কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বন্ধুত্বপূর্ণ একটি বৈঠকের অল্প কিছু দিন পর ট্রাম্পের অবস্থানের এমন আকস্মিক পরিবর্তন ঘটল। খবর এএফপির।
এ বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি এই বিজ্ঞাপনটিকে ভুয়া হিসেবে অভিহিত করে দাবি করেন, ওই বিজ্ঞাপনে শুল্ক নীতি নিয়ে কথা বলার সময় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানকে ভুলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে।
ট্রাম্প অভিযোগ করেন, কানাডার অন্টারিও প্রদেশের ওই বিজ্ঞাপনটি যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রচারের জন্য নির্মিত এবং তা বৈশ্বিক শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আসন্ন রায়ে ‘হস্তক্ষেপ’ করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার পোস্টে বলেন, ‘গুরুতর অসদাচরণের ভিত্তিতে কানাডার সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্য আলোচনার সমাপ্তি ঘোষণা করা হলো।’
তাৎক্ষণিকভাবে কানাডার কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি গত বুধবার এক বাজেট বক্তৃতায় বলেছিলেন, ওয়াশিংটনের বাণিজ্য নীতির মোৗলিক পরিবর্তনের কারণে অটোয়ার অর্থনৈতিক কৌশল পরিবর্তন করা প্রয়োজন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, রোনাল্ড রিগ্যান ফাউন্ডেশন সম্প্রতি এক ঘোষণায় বলেছে, কানাডা একটি বিজ্ঞাপন জালিয়াতি করে ব্যবহার করেছে, যাতে দেখানো হয়েছে রোনাল্ড রিগ্যান শুল্কের বিষয়ে নেতিবাচক কথা বলছেন।
রিগ্যান ফাউন্ডেশন আরও জানায়, ১৯৮৭ সালের একটি ভিডিও ও অডিও ব্যবহার করে তৈরি বিজ্ঞাপনটি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তারা আইনি দিকগুলো খতিয়ে দেখছে।
এই বিজ্ঞাপনটিতে রোনাল্ড রিগ্যানের ভাষণের এমন কিছু উক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল, যেখানে তিনি বিদেশি আমদানির ওপর উচ্চ শুল্কের কারণে মার্কিন অর্থনীতির ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, সে সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সম্পর্কের এই সর্বশেষ নাটকীয় মোড়টি এমন সময়ে এলো, যখন কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নি কড়া মার্কিন শুল্ক শিথিল করার অনুরোধ জানাতে মাত্র দুই সপ্তাহ আগেই হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
সেই সাক্ষাতে ট্রাম্প কার্নিকে ‘বিশ্বমানের নেতা’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন এবং বলেছিলেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী তাদের আলোচনা থেকে ‘খুব খুশি হয়ে বিদায় নেবেন’।
ট্রাম্পের বৈশ্বিক আঞ্চলিক শুল্ক—বিশেষ করে ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং গাড়ির ওপর আরোপ করা শুল্ক কানাডার অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এর ফলে কানাডায় চাকরিচ্যুতির ঘটনা ঘটছে এবং ব্যবসার ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে।


