ বছরের মতো মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রেখেছি। এর চেয়ে ভালো আর হতে পারে না।’

নতুন সরকারের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ কী হতে পারে, সেই প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সেটা নতুন সরকার জানে। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকারের চ্যালেঞ্জ হবে অর্থনীতি। অর্থনীতিতে গুরুত্ব দেয়া হবে।’

 

সংসদের বিরোধী দল হচ্ছে কে

0
অনালাইন ডেস্ক । জনতা মেইল
অনালাইন ডেস্ক । জনতা মেইল

আওয়ামী লীগের নৌকা যে টানা চতুর্থবার জয়ের বন্দরে ভিড়তে যাচ্ছে, তা নিয়ে কোনো সংশয় কারো ছিল না। জল্পনা-কল্পনা ছিল দ্বিতীয় অবস্থান নিয়ে, সেখানে চমক দেখালেন আওয়ামী লীগেরই স্বতন্ত্ররা। বিএনপিসহ নিবন্ধিত ১৫টি দলের বর্জনের মধ্যে তুলনামূলকভাবে কম ভোটারের উপস্থিতিতে ‘শান্তিপূর্ণ’ নির্বাচনে আবারও দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আওয়ামী লীগ; ভোট হওয়া ২৯৮ আসনের মধ্যে ২২৩টি পেয়ে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। আর এবার নিয়ে টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন তিনি।

তবে ভোটের পর প্রাপ্ত ফল দেখে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে জাতীয় সংসদে বিরোধী দল কে হবে বা কারা হবে? এ পর্যন্ত ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনের বেসরকারি ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২২৩টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীনদের পর সবচেয়ে বেশি জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা, ৬১টি আসনে (যাদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের নেতা)। সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি জয় পেয়েছে ১১টি আসনে। আর অন্যান্য দলের মধ্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি জিতেছে একটি করে আসনে। প্রশ্ন হচ্ছে- সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এত কম আসনে জয়ী হওয়ায় বিরোধী দল কে হবে?

নির্বাচনের আগে অনেক নাটকীয়তা, দেনদরবার দেখেছে দেশবাসী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ২৬টি আসনে ছাড় পেয়েছিল জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা)। সব মিলে এবার ২৬৫টি আসনে প্রার্থী ছিল দলটির। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছাড় পাওয়া ২৬ আসনের ১১টিতে জিততে পেরেছেন জাপার প্রার্থীরা। সমঝোতার বাইরে কোনো আসনে দলের প্রার্থী জিততে পারেননি।

বর্তমানে দলটির ২৩ জন নির্বাচিত সংসদ সদস্য রয়েছেন। আর সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য রয়েছেন চারজন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কমে হয়েছে ১১।

আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ২৬ আসনে ছাড় পেলেও ভরাডুবি হয়েছে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির। ছাড়ের আসনে নৌকার প্রার্থী না থাকলেও ১৫টিতে স্বতন্ত্রদের বিরুদ্ধে হেরেছে লাঙ্গল। জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদেরসহ অন্তত চারজনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে সমঝোতার আসনে।

নির্বাচনের সকালে জি এম কাদের বলেছেন, ‘নির্বাচনে ডেকে এনে জাতীয় পার্টিকে কোরবানি দেওয়া হয়েছে।’

ফলে আগামী সংসদে আর দ্বিতীয় বৃহত্তম দল থাকছে না জাপা। লাঙ্গলের চেয়ে স্বতন্ত্রের এমপি বেশি হবে দ্বাদশ সংসদে। ফলে জাপা ফের বিরোধী দল হতে পারবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বহুবার বলেছেন, আওয়ামী লীগকে হারিয়ে তার দল সরকার গঠন করবে।

বিএনপিবিহীন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে ৩৪ আসন পেয়ে প্রথমবারের মতো প্রধান বিরোধী দল হয়েছিল জাপা। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে বিএনপির প্রায় চার গুণ ২২ আসন পেয়ে ফের বিরোধী দল হয় দলটি। এবারও বিএনপিবিহীন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে জাপা। কিন্তু ডামি প্রার্থীদের ভিড়ে দলটি পেয়েছে মাত্র ১১ জন সংসদ সদস্য।

প্রসঙ্গত, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৮টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। তার মধ্যে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ২৯৮টি আসনের ফলাফল বিশ্লেষন করে দেখা গেছে, তিনটি দলের প্রার্থীরা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। দল তিনটি হলো- আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও কল্যাণ পার্টি। বাকি ২৫টি দলের কোনো প্রার্থী জয়ের দেখা পাননি। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ২৮টি দলের মধ্যে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ ৩৯টি আসনে, ইসলামী ঐক্যজোট ৪২টি আসনে, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৩০টি আসনে, গণফোরাম ৯টি আসনে, গণফ্রন্ট ২১টি আসনে, জাকের পার্টি ২১টি আসনে, জাতীয় পার্টি ২৬৫টি আসনে, জাতীয় পার্টি-জেপি ১৩টি আসনে, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ৬৬টি আসনে, তৃণমূল বিএনপি ১৩৫টি আসনে, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) ১২২টি আসনে, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ ১০টি আসনে, আওয়ামী লীগ ২৬৬টি আসনে, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ৩৭টি আসনে, বাংলাদেশ কংগ্রেস ৯৬টি আসনে, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১৬টি আসনে, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ১১টি আসনে, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ৫টি আসনে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম ৫৬টি আসনে, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন ৩৮টি আসনে, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ ৫টি আসনে, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট ৪৫টি আসনে, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ৪টি আসনে, সুপ্রিম পার্টি ৭৯টি আসনে, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট ৬৩টি আসনে, ওয়ার্কার্স পার্টি ২৬টি আসনে, সাম্যবাদী দল ৪টি আসনে ও গণতন্ত্রী পার্টি ১০টি আসনে প্রার্থী দেয়। আর স্বতন্ত্র ৪৩৬ জনসহ নির্বাচনে ১৯৭১ জন প্রার্থী অংশ নেয়।

নতুন মন্ত্রিসভার শপথ বৃহস্পতিবার

0

টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দলের প্রধান হিসেবে পঞ্চমবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শেখ হসিনা।

সংসদের নবনির্বাচিত সদস্যরা বুধবার সকালে জাতীয় সংসদভবনে শপথ নেবেন। তারপর বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে হবে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ। ওইদিন সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের শপথ পড়াবেন।

বুধবার (০৯ জানুয়ারি) বিকেলে মন্ত্রিপিরষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আগামীকাল (বুধবার) সংসদ সদস্যদের শপথ। কেবিনেটের শপথ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে কারা মন্ত্রী হচ্ছেন তা এখনই বলা যাচ্ছে না। এ আয়োজনে ১৩-১৪শ’ মানুষকে দাওয়াত দেয়া হবে।

বুধবার সকাল দশটায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা শপথ নেবেন। শপথের পর দুপুর বারোটায় আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক হবে। সংসদীয় দলের বৈঠকে সংসদ নেতা নির্বাচিত করবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা।

এই আনুষ্ঠানিকতার পর সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।

সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেয়ার এখতিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের। নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার শপথ তিনিই পড়াবেন। আর শপথ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

শপথ অনুষ্ঠানে সাধারণত শপথ নিতে যাওয়া মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পরিবারের সদস্যরাও থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংবিধানিক সংস্থাগুলোর প্রধান, বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত থাকেন।

নতুন এমপিদের গেজেট প্রকাশ

0

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্যদের গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেন নির্বাচন কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. শরিফুল ইসলাম।

এর আগে, নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সংসদ সদস্যদের গেজেট অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে সেটি প্রকাশের জন্য সচিবকে বলা হয়েছে। কমিশনাররা স্বাক্ষর করেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখতে পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, ৩০০ আসনের মধ্যে নওগাঁ-২ আসনের প্রার্থী মারা যাওয়ায় নির্বাচন বাতিল করা হয়েছে। আসনটিতে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হবে। আর ময়মনসিংহের একটি কেন্দ্রে ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে। সেখানে ১৩ জানুয়ারি ভোট হবে। এ দুটি বাদে বাকি ২৯৮টি আসনের নির্বাচনী ফলাফল যাচাই-বাছাই করা হয়েছে, সব ঠিক আছে।

সবশেষ সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা-৪ আসনের ফলাফল স্থগিত ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। সে হিসেবে তিনটি আসন বাদে বাকিগুলোর গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।

এদিকে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথগ্রহণ বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন।

এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি সারাদেশে একযোগে ২৯৯টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ২৯৮ আসনের ফল বেসরকারিভাবে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগ ২২২টি আসনে বিজয়ী হয়েছে।

এবারের নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলে মোট প্রার্থী ছিলেন এক হাজার ৯৭১ জন।

ঢাকা-৪ আসনের নির্বাচনের ফল হাইকোর্টে স্থগিত

0

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের আওলাদ হোসেনের কাছে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম। এখন সেই ফলাফল হাইকোর্টে স্থগিত হয়ে গেছে।

সানজিদা খানমের রিটের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ স্থগিতাদেশ দেন।

আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সানজিদা খানমকে পরাজিত করে বিজয়ী হন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওলাদ হোসেন। আওলাদ হোসেন মোট ভোট পান ২৪ হাজার ৭৭৫টি। সানজিদা খানম নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট পান ২২ হাজার ৫৭৭টি। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা লাঙল প্রতীক নিয়ে পান ৭ হাজার ৭৯৮ ভোট।

ঢাকা-৪ আসনটি ঢাকা জেলার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৭, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪ নং ওয়ার্ড এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন শ্যামপুর থানা ও যাত্রাবাড়ীর আংশিক নিয়ে গঠিত।

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া সারা দেশে নির্বাচন হয়। নির্বাচন হয় ২৯৯ আসনে। ২৮টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলে প্রার্থী ছিলেন ১৯৭১ জন।

২৯৯টি আসনের মধ্যে ২২২টি আসন পেয়েছে আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৬২টি আসন, এছাড়া অন্যান্য দল থেকে পেয়েছেন ৩টি আসন। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৮টি দল নির্বাচনে অংশ নেয়।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছিল। তবে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়ের পর ভারত, চীন, রাশিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভূটান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, নেপাল, মরক্কো, ব্রাজিলের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানানো হয়। শেখ হাসিনাকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

অবশ্য ভিন্ন পথে হেঁটেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে মনে করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ ছিল না বলেও ভাষ্য ওয়াশিংটনের। আর নির্বাচনে সব দল অংশ না নেয়ায় মানুষের ভোট দেয়ার যথেষ্ট বিকল্প ছিল না বলে অভিমত যুক্তরাজ্যের।

দেশটি বলছে, গণতান্ত্রিক নির্বাচন নির্ভর করে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতার ওপর। মানবাধিকার, আইনের শাসন ও যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অপরিহার্য উপাদান। নির্বাচনের সময় এসব মানদণ্ড যথাযথভাবে মানা হয়নি। এছাড়া নির্বাচনে সব দল অংশ নেয়নি বলে বাংলাদেশের মানুষের ভোট দেওয়ার যথেষ্ট বিকল্প ব্যবস্থা ছিল না বলে দাবি করেছে যুক্তরাজ্য।

রাউজানের একই গ্রাম থেকে তিনজন এমপি নির্বাচিত 

0

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার একটি গ্রাম থেকে তিনজন এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা প্রত্যেকেই নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী। নির্বাচিত এই তিন সংসদ সদস্য হলেন চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি, বাকলিয়া) আসনে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং, পাহাড়তলী, হালিশহর) আসনে মহিউদ্দীন বাচ্চু।

এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি রাউজান পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের গহিরা গ্রামের বক্সে আলী চৌধুরী বাড়ি। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের বিরোধী দলীয় নেতা এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক আইন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম ফজলুল কবির চৌধুরীর ছেলে। এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসন থেকে ৭ম বার নৌকা প্রতীক পেয়ে ২০০১ সাল থেকে টানা পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

তিনি এবার ২ লাখ ২১ হাজার ৫৭২ ভোট পেয়ে ৪ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত করে বিশাল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট শফিউল আজম ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ১৫৯ ভোট।

ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের গ্রামের বাড়িও একই ওয়ার্ডের গহিরার বক্সে আলী চৌধুরীর বাড়ি। তিনি প্রয়াত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর বড় ছেলে। নওফেল এবার চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসন থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ৯৯৩ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন একই বাড়ির এবিএম ফজলে রশীদ চৌধুরীর সন্তান ব্যারিস্টার সানজিদ রশীদ চৌধুরী। তিনি জাতীয় পাটির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১ হাজার ৯৮২ ভোট। তার বাড়িও একই গ্রামে।

মহিউদ্দিন বাচ্চুর গ্রামের বাড়ি হলেন একই ওয়ার্ডের একই গ্রামের রকিব উদ্দিন মুন্সির বাড়ি। তিনি এই বাড়ির রেলওয়ে কর্মকর্তা বি.কম হারুনের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং, পাহাড়তলী, হালিশহর) আসনে ৫৯ হাজার ২৪ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মত জয় লাভ করেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ মনজুর আলম। তিনি ফুলকপি প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৫৩৫ ভোট। এই তিন সংসদ সদস্যের পৈতৃক ভিটা একই ওয়ার্ডের হওয়ায় এই এলাকার মানুষদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। এটা তারা গর্বের বিষয় মনে করেন। তারা প্রত্যাশা করেন টানা পঞ্চমবারের মত নির্বাচিত সংবাদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এবারের মন্ত্রীসভায় স্থান পাবেন।

বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা

0

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়লাভের পর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন তিনি। এরপর বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্ট নিহত স্বজনদের কবর জিয়ারত করেন শেখ হাসিনা।

এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরদিন সোমবার (৮ জানুয়ারি) বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের পাশাপাশি দেশের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। গণভবনের সবুজ লনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান সংবাদ সম্মেলনে রূপ নেয়। এসময় বিদেশি সাংবাদিকদের নানান প্রশ্নের জবাব দেন শেখ হাসিনা।

রোববার (৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ২৯৯ আসনে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও পরে একটিতে বাতিল করা হয়। ভোটগ্রহণ শেষে ২৯৮ আসনের ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এতে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয় ২২২টি আসনে, স্বতন্ত্র বিজয়ী হয় ৬২টিতে, জাতীয় পার্টি ১১টি আসনে এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জয়ী হয় একটি আসনে।

নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথগ্রহণ বৃহস্পতিবার

0

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটে নির্বাচিত নতুন সংসদ সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান আগামী বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে। নবনির্বাচিতদের বরণ করতে জাতীয় সংসদ সচিবালয় এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সোমবার (৮ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ সচিবালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, মঙ্গলবারের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদে নবনির্বাচিতদের তালিকা বা ফল সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করবে ইসি। গেজেট প্রকাশ হলে আইন অনুযায়ী তিন দিনের মধ্যে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথগ্রহণ করতে হবে নতুন সংসদ সদস্যদের।

সূত্র আরও জানায়, দ্বাদশ সংসদের নতুন সংসদ সদস্যদের শপথ পাঠ করাবেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এমপিদের শপথের আগে নতুন সংসদ সদস্য হিসেবে প্রথমে শিরীন শারমিন নিজেই শপথ নেবেন। এরপর তিনি অন্যদের শপথ পাঠ করাবেন। ওই শপথ অনুষ্ঠানের পরই আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভা অনুষ্ঠিত হবে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী রংপুরে আছেন জানিয়ে সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী রংপুরে আছেন। স্পিকার মঙ্গলবার অথবা বুধবার ঢাকায় আসবেন।

এদিকে বুধবার (১০ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত হবে। এদিন সরকার দলের অনেক কর্মসূচি আছে, সেজন্য বৃহস্পতিবার শপথ পাঠ করানো হতে পারে।

শপথগ্রহণের ৩০ দিনের মধ্যে অধিবেশন ডাকতে হয়। তবে ভোটের কত দিনের মধ্যে গেজেট হবে, সে বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।