বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, আওয়ামী আমলে নানা অনিয়ম ও তদবিরের মাধ্যমে বেশ কিছু নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সনদ, বয়স ও অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত অসঙ্গতির অভিযোগেও বহুবার গণমাধ্যমে প্রতিবেদন
প্রকাশিত হয়েছে।
নিয়োগের সময় জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি এমদাদুল হকের ভাতিজা মাহামুদুর রহমান উজ্জ্বল চৌধুরী ছিলেন কর্মচারী নেতা। তিনি হোসাইন চৌধুরীর বোন জামাইও বটে। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ জনপ্রশাসন শাখায় দায়িত্বে আছেন এবং পদোন্নতি যাচাই কমিটির সদস্য সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারের পরিবর্তনের পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ শাখায় তাঁর পদায়ন নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেক শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি দূর্জয় শুভ বলেন,
“অবৈধ নিয়োগগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। কারও সঙ্গে অন্যায় না হয়, সেটিও দেখতে হবে। জুলাইয়ের আদর্শের সঙ্গে বেঈমানি করা যাবে না।”
জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়ক বেলাল হোসেন আরিয়ান বলেন,
“স্বৈরাচার পতনের পর নতুন আশা জাগলেও গোবিপ্রবির কিছু দায়িত্বশীলের আচরণে এখনো পুরনো স্বৈরাচারী মানসিকতার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।”
প্রাপ্ত নথি অনুযায়ী, হোসাইন চৌধুরীর জন্ম সনদে জন্মতারিখ ১ জুন ১৯৮৮, কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রে তা ১ মার্চ ১৯৮১। ফলে চাকরির মেয়াদে তিনি অনৈতিক সুবিধা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন,
“আমি চাকরির সময় জন্মনিবন্ধন দিয়েছিলাম, জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল আছে।”
তিনি ছয় বছর ধরে চাকরিতে আছেন বলে জানান। সংশোধনের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে বলেন, দেড় বছর আগে আবেদন করেছিলেন, তবে প্রমাণ বা আপডেট দিতে পারেননি। উজ্জ্বল চৌধুরীও আত্মীয়তার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে তিনি মন্তব্য করতে পারছেন না।
জুলাই আন্দোলনের সংগঠক আজিজুর রহমান শান্ত বলেন,
“নতুন প্রশাসনের প্রতি অনেক আশা ছিল, কিন্তু অনিয়মে জড়িত অনেক কর্মকর্তা এখনো গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন—এটা হতাশাজনক।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. এনামুজ্জামান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

                                    
