বাংলা নববর্ষ বরণের উৎসবে শামিল হতে প্রতি বছরই পহেলা বৈশাখে রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ভিড় করেন সাধারণ মানুষ। এছাড়া পাড়া-মহল্লায়ও দেখা যায় নববর্ষের নানা রকম অনুষ্ঠান। এবারও ব্যতিক্রম নয়। ঈদের ছুটির কারণে অনেকে গ্রামে। এরপরও নগরবাসী সাদা-লালসহ নানা রঙের দেশি পোশাক পরে ছুটে আসেন শাহবাগ এলাকার দিকে।
রবিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সোয়া ৬টায় রমনা বটমূলে বাংলা নতুন বছর ‘নববর্ষ ১৪৩১’-কে সুরে সুরে স্বাগত জানানো হয়। ছায়ানটের এই আয়োজনে অংশ নেন দেশের ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সকাল সোয়া ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে অনুষদের সামনে থেকে নববর্ষ শোভাযাত্রা শুরু হয়। এরপর শাহবাগ মোড় ঘুরে রমনা ঢাকা ক্লাবের সামনে দিয়ে শিশুপার্কের মোড় ঘুরে আবার শাহবাগ হয়ে টিএসসি চত্বর ঘুরে আবার চারুকলা অনুষদের সামনে এসে শেষ হয় বর্ণাঢ্য এই শোভাযাত্রা। এতে অংশ নেন হাজারো উৎসবপ্রেমী। তাদের অনেকে বাংলার লোকসংস্কৃতির বিভিন্ন উপকরণ, গ্রামীণ জীবনের অনুষঙ্গ, পশুপাখি, ফুলসহ নানা প্রতীক ও রকমারি মুখোশ হাতে নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। কেউ কেউ নেচে-গেয়ে উল্লাস করেন।
তবে নববর্ষ বরণের এই আয়োজন দুটি সকাল ১০টার পরপরই শেষ হয়ে যায়। এরপর শাহবাগ, রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পহেলা বৈশাখে ঘুরতে বের হওয়া সাধারণ মানুষের আনাগোনা বাড়ে। তবে অতীতের তুলনায় এ বছর সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল কম ছিল। উৎসবকে কেন্দ্র করে আয়োজনও ছিল কম। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কিছু ভ্রাম্যমাণ চটপটি-ফুচকার দোকানসহ অন্যান্য কিছু ভাজাপোড়া খাবারের দোকান ছিল। উদ্যানের দুই জায়গায় সাপের খেলা দেখানোর জন্য বসলেও মূলত ওষুধ বিক্রি ছিল লক্ষ্য। লোকজন ছিল কম। উদ্যানের ভেতরে লালন গানের আসর বসছে। এছাড়া টিএসিতে স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠনের নানা আয়োজন হয়।
এদিকে রমনায় মানুষের কিছুটা ভিড় দেখা গেলেও অন্যান্য বছরের তুলনায় তা কম বলে মনে করেন উৎসব উদযাপন করতে আসা মানুষরা।
গরমের কারণে অনেকে বের হতে চাচ্ছেন না বলে মনে করেন রমনায় আসা মাহাবুব আলম। তিনি বলেন, বৈশাখী উৎসব পুরোটাই বাঙালির নিজস্ব। অন্য কোনও সংস্কৃতির এখানে জায়গা নেই। এমন একটি আয়োজনে অংশ নিলে নিজের ভেতরের বাংলা সত্তার অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
মঙ্গল শোভাযাত্রার পর চারুকলা অনুষদের ভেতরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে এই আয়োজন।