বুধবার, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫
বুধবার, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫
20 C
Dhaka
Homeজেলার খবরআমাদের আন্দোলন দেশের ১৮ কোটি মানুষের বিজয়ের জন্যই -ডা. শফিকুর

আমাদের আন্দোলন দেশের ১৮ কোটি মানুষের বিজয়ের জন্যই -ডা. শফিকুর

প্রকাশ: ডিসেম্বর ৫, ২০২৫ ৮:২৩

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমাদের আন্দোলন দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলন। আমরা ৮ দলের বিজয় চাই না, দেশের ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় আন্দোলনরত ৮ দলের উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কোরআনের বিজয়ের মাধ্যমেই হবে, সেই বিজয়। চট্টগ্রাম থেকেই ইসলামের বিজয়ের, সেই বাঁশি বাজানো হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ, কুরআনের বাংলাদেশ।

সকাল থেকেই নগরীর ঐতিহাসিক লালদীঘির ময়দানে মিছিলে মিছিলে জড়ো হতে থাকেন ৮ দলের নেতাকর্মী ও নগরবাসী।দুপুর পৌনে ২টা থেকে শুরু হয় সমাবেশের মূল কার্যক্রম। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক।

প্রধান অতিথি ডা. শফিকুর রহমান বলেন, তারা নিজেদের উন্নয়ন করেছিল। রাস্তাঘাট তৈরি করেছিল রড়ের বদলে বাঁশ দিয়ে। বাংলাদেশের টাকা লুট-পাট করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে।৫মে শাপলা চত্বরে অসংখ্য আলেমসমাজকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর কুখ্যাত প্রধানমন্ত্রী বলেছিল রঙ দিয়ে তারা শুয়ে ছিল। তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে।

তিনি বলেন, গাড়ি দিয়ে পালানোর সাহস বিগত ফ্যাসিবাদি সরকার হারিয়ে ফেলেছিল। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিকে এই অপকর্মে লাগানোর চেষ্টা করেছিল।
দেশের সবকিছু তারা ধ্বংস করেছিল। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও দেশ এখনো ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। ফ্যাসিবাদকে নতুন করে রুখে দাঁড়াতে দেয়া হবে না।

৫ আগস্ট বিপ্লবের পরদিন থেকে একটি গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তারের জন্য জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি এখনো অব্যাহত আছে। ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে।

আন্দোলনরত ৮ দলের ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের লড়াই অব্যাহত থাকবে ঘোষণা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঐক্য আমাদেরকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্ট সংঘটিত হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশ গরীব দুঃখী মেহনতি মানুষের রক্তে গড়া। অনেক দল থেকে আসন সমঝোতার অফার দেয়া হয়েছিল। আমরা বাংলাদেশের মানুষের অধিকার ও মালিকানা কায়েম করতে চাই। ঘরে ঘরে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। পুঁজিবাদি অর্থ ব্যবস্থার কবর রচনা করে আল্লাহর আইনের ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি বলেন, এবার ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলার মাটিতে জেগে উঠেছে। সকল চক্রান্ত, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্যদিয়ে জনতার বিজয় হবে।

বাংলার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি, হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরতে হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সরকারকে তার দায় নিতে হবে। তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, ব্রিটিশরা এই দেশ থেকে চলে গেলেও ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধেও বৈষম্য দূর হয়নি। সেই থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যারা শাসক ছিল তারা বৈষম্য থেকে মুক্তি দিতে পারেনি। ৫ আগস্টের আন্দোলনে হাজার হাজার মানুষ জীবন দিলেও মানুষ এখনো মুক্তি পায়নি। আগামীতে আবারও চাঁদাবাজ, জালেমদের বিরুদ্ধে আন্দোলন হবে।একমাত্র ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলেই, বৈষম্য থাকবে না। কেউ দশ তলায় কেউ নিচতলায় থাকবে, সেটা আর হবে না।

তিনি বলেন, আমরা ইসলামের পক্ষে, বাংলাদেশের পক্ষে থাকতে চাই। ইসলামকে বিজয় করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকলে ইসলাম আগামীতে ক্ষমতায় যাবে ইনশাআল্লাহ। যথাসময়ে নির্বাচন দিতে হবে। কোনো ষড়যন্ত্র দেশের মানুষ মানবে না। হুমকি ধমকি চলবে না। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সরকারে গঠন করতে হবে।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এটি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, আসুন আমরা ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে চট্টগ্রামকে ইসলামের ঘাঁটি বানাই। চট্টগ্রামের মাটি ইসলামের ঘাঁটি। ৮ দলের এই শক্তি ক্ষমতায় গেলে আপনারই দেশ শাসন করবেন। কারও দাদার শক্তিতে এ দেশ আর চলবে না।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদশ এমন পর্যায়ে দাঁড়াবে, বিদেশিরা এখানে পড়ালেখা করতে আসবে। আসুন আমরা সবাই মিলে সেই দেশ গড়ি।

৮ দলের প্রধানদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান এডভোকেট এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন।

সমাবেশে ৮ দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমির আলহাজ মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্সি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আলাউল্লাহ আমিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব আল্লামা মুফতি মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আলী উসমান, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, খেলাফত মজসিলের যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসানুল্লাহ ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি রেজাউল করিম আববার, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরী আমির মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চট্টগ্রাম মহানগরী সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মোতালেব, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু মুজাফফর মোহাম্মদ আনাছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা এমদাদ উল্লাহ সোহাইল, খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি অধ্যাপক খুরশিদ আলম ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা জিয়াউল হোসাইন।
আরও বক্তব্য রাখেন- জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমির মুহাম্মদ আলাউদ্দীন সিকদার, জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আমির আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামী কক্সবাজার জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহম্মদ আনোয়ারী, জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, মোহাম্মদ উল্লাহ ও মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট জোবায়ের মাহমুদ প্রমুখ।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জামায়াতের অঞ্চল টিম সদস্য মুহাম্মদ জাফর সাদেক, অধ্যক্ষ আমিরুজ্জামান, মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক মুহাম্মদ নুরুল আমিন চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামী বান্দরবান জেলা আমির মাওলানা আবদুস সালাম আজাদ, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা আমির অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল মোমেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা আমির অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল আলিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি আল মুহাম্মদ ইকবাল, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর সেক্রেটারি মাওলানা রিদোয়ানুল ওয়াহেদ, খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর সেক্রেটারি মাওলানা জালাল উদ্দীন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর সেক্রেটারি মাওলানা আনোয়ার হোসেন রব্বানী, জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সেক্রেটারি মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার, দক্ষিণ জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হক, কক্সবাজার জেলা সেক্রেটারি জাহেদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবু সাঈদ নোমান ও মাওলানা মোহাম্মদ ফয়সাল, নগর জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এ কে এম ফজলুল হক, ডা. ছিদ্দিকুর রহমান, এস এম লুৎফর রহমান, শ্রমিক নেতা মুহাম্মদ ইসহাক, হামেদ হাসান ইলাহী, আমির হোসাইন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহসভাপতি নুর উদ্দিন, জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ ফারুক, এড. সাইফুর রহমান প্রমুখ।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় খবর