ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে জিতলেও দ্বিতীয়টিতে হেরে যায় বাংলাদেশ। ফলে তৃতীয় এবং শেষ ম্যাচটিই হয়ে দাঁড়িয়েছে সিরিজ নির্ধারণী। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে টসে হেরে আগে বল করতে নামে টাইগাররা। বল হাতে শুরুতেই দুই লঙ্কান ওপেনারকে ফিরিয়ে দুর্দান্ত সূচনা এনে দিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ, পরে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিলেন মোস্তাফিজ-মিরাজ-রিশাদরা, ফলে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে লঙ্কানরা। তবে ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে আজ সফরকারীদের হয়ে একাই লড়াই করেছেন জানিথ লিয়ানাগে। টাইগার বোলারদের তোপের মুখে দারুণ এক ফিফটিতে দলের বিপর্যয় সামলেছেন তিনি, একই সঙ্গে অষ্টম উইকেটে মাহেশ থিকসানার সঙ্গে গড়েন ৬০ রানের জুটি। লঙ্কান এই ব্যাটার শেষ পর্যন্ত তুলে নিয়েছেন নিজের ব্যক্তিগত শতকও। তাঁর ১০১ রানের ইনিংসের সুবাদেই নির্ধারিত ৫০ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ২৩৫ রানের সংগ্রহ গড়ে লঙ্কানরা।
টসে হেরে টাইগারদের হয়ে বল হাতে ইনিংসের সূচনা করেন শরিফুল ইসলাম। টাইগার পেসারের করা প্রথম ওভারে স্কোরবোর্ডে ১ রান যোগ করতে সক্ষম হয় দুই লঙ্কান ওপেনার। এরপর দ্বিতীয় ওভারে বল করতে আসেন আরেক পেসার তাসকিন। তাসকিনের করা দ্বিতীয় ওভারের প্রথম দুইটি বল দেখেশুনেই খেলেছিলেন আগের ম্যাচে শতক হাঁকানো লঙ্কান ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। তবে তৃতীয় বলেই লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন তিনি। ফলে ফিরতে হয়েছে ১ রানেই।
এদিকে নিজের করা দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে আরেক লঙ্কান ওপেনার আভিস্কা ফার্নান্দোকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন। চতুর্থ ওভারে টাইগার স্পিডস্টারের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে আউট হন ফার্নান্দো।
ফার্নান্দো ফেরার পর ক্রিজে মেন্ডিসের সঙ্গী হন সাদিরা সামারাবিক্রমা। দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর এ দুজন মিলে ইনিংসের হাল ধরেন। দুজন মিলে গড়েন ২৬ রানের জুটি। তবে একাদশ ওভারে বোলিংয়ে এসেই সামারাবিক্রমাকে সাজঘরে ফেরান মোস্তাফিজ। টাইগার এই পেসারের বলে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসবন্দী হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন লঙ্কান এই ব্যাটার।
এরপর ক্রিজে অধিনায়ক মেন্ডিসের সঙ্গী হন চারিথ আসালাঙ্কা। এ দুজন মিলে টাইগার বোলারদের দেখেশুনে খেলে গড়েছিলেন ৩৩ রানের জুটি। তবে অষ্টাদশ ওভারে নিজের প্রথম বলেই মেন্ডিসকে সাজঘরের পথ দেখান রিশাদ। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তাঁর প্রথম এটি। তরুণ এই লেগ স্পিনারের বলে সাজঘরে ফেরার আগে ৫১ বল খেলে ২৯ রান করেছেন মেন্ডিস।
মেন্ডিস ফেরার পর ক্রিজে আসালাংকার সঙ্গী হন জানিথ লিয়ানাগে। এ দুজন মিলে টাইগার বোলারদের দেখেশুনে খেলে সচল রেখেছিলেন রানের চাকা। দুজন মিলে জুটি গড়ে স্কোরবোর্ডে তুলেন ৪৩ রান। তবে পচিশতম ওভারে মোস্তাফিজের দ্বিতীয় শিকার হয়ে উইকেটরক্ষকের মুঠোবন্দী হন আসালাঙ্কা। দলীয় ১১৭ রানে সাজঘরে ফেরার আগে ৪৬ বল খেলে ৫ চারে ৩৭ রান করেছেন লঙ্কান এই ব্যাটার।
এরপর ব্যাট করতে নেমে দুনিথ ওয়াল্লালেগেও ফিরেছেন দ্রুতই। মিরাজের বলে সৌম্য সরকারের মুঠোবন্দী হন তিনি। লঙ্কান এই ব্যাটারকে ফেরানোর পর হাসারাঙ্গাকেও সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন মিরাজই।
এদিকে একপ্রান্তে যাওয়া-আসার খেলা চলতে থাকলেও অপরাপ্রান্তে আজ লঙ্কানদের হয়ে বিপর্যয় সামলেছেন লিয়ানাগে। দলীয় ৭৪ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর ক্রিজে নামেন তিনি। এরপর একে একে তিনি জুটি গড়েছেন আসালাঙ্কা, ওয়াল্লালেগে, হাসারাঙ্গা এবং থিকসানার সঙ্গে। টাইগার বোলারদের সামলে ৬৫ বলে তুলে নিয়েছেন নিজের ব্যক্তিগত অর্ধশতক।
অষ্টম উইকেটে থিকসানাকে সঙ্গে নিয়ে আজ দারুণ এক জুটি গড়েন লিয়ানাগে। দুজন মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৬০ রান। এই জুটিতেই ম্যাচে ফিরে লঙ্কানরা। তবে ৪৮ ওভারে সৌম্যর বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন থিকসানা। তবে শেষ পর্যন্ত আজ অপরাজিত ছিলেন লিয়ানাগে, দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তুলে নিয়েছেন নিজের অর্ধশতকও। তাঁর ১০১ রানের ইনিংসের সুবাদেই অলআউট হওয়ার আগে ২৩৫ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। টাইগারদের হয়ে আজ বল হাতে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ, ২টি করে উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান এবং মেহেদী মিরাজ।