আজ দুপুরে বুয়েট ক্যাম্পাসে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
বুয়েটে সব রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তির’ বৈধতা নিয়ে আজ হাইকোর্টে একটি রিট হয়।
রিটটি করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন। তিনি বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম হারুনুর রশীদ খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
হাইকোর্টের আদেশের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালত রুল দিয়ে জরুরি বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করে দিয়েছেন। এর ফলে বুয়েটে এখন থেকে ছাত্ররাজনীতি করায় আর কোনো বাধা থাকল না।’
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে শেরেবাংলা হলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় করা মামলায় আদালত ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। আবরার ফাহাদ হত্যার পর বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
হাইকোর্টের আজকের আদেশের বিষয়ে জানতে চাইলে বুয়েট উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালত যা বলবেন, আমরা সেটা মানতে বাধ্য। আদালত সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। আদালত আমাদের যে নির্দেশনা দেবেন, আমরা সেই নির্দেশনা মেনে চলব।’
আদালতের আদেশের পর বুয়েটের পদক্ষেপ কী হবে, জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। আদালতকে তো আমরা ভায়োলেট (আদেশ লঙ্ঘন) করতে পারব না। আমাদের আদালতের নিয়মে চলতে হবে। আইন ও নিয়ম অনুযায়ী আমাদের এগোতে হবে।’
উপাচার্য বলেন, আদালতের আদেশ না দেখে তিনি কিছু বলতে পারছেন না। আদেশ দেখার পর বুয়েটের আইন উপদেষ্টার পরামর্শ অনুযায়ী তাঁরা এগিয়ে যাবেন।
বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চালু হলে আবার আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটবে কি না, এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘আমি ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারব না। কী হবে না হবে, সেটা কি আমি-আপনি জানি?’
এক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, রাজনীতির পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশাসন—সবাই মিলে একটা রূপান্তর করতে হবে। কীভাবে সেটা করা যায়, তা আলোচনার মাধ্যমে বের করতে হবে। বর্তমানে ইউকসুর (ছাত্র সংসদ) কার্যক্রম বন্ধ আছে। সব পক্ষের মতামত নিয়েই একটা কিছু করতে পারবেন তাঁরা। তিনি একা কিছু করলে, তা বাস্তবায়ন করা যাবে না। সেটা সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হতে হবে, অর্ডিন্যান্সে যুক্ত হতে হবে। রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের অনুমোদন নিতে হবে। তা না হলে এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্সে ঢুকবে না। তাঁদের সীমাবদ্ধতা আছে। তাঁরা আদালতের আদেশ পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় তার নিয়মে চলে। কিন্তু আদালতের আদেশ শিরোধার্য।