২২ আগষ্ট শুক্রবার রাতে নিহতের মা খদিজা বেগম বাদী হয়ে ফটিকছড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে নাজিম উদ্দিনকে। এছাড়াও মো. নোমান, মো. আজাদ হোসেন, মো. তৈয়ব ও মহি উদ্দীনসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে, আরও ৫-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এলাকায় এখনো চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানান স্থানীয়রা।
ময়নাতদন্ত শেষে নিহত মাহিনের মরদেহ শুক্রবার রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিজ বাড়িতে এনে রাতেই জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।
নিহতের মরদেহ বাড়িতে আনা হলে, শেষবারের মতো মাহিনকে দেখতে ভিড় করেন অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও এলাকাবাসী।
নিহতের পিতা মোহাম্মদ লোকমান আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, আমার ছোট্ট নিষ্পাপ সন্তানকে আমার চোখের সামনেই এলাকার কয়েকজন যুবক পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি বারবার তাদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছি, কিন্তু তারা সেই ভিক্ষাটুকুও দেয়নি। তারা কি মানুষ? আমি আমার সন্তানকে আর ফিরে পাবো না, তবে আইনের কাছে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তুচ্ছ কারণে প্রকাশ্যে একজন কিশোরকে মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করা মানবতার জন্য কলঙ্কজনক। আমরা কি মগের মুলুকে বাস করছি? মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে, আর নিষ্পাপ প্রাণগুলো এভাবে ঝরে যাচ্ছে! তারা মাহিন হত্যার দ্রুত তদন্ত, আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। শনিবার (২৩ আগস্ট) আসর নামাজের পর কাঞ্চননগর রুস্তুমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে শত শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেন।
এ বিষয়ে ফটিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুর আহমেদ বলেন নিহতের মা খদিজা বেগম বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, দ্রুত অন্য আসামিদেরও গ্রেফতার করা হবে।