ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্ব এবং দেশটির ‘স্বাধীন’ পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আজকের দুনিয়ায় এমন স্বাধীনচেতা পররাষ্ট্রনীতি এত সহজ নয় বলেও মন্তব্য করেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) ‘রাশিয়ান স্টুডেন্ট ডে’ উপলক্ষে কালিনিনগ্রাদ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে মোদি এবং ভারতের নানা প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি।
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির হারে পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর মধ্যে ভারত অন্যতম এবং এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বগুণের জন্য। তাঁর নেতৃত্বের মেয়াদেই ভারত এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে।’
রুশ প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, রাশিয়া নির্দ্বিধায় ভারতের ওপর নির্ভর করতে পারে। কারণ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নয়াদিল্লি কখনোই রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো খেলায় অংশ নেবে না।
পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, ‘ভারত একটি স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির বাস্তবায়ন করেছে, আজকের দুনিয়ায় যা সহজ নয়। কিন্তু ১৫০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারতের এটি করার অধিকার রয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রী মোদির আমলেই এই বোধোদয় হয়েছে।’
যৌথভাবে কাজ করার জন্য ভারতের এ ধরনের পররাষ্ট্রনীতি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করেন পুতিন। কারণ, এর মাধ্যমে অংশীদারত্ব ও যৌথ কাজের দীর্ঘ মেয়াদ নিশ্চিত হয়।
ভারতের সঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাশিয়ার কোনো কূটচালের সম্পর্ক নেই বলেও জানান পুতিন। তিনি মোদি সরকারের ‘ভারতে তৈরি’ উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন। পুতিন জানান, মোদির নেতৃত্বের অধীনে ভারত বিপুল উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ভারতকে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার কথাও তুলে ধরেন পুতিন।
পুতিন জানান, ভারতের সবচেয়ে বড় বিদেশি বিনিয়োগ রাশিয়ার। রোজনেফ্ট তেল শোধনাগার, গ্যাস স্টেশনগুলোর একটি নেটওয়ার্ক, একটি বন্দরসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে ভারতে ২৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে রাশিয়া।
ভারতের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যেরও প্রশংসা করেন পুতিন। রাশিয়ায় ভারতীয় সিনেমার জনপ্রিয়তার প্রসঙ্গও টানেন। তিনি বলেন, ‘ভারতের মহান সংস্কৃতি বৈচিত্র্যময় এবং রঙিন। পৃথিবীজুড়ে যে গুটিকয়েক দেশের জাতীয় টেলিভিশনে ভারতীয় সিনেমা দেখানো হয় তার মধ্যে রাশিয়া অন্যতম।’
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা গেছে, গত ২৫ থেকে ২৯ ডিসেম্বর রাশিয়ায় সফর করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এ সময় দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি বিনিয়োগ চুক্তিও স্বাক্ষর করা হয়। এসব চুক্তির মধ্যে রুশ অর্থায়নে ভারতে কুদানকুলাম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প অন্যতম।