কয়লার মজুত শেষ হওয়ায় মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, চলতি নভেম্বরের শেষ দিকে বিদেশ থেকে কয়লা এলে এ সংকটের নিরসন হবে।ইতোমধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে কয়লা আমদানির জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান।
জানা গেছে, আওয়ামী সরকারের সময়ে ঋণ নির্ভর যে কয়টি মেগা প্রকল্প নেওয়া হয় তারমধ্যে অন্যতম মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র। কয়েক দফায় ব্যয় বেড়ে বর্তমানে ৫৬ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ানো এই প্রকল্প আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প নানা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের দুটি কেন্দ্র ২০২৩ সালের জুলাই ও ডিসেম্বরে দু’দফায় চালু হয়। কেন্দ্রগুলো কমিশনিং করার জন্য জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে আনা হয় ২২ লাখ ৫ হাজার টন কয়লা। চুক্তি অনুযায়ী, সুমিতমো করপোরেশন কয়লার সর্বশেষ সরবরাহ দেয় বিগত আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে। তাদের সরবরাহ করা কয়লা গত সপ্তাহে শেষ হয়ে যায়।
নিয়ম অনুযায়ী সুমিতমোর সরবরাহ করা কয়লা শেষ হওয়ার আগেই কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কয়লা কেনার কথা থাকলেও শীর্ষ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণে কয়লা কেনা আটকে যায়। পরে তা আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পে তিন বছরের কয়লা সরবরাহের জন্য কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ মেঘনা গ্রুপের ইউনিক সিমেন্ট কনসোর্টিয়ামকে বেআইনি সুবিধা দিতে ১০ মাস দেরি করে। শেষ পর্যন্ত অনিয়মের অভিযোগ তুলে কনসোর্টিয়াম অব বসুন্ধরা, ইকুইন্টিয়া ও অথ্রোর আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট কয়লা আমদানিতে ৬ মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয় গত জুলাই মাসে। সেই আদেশটি পরে উচ্চ আদালতে স্থগিত করা হলেও দীর্ঘমেয়াদে কয়লা আমদানি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে কয়লা আমদানি অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, আইনগত বিষয়গুলো তাদের ঢাকা হেড অফিস থেকে দেখা হচ্ছে, তাই সেই বিষয়ে তারা জানেন না।
কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের এ প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান জানান, কিছু মেন্টেইনেন্সের কাজ চলছে আর কয়লা সংকট, এ দুটি কারণে গত বৃহস্পতিবার থেকে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সংকট কাটাতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে নভেম্বর শেষে কিংবা ডিসেম্বরের প্রথম দিকে কয়লা আমদানির বিদ্যুৎ প্রকল্পে উৎপাদন শুরু করা হবে। ইতোমধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে কয়লা আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।