চেন্নাইয়ের জার্সিতে পাওয়ার প্লে কিংবা ডেথ ওভারে দুর্দান্ত ছিল তার বোলিং। প্রতিপক্ষের শক্তি বিবেচনা করে তাকে বেশ ভালোভাবে ব্যবহার করেছে ফ্রাঞ্চাইজিটি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশ কি পারবে কাটার মাস্টারকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে?
প্লে-অফের সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত আইপিএলের দলগুলো। আর একটু বেশি খারাপ অবস্থায় রয়েছে মোস্তাফিজের চেন্নাই সুপার কিংস। ১০ দলের আসরে পয়েন্ট টেবিলের পাঁচে নেমে গেছে আইপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ পাঁচবারের শিরোপা জয়ীরা।
দলের এমন অবস্থায় চেন্নাই সুপার কিংসকে ছেড়ে আসতে হলো মোস্তাফিজকে। কারণ তার সামনে জাতীয় দলের দায়িত্ব। যে কোনো ক্রিকেটারের জন্য আগে দেশ। কাটার মাস্টারের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির লক্ষ্যে মোস্তাফিজের জন্য কোনটি ভালো, জিম্বাবুয়ে সিরিজ নাকি আইপিএল? সকলে আইপিএলকে ভোট দিলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মত ভিন্ন।
জাতীয় দলের ডিউটির কারণে দারুণ ছন্দে থাকা বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসারের সার্ভিস পাবে না চেন্নাই। কাটার মাস্টারকে কতটা মিস করবে চেন্নাই। দলটির হেড কোচ স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের মন্তব্যে সব কিছু পরিষ্কার। তার ভাষ্য মোস্তাফিজকে না পাওয়া তাদের জন্য হতাশার।
বল হাতে মোস্তাফিজের জাদু দেখার দিন শেষ হয়ে গিয়েছিল। নিজের চেনা ছন্দ হারিয়ে ধুঁকছিলেন টাইগার পেসার। সবশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩ ম্যাচে শিকার করেছিলেন মাত্র ২ উইকেট। ওভারপ্রতি রান দেন ১০.৯১। আর শেষ ১০ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তার উইকেট মাত্র ৭টি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে।
মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখে মোস্তাফিজ বুঝেছেন প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে ভাঙতে হবে নিজেকে। পরিবর্তন আনতে হবে অনেক কিছুর। চেন্নাইয়ের হলুদ জার্সিতে দেখা মেলে সেই পরিবর্তনের ছাপ।
আইপিএলে নতুন কিংবা পুরোনো দুই বলেই কার্যকর ছিলেন মোস্তাফিজ। যে দৃশ্যটা বাংলাদেশের সমর্থকদের জন্য ছিল বেশ সুখকর। চলতি আসরের পরিসংখ্যান বলছে ৩৪.২ ওভার বল করে ডট দিয়েছেন ৪৮ শতাংশ।
১৪ উইকেটের ৮টি পেয়েছেন তার মূল শক্তি স্লোয়ারে। স্লোয়ার ডেলিভারির ৪৮ শতাংশ পড়েছিল ভালো লেংথে। চলতি আইপিএলে আদায় করেন প্রথম মেডেন। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বাজে বোলিং করলেও মোস্তাফিজের ওপর আস্থা ছিল চেন্নাইয়ের।
বাদ দেওয়া হয়নি একবারও। সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি কিংবা বর্তমান অধিনায়ক ঋতুরাজ গায়কোয়ড় দুজনই নির্দেশনা দিয়েছেন প্রয়োজনমাফিক। বারবার দিয়েছেন অনুপ্রেরণা।
এমনকি অফুরন্ত ভালোবাসা পেয়েছেন চেন্নাইয়ের দর্শকদের কাছ থেকে। প্রশ্ন হচ্ছে এসবে লাভ কী বাংলাদেশের? নির্ভার-আত্মবিশ্বাসী এক মোস্তাফিজে উপকৃত হবে বাংলাদেশ দল।
নতুন কিংবা পুরোনো বলে জাদুকরী বোলিং পেতে চেন্নাই দেখিয়েছে কীভাবে ব্যবহার করতে হবে মোস্তাফিজকে! কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে চেন্নাইয়ের মতো মোস্তাফিজ নামক জাদুকরকে কি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারবে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজম্যান্ট?