আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) উদ্বোধনী দিনে মাঠে গড়াবে দুটি ম্যাচ। বেলা ৩টায় প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে
স্বাগতিক সিলেট টাইটান্স ও রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। এরপর দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে বিসিবি পরিচালিত চট্টগ্রাম রয়্যালস ও নোয়াখালী এক্সপ্রেস। এ ম্যাচটি শুরু হবে রাত পৌনে ৮টায়।
বিপিএল শুরুর ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে বড় ধাক্কা হয়ে এসেছিল চট্টগ্রাম রয়্যালসের মালিকানা ইস্যু। গতকাল সকালে আর্থিক কারণে দল পরিচালনায় অপারগতা প্রকাশ করে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। দ্রুততম সময়ে দলটির দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয় বিসিবি। আপাতদৃষ্টিতে এটি বড় সংকট মনে হলেও, বিপিএলের জন্য এটি ‘শাপে বর’ হয়েই এসেছে। চট্টগ্রামকে নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ও সমালোচনা ঘুরপাক খাচ্ছিল, বিসিবির অধীনে অন্তত সেটির অবসান ঘটল।
বিপিএলে ভালো মানের কমেন্ট্রি নিয়ে একটা সমালোচনা থাকেই। সেটিতেও এবার নজর দিয়েছে বিসিবি। প্রথমবার বিপিএলে মাইক্রোফোন হাতে নেবেন পাকিস্তানের সাবেক তারকা ওয়াকার ইউনুস। সেই সঙ্গে ড্যারেন গফ, ড্যানি মরিসন, স্যামুয়েল বদ্রিদের মতো বিখ্যাত সব নাম তো আছেই। এছাড়াও এবার হোস্ট হিসেবে দেখা যাবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের পরিচিত মুখ জয়নব আব্বাস আর রিধিমা পাঠককে।
নিরাপত্তা ইস্যুর কারণে বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হয়েছে বিসিবিকে। শুরুতে ঢাকায় বড় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করতে চাইলেও নিরাপত্তার কারণে সেটি করতে পারেনি। এরপর জানানো হয়েছিল, কোনো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করতে চায় না বিসিবি। পরে আবার জানানো হয়, খেলা শুরুর আগে ছোট্ট পরিসরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। যেখানে পারফর্ম করবেন দেশি তারকারা।
গত আসরে তুমুল আলোচনায় ছিল ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ। বিসিবি প্রমাণও পেয়েছে সে বিষয়ে। এমন ঘটনা বিপিএলকে নিয়ে তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সেই সঙ্গে ছিল পারিশ্রমিক বিতর্ক। এবারের আসরে এই দুইয়ে বিশেষ নজর বিসিবির। ম্যাচ পাতানো আটকাতে প্রতিটি দলের সঙ্গে রাখা হবে সিআইডি সদস্য। এছাড়াও বিসিবি ও আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী ইউনিট কাজ করবে।
দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিপিএল মাঠে গড়ানো নিয়েই একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিয়ে উঠছিল বড় প্রশ্ন। সেসব অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে বিসিবি। সিলেট পর্ব দিয়ে শুরু হচ্ছে এবারের বিপিএল। এরপর পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকায় ফিরবে বিপিএল। ২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে সিলেট পর্ব। এরপর ৫ থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত খেলা হবে চট্টগ্রামে। ঢাকায় আসবে ১৫ জানুয়ারি।
বিপিএলের গত আসরে সাতটি দল থাকলেও এবার কমেছে দলের সংখ্যা। ছয় দলকে নিয়ে শুরু হচ্ছে বিপিএলের দ্বাদশ আসর। ২৬ ডিসেম্বর শুরু হয়ে বিপিএলের পর্দা নামবে ২৩ জানুয়ারী শিরোপা উঁচিয়ে ধরার মাধ্যমে। মাঝে তিন শহরে খেলা হবে মোট ৩৪টি ম্যাচ। প্লে-অফ এবং ফাইনালের জন্য রাখা হয়েছে রিজার্ভ ডে।
গত কয়েক আসরে বিপিএলের সম্প্রচার নিয়ে দর্শকদের মাঝে ক্ষোভ ছিল অনেক। সমালোচনার তীর ছিল সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান রিয়াল ইম্প্যাক্টের দিকে। সেখানেও পরিবর্তন এসেছে এবার। নতুন করে বিপিএল সম্প্রচারের দায়িত্বে পেয়েছে টিপিটি নামক প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে দামী প্রযুক্তির সব ক্যামেরা সেটআপ নিয়ে এসে ভালো মানের সম্প্রচারের আশা দেখাচ্ছে তারা। পরিবর্তন এসেছে বিপিএলে ট্রফিতেও। দর্শকদের কথিত হ্যারিকেন সাদৃশ্য ট্রফি বদলে এবার দেখা যাবে নতুন ট্রফি।
গত আসরে অফলাইন এবং অনলাইন—দুই মাধ্যমেই বিক্রি করা হয়েছিল টিকিট। অফলাইন টিকিট কিনতে গিয়ে দেখা গিয়েছিল চরম বিশৃঙ্খলা। এবার সেখান থেকে সরে এসে শুধুমাত্র অনলাইনে বিপিএলের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। যেখানে সর্বনিম্ন ২০০ টাকায় দেখা যাবে বিপিএল আর টিকিটের সর্বোচ্চ মূল্য দুই হাজার টাকা।


