সুপ্রসিদ্ধ দ্বীনি শিক্ষাকেন্দ্র জামিয়া ইসলামিয়া ওবাইদিয়া নানুপুর মাদ্রাসার বার্ষিক ইসলামী মহাসম্মেলনে প্রধান
অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ.ফ.ম খালেদ হোসাইন বলেছেন, আল্লাহ যাকে মর্যাদা দেবেন তাকে কেউ নিচে নামাতে পারবে না; আর আল্লাহ যাকে নিচে ফেলবেন তাকে হাজার মানুষ চাইলেও উপরে তুলতে পারবে না।
দুইদিনব্যাপী ৪ ও ৫ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ফটিকছড়ির জামিয়া ইসলামিয়া ওবাইদিয়া নানুপুর মাদ্রাসার পরিচালক আল্লামা ছালাহ্ উদ্দীন নানুপুরীর সভাপতিত্ত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলের প্রথম দিনে তিনি আরও বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকে তৈরি করা কাঠামো পরিবর্তন করতে পারলে শরীয়ত সম্মতভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার অনেক ক্ষেত্রেই পরিবর্তন আনা সম্ভব। তবে কাঠামো পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত প্রচলিত ব্যবস্থার মধ্যেই দায়িত্ব পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, ধর্মীয় উপদেষ্টা হওয়ায় আমাকে মন্দিরে যেতে হয় কিন্তু আমি বাইতুল মোকাররমে যাই ইবাদতের জন্য, আর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যাই রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের জন্য।
আগামী ফেব্রুয়ারির পর আমি উপদেষ্টা থাকব না, তখন মন্দিরে যাওয়ার প্রয়োজনও থাকবে না। তবে যতদিন আমি সরকারের দায়িত্বে আছি, ততদিন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, সব ধর্মের মানুষের মন্ত্রী আমি। সবাইকে সরকারি বরাদ্দ দিতে না পারলে এই চেয়ারে থাকার অধিকার আমার নেই।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, “তিনশ’ আসনের পার্লামেন্টে যদি দুইশ’ আলেমকে পাঠানো যায়, তাহলে আইন পরিবর্তন করা সম্ভব। কাল থেকেই শরীয়ত বাস্তবায়ন শুরু করা যাবে। একজন-দু’জন উপদেষ্টা দিয়ে রাষ্ট্রের কাঠামো বদলানো সম্ভব নয়, এজন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার।
দেশের ইতিহাসে নিজেকে পূর্ণমন্ত্রী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৫৪ বছরের ইতিহাসে আমি পূর্ণ মন্ত্রী। আগে যারা ছিলেন তারা প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী। চার আনা বা আট আনা মন্ত্রী; আর আমি ষোল আনা মন্ত্রী। ১৫–১৬ মাসের দায়িত্বে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। অসত্যের কাছে কখনো মাথা নত করিনি, হক কথা বলতেও পিছপা হইনি।
পরে তিনি মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে মুনাজাত পরিচালনা করেন।
মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহেই নির্বাচন কমিশন তারিখ ঘোষণা করবে। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আমরা একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে আশাবাদী। এতেই জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দল এখন পর্যন্ত ভিন্নমত পোষণ করেনি। যত দ্রুত নির্বাচন হবে ততই জাতির কল্যাণ হবে।
হাইকোর্টে নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা রিট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মামলা করা যেকোনো নাগরিকের অধিকার। আদালত শুনানি করবে। আদালতের আদেশ এলে আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ তা আইনি প্রক্রিয়ায় দেখবে। আমরা আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
এ সময় ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাঈদ মোহাম্মদ ইব্রাহীম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নজরুল ইসলাম, আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিন জমির উদ্দীন, ফটিকছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর আহমদসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।


